দীঘার জগন্নাথ ধামের উদ্বোধনের দিন ঠিক হয়ে গেলো। বুধবার সৈকত শহরে নব নির্মিত জগন্নাথদেবের মন্দির পরিদর্শনে এসে একথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সঞ্জু সুর, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ- ২০১৮ সালে দীঘার কনভেনশন সেন্টার উদ্বোধন করতে এসে দীঘা স্টেশনের পাশে একটা বেশ বড় খালি জমি দেখতে পান মুখ্যমন্ত্রী। খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন জমিটি সরকারি। ওই জমিতে কিছু একটা করার কথা ভাবেন তিনি। তখনই তাঁর মাথায় আসে পুরীর জগন্নাথদেবের মন্দিরের মতো এখানেও যদি একটা মন্দির করা যায় তাহলে ভালোই হয়। যেমন ভাবা, তেমন কাজ। ২০১৯ সালের অক্ষয় তৃতীয়ায় শিলান্যাস করা হয়। বাজেট ধরা হয়। শুরু হয় অপেক্ষা।
২০১৯ এর পর কেঁটে গিয়েছে পাঁচ পাঁচটি বছর। এর মধ্যে দুটো বছর অবশ্য নষ্ট হয়েছে কোভিড এর কারণে। ২০২২ থেকে ফের পুরো দমে কাজ শুরু হয়। বুধবার মুখ্যমন্ত্রী জানালেন ২০২৫ এর ৩০ এপ্রিল দীঘার এই জগন্নাথ ধামের শুভ উদ্বোধন করা হবে। তিনি তো থাকবেনই, পাশাপাশি সমাজের বিশিষ্টজনদের ও আমন্ত্রণ জানানো হবে উদ্বোধনের দিন। এদিন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, ডিজি রাজীব কুমার, জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি, ইস্কন কলকাতার ভাইস প্রেসিডেন্ট রাধারমন দাস, নির্মান কারি সংস্থা হিডকোর প্রতিনিধিদের নিয়ে মন্দির চত্বরেই একটি বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকে শেষে তিনি জানান, “আগামি তিন মাসের মধ্যে মন্দির নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। তারপর হিডকো মন্দিরটি রাজ্য সরকারের হাতে দিয়ে দেবে। এর মধ্যেই ১৫ থেকে ২০ সদস্যের একটি অছি পরিষদ গঠন করে ফেলা হবে। অছি পরিষদে তিনি থাকবেন না জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি ভলান্টারিলি এটা করলাম। অছি পরিষদে আমি থাকবো না। মুখ্যসচিব, জেলাশাসক, ইস্কনের প্রতিনিধি সহ সনাতন ধর্মের প্রতিনিধিরা থাকবেন। এই মন্দিরের পরিচালনার সব কাজ এই অছি পরিষদই দেখবে।” তিনি আরও বলেন, পুরীর মন্দিরের সঙ্গে কোনো তুলনা করবো না। ওই মন্দির রাজ রাজারা তৈরি করেছেন। আর এটা আমরা সরকারি টাকায় তৈরি করছি। কয়েকটি কাজ বাকি রয়েছে, সেটাও সেরে ফেলা হবে। পুরীর জগন্নাথদেবের মন্দিরের অন্যতম আকর্ষণ নিত্য দিনের ধ্বজারোহন। সেই প্রসঙ্গ উত্থাপন করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমরা পুরীর জগন্নাথ মন্দির কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করবো যাতে এই ধ্বজারোহনের কাজে যারা পারদর্শী এমন দুই একজনকে যদি আমাদের দেন।” মুখ্যমন্ত্রীর মতে এই মন্দিরে পুজো শুরু হয়ে গেলে অবশ্যই এখানকার আর্থ সামাজিক উন্নয়ন ঘটবে। পাশাপাশি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ নিশ্চয়ই তাদের পরিষেবা বাড়াবে। মুখ্যমন্ত্রীর আশা আগামি কয়েক হাজার বছর ধরে এই মন্দির চিরস্থায়ী হয়ে থাকবে। শেষে একটাই কথা বলা যায়, বুধবার মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পর শুরু হয়ে গেলো নতুন কাউন্ট ডাউন, এবার অবশ্য মন্দিরের শুভ উদ্বোধনের।