একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র ছাত্রীদের ট্যাবের টাকা গায়েব নিয়ে অস্বস্তিতে রাজ্য সরকার। কিভাবে টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে চলে গেলো, কে বা কারা জড়িত, তদন্তের আওতায় আনা হচ্ছে সবকিছুই। সোমবার ট্যাব নিয়ে বিশেষ বৈঠকে নেওয়া হয়েছে আরও বেশকিছু সিদ্ধান্ত।
সঞ্জু সুর, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ – ট্যাব দুর্নীতি নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে রাজ্য প্রশাসন। সোমবার মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ-এর পৌরহিত্যে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়। বৈঠকে মুখ্যসচিব ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র সচিব নন্দিনী চক্রবর্তী, রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার, শিক্ষা দফতরের বর্তমান সচিব বিনোদ কুমার ও শিক্ষা দফতর থেকে সরিয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরে পাঠানো মনীশ জৈন। ছিলেন পাঁচ জেলার জেলাশাসক। এছাড়াও বৈঠকে ছিলেন আইএএস সঙ্ঘমিত্রা ঘোষ।
নবান্ন সূত্রে খবর, এদিনের বৈঠকে মূল দুটো বিষয়ের উপর বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে। এক, ট্যাবের টাকা গায়েব হওয়া নিয়ে পুলিশকে যত শীঘ্র সম্ভব তদন্ত শেষ করতে হবে। পুলিশের তদন্তের আওতায় থাকবে কে বা কারা এই টাকা গায়েব চক্রের সঙ্গে যুক্ত, তাদের খুঁজে বের করা। কিভাবে বা কোন পন্থায় টাকা গায়েব করা হয়েছে সেটাও খুঁজে বের করতে হবে। এই চক্রের সঙ্গে শুধুই কি বাইরের লোক জড়িত নাকি এতে সরকারী কর্মিদেরও যোগসাজশ রয়েছে। আরও সক্রিয় ভাবে তদন্ত করতে হবে যাতে একজনও ছাড় না পায়। এছাড়া শিক্ষা দফতরকে বলা হয়েছে যে পন্থায় বা যে সিস্টেমে ছাত্র ছাত্রীদের টাকা পাঠানো হয়, সেটা কিভাবে আরও বেশি নিশ্ছিদ্র (fullproof) করা যায় সেটা দেখতে, যাতে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে। সোমবারের বৈঠকে এটাও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যেসব ছাত্র-ছাত্রীদের টাকা গায়েব হয়ে গিয়েছে বলে প্রমাণিত হয়েছে তাদের অবিলম্বে টাকা দিয়ে দেওয়া হবে। পাশাপাশি গায়েব হয়ে যাওয়া ট্যাবের টাকা কিভাবে ফিরিয়ে আনা যায় সেই বিষয়টিও খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী প্রায় দুই কোটি টাকা গায়েব হয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। তবে নবান্ন একটা বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছে যে ট্যাবের এই টাকা গায়েব হয়ে যাওয়া রাজ্যের সব জেলাতে হয় নি। মূলতঃ পূর্ব মেদিনীপুর, পূর্ব বর্ধমান, হুগলি, মালদহ ও দক্ষিণ দিনাজপুর। এছাড়া মুর্শিদাবাদ জেলা থেকেও বেশকিছু অভিযোগ সামনে এসেছে। বাকি উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগণা সহ কয়েকটি জেলাতে সর্বাধিক দুই বা তিনজনের ক্ষেত্রে অ্যাকাউন্টে টাকা না ঢোকার বিষয়টি সামনে এসেছে। সেগুলোও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।