আবারও শিক্ষানীতির সংশোধন করতে চলেছে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রক। তাই এবার পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে ‘ফেল’ করার নীতি ফিরছে।
নাজিয়া রহমান সাংবাদিক : ফের ফিরছে ‘ফেল’ নীতি। আবারও শিক্ষানীতির সংশোধন করতে চলেছে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রক। তাই এবার পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে ‘ফেল’ করার নীতি ফিরছে। ২০১০ সালের শিক্ষানীতি অনুযায়ী ক্লাসে ফেল পদ্ধতি তুলে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, এবার কেন্দ্র ক্লাসে অনুত্তীর্ণ পড়ুয়াদের পরের ক্লাসে তুলে দেওয়ার পদ্ধতি বাতিল করে দিতে চলেছে। নয়া শিক্ষানীতি অনুযায়ী পঞ্চম এবং অষ্টম শ্রেণির কোনও পরীক্ষার্থী যদি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়, তাহলে তাকে ফের একটি বছর সেই ক্লাসেই রেখে দেওয়া হবে। তবে এরমধ্যে একটি সুযোগও থাকবে। ফেল করা পড়ুয়ারা দুমাসের মধ্যে ফের বার্ষিক পরীক্ষা দিতে পারবে। যদি তারা আবার ফেল করে তাহলে তাদের ক্লাসে তোলা হবে না, এবং সেই বছর ওই ক্লাসেই থেকে যেতে হবে। তবে এখনই সার্বিক ভাবে এই নীতি চালু হচ্ছে না বলেই জানা গেছে।কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়, নবোদয় বিদ্যালয় এবং সৈনিক স্কুলসহ কেন্দ্রীয় সরকারি ৩,০০০-এর বেশি স্কুলে এই ব্যবস্থা চালু হচ্ছে বলে জানিয়েছে শিক্ষামন্ত্রক । বিবৃতিতে বলা হয়েছে, শিক্ষা যেহেতু সংবিধানের রাজ্য তালিকাভুক্ত বিষয়, সেহেতু রাজ্যগুলি এনিয়ে পৃথক সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকারী। তাই ইতিমধ্যেই ১৬টি রাজ্য ও দিল্লিসহ ২টি কেন্দ্রশাসিত এলাকা এই পদ্ধতি মানবে না বলে জানিয়েছে। হরিয়ানা ও পুদুচেরি এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। তবে আরও বাকি রাজ্যগুলি এই নীতি মানবে বলে জানিয়েছে। এনিয়ে শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিংকর অধিকারী র বক্তব্য, “কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়গুলির ক্ষেত্রে পঞ্চম এবং অষ্টম শ্রেণিতে পুনরায় পাশ ফেল প্রথা ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় সরকারের। কিন্তু সার্বিক ভাবে জাতীয় শিক্ষানীতির পরিবর্তন চাই। সারাদেশের ক্ষেত্রে সমস্ত বোর্ডে যেন তা কার্যকরী হয়।এটা প্রমাণ হলো শিক্ষা জগতের সঙ্গে যুক্ত সবাই – শিক্ষক, শিক্ষাবিদ, অভিভাবকদের পক্ষ থেকে প্রথম থেকেই পাশ ফেল প্রথা তুলে দেওয়ার বিরোধিতা করা হয়েছিল তা সঠিক ছিল। তাকে কর্ণপাত না করেই এই নীতি চালু করা হয়েছিল। সেই সিদ্ধান্ত ভুল ছিল এবং এর ফলে বেশ কয়েকটি প্রজন্ম ক্ষতিগ্রস্ত হলো।” তিনি আরও জানান,”এই নীতি শুধু কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের জন্য নয়, সারা দেশের সমস্ত বোর্ডের ক্ষেত্রে ফিরিয়ে আনা হোক। পাশাপাশি আমরা দাবি করছি এমন শিক্ষা পরিকাঠামো এবং সার্বিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে যার মধ্য দিয়ে কোনভাবেই সরকারি শিক্ষা ব্যবস্থায় ছাত্র-ছাত্রীরা ফেল করবে না। আনন্দের মধ্য দিয়ে কাঙ্খিত মান অর্জনের মধ্য দিয়ে তারা উত্তীর্ণ হবে। আমরা এও দাবি করছি রাজ্য সরকার রাজ্যের ক্ষেত্রেও পাশ ফেল প্রথা ফিরিয়ে আনার কথা ঘোষণা করুক এবং শিক্ষা ব্যবস্থায় সার্বিকভাবে উন্নত পরিকাঠামো গড়ে তুলুক। ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে গুণগত মান ফিরে আসুক।” অন্যদিকে অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস-এর সাধারণ সম্পাদক,চন্দন মাইতি এই পদক্ষেপ সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলপন,” বিশ্বব্যাপী ২৫ লক্ষ ছাত্র স্কুল ছাড়ছে, এবং ভারতের বেশিরভাগ রাজ্য এতে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত। মাইতির মতে, ক্লাস ৫ এবং ৮-এর জন্য পরীক্ষা চালু করা ছাত্রদের স্কুলে যাওয়া সীমিত করবে।”