সঞ্জনা লাহিড়ী, সাংবাদিক- দেশের সবথেকে জনপ্রিয় গণ পরিবহনের মধ্যে অন্যতম হল ভারতীয় রেল। তিনটি নতুন রেল প্রকল্পের জন্য ৭,২৯৭ কোটি টাকা ধার্য করল কেন্দ্রীয় রেল মন্ত্রক। ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদি নিজের এক্স হ্যান্ডেলে নতুন তিনটি রেলের প্রকল্প বিষয়ে পোস্ট করে একথা জানিয়েছেন। এর ফলে উন্নত রেল পরিষেবার পাশাপাশি রেলের গতি আরও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। ক্যাবিনেটের অনুমোদিত তিনটি গুরুত্বপূর্ণ রেল প্রকল্প মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ এবং উত্তরপ্রদেশ, এই তিন রাজ্যকে অনেকাংশের সুবিধা দেবে বলে মনে করা হচ্ছে। মুম্বাই এবং প্রয়াগ রাজের উন্নয়নের বিকাশ ঘটাবে নতুন প্রকল্প বলে এক্স হ্যান্ডলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদি। প্রকল্প গুলি হল, মানমাদের ১৬০ কিমি রেলপথ (চতুর্থ লাইন), ভূষওয়াল- খান্ডওয়ার (তৃতীয় এবং চতুর্থ লাইন) ১৩১ কিমি রেলপথ এবং প্রয়াগরাজ (ইরাদতগঞ্জ)- মানিকপুর ৮৪ কিমি ( তৃতীয় লাইন) রেলপথ।
নতুন এই রেলপথ গুলি পরিকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি মুম্বাই এবং প্রয়াগরাজের মতো ব্যস্ততম এলাকাগুলির যানজট অনেকটাই কমিয়ে দেবে বলে মনে করা হচ্ছে। এই রেলপথগুলি পিছিয়ে পড়া এলাকা গুলিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি স্বনির্ভরতা ও কর্মসংস্থানে অনেকটাই এগিয়ে দেবে, যা আত্মনির্ভর ভারতের দৃষ্টান্ত হিসেবেই ধরা হচ্ছে। এই প্রকল্পগুলি প্রধানমন্ত্রী গতিশক্তি জাতীয় মাস্টার প্ল্যানের অংশবিশেষ। নব পরিকল্পিত রেলপথগুলির মাধ্যমে সেখানকার মানুষের পরিবহনে শুধু সুবিধা হবে এমন না, এলাকার পন্য পরিবহন ও অন্যান্য পরিষেবায় অনেকটা সুবিধা হবে।
তিনটি রাজ্যের সাতটি জেলা মিলিয়ে ৬৩৯ কিলোমিটার রেলপথ যুক্ত হবে ভারতীয় রেলে। প্রস্তাবিত এই রেলপথ গুলির মাধ্যমে খান্ডওয়া ও চিত্রকূটের মতো জেলাগুলি যেমন সুবিধা পাবে, তেমনই ১৩১৯ টি গ্রাম এবং ৩৮ লক্ষ মানুষের সুবিধা হবে। পাশাপাশি প্রস্তাবিত রুটগুলি মুম্বাই-প্রয়াগরাজ- বারানসীর মধ্যে সংযোগ বাড়াবে। বাড়তি ট্রেন চালানো যাবে এই রুটে। বিশেষ করে তীর্থযাত্রীদের সুবিধা হবে যাঁরা নাসিকের ত্রম্বকেশ্বর, খান্ডোয়ার ওমকারেশ্বর এবং বারাণসীর কাশী-বিশ্বনাথের মতো জ্যোতির্লিঙ্গগুলি দর্শন করতে চাইবেন। পাশাপাশি প্রয়াগরাজ, চিত্রকূট, গয়া এবং শিরডিতেও যাওয়া যাবে সহজে। শুধু তাই নয়, ইউনেসকোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের অন্তর্ভুক্ত খাজুরাহো, অজন্তা- ইলোরা গুহা, দেবগিরি দুর্গ, আসিরগড় দুর্গ, রেওয়া দুর্গসহ বিভিন্ন পর্যটন ক্ষেত্র যাওয়া যাবে সহজে। বার্ষিক ৫১ মিলিয়ন টন পণ্য বাড়তি পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হবে। দূষণমুক্ত পরিষেবার মধ্যে অন্যতম সেরা রেল পরিবহন। নব প্রস্তাবিত রেল পথের মাধ্যমে কম দূষণে, জলবায়ু অপরিবর্তিত রেখে নূন্যতম খরচে সাধারণ মানুষকে পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হবে বলে মনে করছে রেল মন্ত্রক।