ষষ্ঠী চট্টোপাধ্যায়, সাংবাদিক: রাজ্যের সাইবার থানাগুলির দুরাবস্থা নিয়ে আগেই হাইকোর্টের সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে রাজ্যকে। থানাগুলির পরিকাঠামো এবং অফিসারদের কী ধরনের প্রশিক্ষন দেওয়া হয় তা নিয়ে বিস্তারিত রিপোর্টও তলব করেছে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ। এই পরিস্থিতিতে ফের রাজ্যের সাইবার থানার পরিকাঠামো নিয়ে প্রশ্ন তুলে একটি মামলায় সরসারি লালবাজার সাইবার শাখাকে তদন্তের নির্দেশ দিল হাইকোর্ট।
ফেসবুক থেকে কলকাতা হাইকোর্টের এক মহিলা আইনজীবীর নম্বর জোগাড় করে তা ট্রেনে বাসে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। ঘটনায় হাওড়ার নিশ্চিন্দা থানার দ্বারস্থ হন ওই মহিলা আইনজীবী। অভিযোগ, থানায় গেলে ডিউটি অফিসার তাঁকে ‘এরকম লাখ লাখ কল আসে। আমরা কত জনের পিছনে ছুটব?’ জানিয়ে অভিযোগ নিতে অস্বীকার করেন। থানার আইসি-র কাছে গেলেও একই অভিজ্ঞতা হয় আইনজীবীর। অবিযোগ, খোদ আইসি তাঁকে বলেন, ‘ফ্রেটনিংয়ের কোনও কমপ্লেন রেজিস্ট্রার হয় না।’
মামলার বয়ান অনুযায়ী ঘটনার সূত্রপাত চলতি বছরের মার্চ মাসে। রাজেশ সাধুখাঁ নামে এক ব্যক্তি ওই আইনজীবীর মোবাইল নম্বরে ফোন করে তাঁকে কুপ্রস্তাব দেয়। পাল্টা বিষয়টি পুলিসে জানানোর কথা বললে ওই ব্যক্তি তখন গালাগাল দিয়ে বলে, ‘তোমার মোবাইল নম্বর পর্নোগ্রাফি সাইটে দিয়ে দেব। ট্রেনে, বাসে, ছড়িয়ে দেব তোমার নম্বর।’ অভিযোগ তার কিছুদিন পর থেকেই বিভিন্ন নম্বর থেকে ওই মহিলা আইনজীবীর ফোনে একাধিক ফোন আসতে থাকে ও তাঁকে নোংরা প্রস্তাব দেওয়া হয়। অভিযোগ, ফোনের ওপার থেকে তাঁকে জানানো হয় কেউ ট্রেন থেকে কেউ বা বাস আবার কেউ ফেরিঘাট থেকে তাঁর নম্বর পেয়েছেন। সমস্তটা পুলিসকে জানালেও কোনও সুরাহা না হওয়ায় বাধ্য হয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন আইনজীবী।
সম্প্রতি বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে মামলাটি শুনানিতে রাজ্যের সাইবার থানাগুলির পরিকাঠামো নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। বিচারপতি সরাসরি জানিয়ে দেন, ওই থানার যা পরিকাঠামো তাতে এই ধরনের অপরাধের তদন্ত সম্ভব নয়। আপাতত লালবাজারের সাইবার শাখাকে ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।