লড়াই চলছিলই। তবে শেষ রক্ষা হল না। জীবন মৃত্যুর এই দড়ি টানাটানিতে অবশেষে পরাজিত বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব মনোজ মিত্র।
সায়ন্তিকা ব্যানার্জি, সাংবাদিক: প্রয়াত বর্ষীয়ান অভিনেতা ও নাট্যকার মনোজ মিত্র (Manoj Mitra)। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। বার্ধ্যকজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। পুজোর আগে তড়িঘড়ি তাকে ভর্তি করানো হয়েছিল সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। তারপর সুস্থ হয়ে বাড়িও ফিরেছিলেন অভিনেতা। কিন্তু এরপর আর শেষ রক্ষা হল না।
সেপ্টেম্বরে ক্যালকাটা হার্ট ক্লিনিক অ্যান্ড হসপিটাল কর্তৃপক্ষের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছিল কার্ডিওজেনিক শকে রয়েছেন অভিনেতা। এছাড়া শরীরে সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের মাত্রা কমে যায়, কমে যায় রক্তচাপও। সেই সময় তাকে নন ইনভেসিভ ভেন্টিলেশন দেওয়া হয়। মনোজ মিত্রকে দেখার জন্য গঠিত হয় ক্যালকাটা হার্ট ক্লিনিকের ক্রিটিক্যাল কেয়ার টিমের চিকিৎসকদের নিয়ে মেডিক্যাল বোর্ড। বয়স্কতার পাশাপাশি তিনি বেশ কিছুদিন ধরেই হৃদযন্ত্রের কঠিন অসুখে ভুগছিলেন। সেই সঙ্গে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবিটিস মেলাইটাস, ক্রনিক কিডনির অসুখ, সিওপিডি, ডিমেনশিয়ার মতো রোগও ছিল। হার্টের কার্যক্ষমতাও বেশ কম বলে জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। চলতি বছরের শুরুতেই বুকে প্রেসমেকার বসেছিল মনোজ মিত্রের। তারপর অবশ্য সুস্থ হয়ে বাড়িও ফিরেছিলেন তিনি। এই বছরে প্রায় ৩ বার তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে এবার আর বাড়ি ফেরা হল না অভিনেতার।
১৯৩৮ সালের ২২ ডিসেম্বর ব্রিটিশ ভারতের সাতক্ষিরা জেলার ধূলিহর গ্রামে মনোজ মিত্রের জন্ম হয়। ১৯৫৮ সালে স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে দর্শনে অনার্স নিয়ে স্নাতক হন তিনি। এই কলেজেই থিয়েটারে দীক্ষিত হন। সঙ্গী হিসেবে পান বাদল সরকার, রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্তের মতো ব্যক্তিত্বদের। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনে এমএ করেন। ডক্টরেটের জন্য গবেষণা শুরু করেছিলেন। ১৯৫৭ সালে কলকাতায় মঞ্চনাটকে অভিনয় শুরু মনোজ মিত্রর। ১৯৭৯ সালে তিনি চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে নাট্যকলা বিভাগের অধ্যক্ষ হিসেবে যোগ দেওয়ার আগে বিভিন্ন কলেজে দর্শন বিষয়েও শিক্ষকতা করেন।