রিয়া দাস, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ উত্তাল বাংলাদেশ। হিংসার আগুন যেন নিভছেই না বাংলাদেশে। বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারি ঘিরে উত্তাল বাংলাদেশ। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রংপুরের বিভিন্ন জায়গায় দফায় দফায় অবরোধ বিক্ষোভ। চট্টগ্রামে সংখ্যালঘুদের উপরে হামলার অভিযোগ উঠেছে। নানা জায়গায় অগ্নিসংযোগের ছবিও সামনে এসেছে। ইসকনের তরফে ভারত সরকারকে পদক্ষেপ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
২৫ নভেম্বর সোমবার বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করা হয় সংখ্যালঘু আন্দোলনের অন্যতম মুখ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে। যার তীব্র প্রতিবাদ জানায় বিভিন্ন হিন্দু সংগঠনগুলি। তাঁর মুক্তির দাবিতে বাংলাদেশে বিক্ষোভ-আন্দোলন শুরু হয়। মঙ্গলবার চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে আদালত থেকে হেফাজতে নিয়ে যাওয়ার সময়ও তুমুল অশান্তিও হয়। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে পুলিশের। ওই সংঘর্ষের মাঝেই এক আইনজীবীর মৃত্যুও হয়। এই ঘটনা যেন আগুনে ঘি দেওয়ার মতো। তাঁর মৃত্যুতে নড়েচড়ে বসেছে বাংলাদেশ প্রশাসনও। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস ইতিমধ্যেই গোটা ঘটনার নিন্দা করেছেন। এই ঘটনায় উচ্চপর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে চট্টগ্রাম-সহ সমস্ত বন্দর শহরেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা যাতে আরও ভালো হয় সেই নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
চিন্ময় প্রভুর মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ
আইনজীবী সাইফুল ইসলামের হত্যার প্রতিবাদে আন্দোলন শুরু হয়েছে। চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের হয়ে আদালতে সওয়াল করার জন্য অনেক আইনজীবীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ। অন্যদিকে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবিতেও বিক্ষোভ-প্রতিবাদ চলছে। তবে হিন্দু সংখ্যালঘুদের উপরে হামলার ঘটনাই উঠে আসছে। আন্দোলনকারীদের উপরে নির্বিচারে অত্যাচার হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
ভারতের উদ্বেগ, বাংলাদেশের জবাব
নতুন করে হিংসার ঘটনা সৃষ্টি না হলেও আতঙ্কের আবহ অব্যাহত রয়েছে। মঙ্গলবারই ভারত সরকারের তরফে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপরে হওয়া অত্যাচারের ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। পাল্টা বিবৃতি দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। সেই বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, এই বিষয়টি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ভারতের মন্তব্য দুই দেশের বন্ধুত্বের সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক কার্যত তলানিতে ঠেকেছে। নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশের হাই কমিশনের সঙ্গে ভারত সরকারের সম্পর্ক নেই। এর ফলে বাণিজ্যিক সম্পর্কও প্রভাবিত হয়েছে। বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রেও কড়াকড়ি করছে ভারত সরকার।
এখন দেখার সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ঠেকাতে কি ব্যবস্থা নেবে মহম্মদ ইউনুসের সরকার ? যিনি শান্তির নোবেল পেয়েছেন, তার সরকারের আমলেই এত অশান্তি। আর তিনি কেন মুখ বুজে রয়েছেন ? কোথায় সেই ছাত্র নেতারা, যারা আজ ইউনুস সরকারের উপদেষ্টা হয়ে বসে আছেন ? কেন সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর আক্রমণ বন্ধ করতে সক্রিয় ভূমিকা নিতে দেখা যাচ্ছে না তাঁদের ? বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর এই অত্যাচার বন্ধ করতে কি, কড়া পদক্ষেপের পথে হাটবে কি মোদী সরকার সেটাই এখন দেখার।