রিয়া দাস, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ জেলবন্দি প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে উত্তপ্ত পাকিস্তানের ইসলামাবাদ। নেতার কারামুক্তির দাবিতে ইমরান সমর্থকদের আন্দোলন। পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে ৬ জন সরকারি নিরাপত্তাকর্মীর। মঙ্গলবার রাত থেকে আরও ভয়ঙ্কর চেহারা নিয়েছে সেই সংঘাত। পুলিশের গুলিতে একাধিক বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছে বলেও খবর। ইমরানের স্ত্রী বুশরা বিবির নেতৃত্বে আন্দোলনে সংঘর্ষে ৫ জন সেনার মৃত্যু হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করেছে প্রশাসন। পরিস্থিতি পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনের তরফে ঘটনাস্থলে গুলি চালানোরও নির্দেশ জারি করা হয়েছে বলে খবর। এখনও পর্যন্ত ১১৯ জন আহত হয়েছে বলে খবর। অভিযোগ পুলিশের ২২টি গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় ইমরান-সমর্থকরা। তেহরিক-ই-পাকিস্তানের ৪ হাজার কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে খবর।
ঘটনার সূত্রপাত
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ক্যাপ্টেন ইমরান খানের মুক্তির দাবি বেশ কিছুদিন ধরেই উঠছিল পাকিস্তানে। অন্যদিকে জেল থাকলেও কর্মীদের রাস্তায় নেমে বিপ্লব করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। গত কয়েকদিন ধরে পাকিস্তানের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ইমরান সমর্থকরা ইসলামাবাদমুখী হতে শুরু করে। সোমবার রাত থেকেই ইসলামাবাদের বিভিন্ন জায়গায় জামায়েত করেছিল ইমরান-সমর্থকেরা। মঙ্গলবার সকাল থেকেই দেশাত্মবোধক গান বাজানো হয়। পুলিশের বসানো ব্যারিকেডও নাকি ভেঙে দেন তারা। বিক্ষোভকারীদের আটকাতে যে শিপিং কন্টেনার বাসানো হয়েছিল কেউ কেউ তার মাথায় চড়ে বসেন। স্লোগান ওঠে বিপ্লবের নামে। ইমরানের অভিযোগ, তাঁর দলের নেতা-কর্মীদের অন্যায় ভাবে গ্রেফতার করা হচ্ছে। ইমরান খান দাবি করেন, নির্বাচনে গায়ের জোরে জনাদেশ বদলে ক্ষমতা দখল করেছে শাহবাজ শরিফের পিএমএল ও পিপিপি-র জোট সরকার। সংবিধানের ২৬ তম সংশোধনী পাশ নিয়েও আপত্তি জানান তিনি। ২৪ নভেম্বর দেশ জুড়ে ইমরান খানের দল ও সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে পথে শেষ আহ্বান জানায়। এরপরই পাক-সরকার রাজধানী ইসলামাবাদে পরবর্তী দুমাসের জন্য জারি করে ১৪৪ ধারা। বুশরা বিবির নেতৃত্বে রবিবার থেকে শুরু হয়েছে ইমরান সমর্থকদের আন্দোলন। গোটা দেশ থেকে ইসলামাবাদের উদ্দেশে রওনা দেন দলীয় সমর্থকরা। তবে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে মাঝপথেই ফিরে যান ইমরান-পত্নী।
২০২২ সালে অনাস্থা ভোটে হেরে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে ইমরান খানকে একাধিক মামলায় অভিযুক্ত করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ-সহ বেশ কিছু গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে ইমরান খানের দল প্রথম থেকেই এসব অভিযোগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করে আসছে। ২০২৩ সালের মে মাসে ইমরান খানকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর এক বছরের বেশি সময় ধরে কারাগরে রয়েছেন ইমরান। তাঁর বিরুদ্ধে ১৫০টির বেশি ফৌজদারি মামলা হয়েছে। তবে ইমরানের সমর্থকদের দাবি, ইমরানের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের কোনও ভিত্তি নেই।