এখনও পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের মেয়াদ শেষ হয়নি। এর মধ্যেই ষোড়শ অর্থ কমিশনের সদস্যরা দেশের বিভিন্ন রাজ্য ঘুরে দেখে সেখানকার আর্থিক দাবিদাওয়া সংক্রান্ত বিষয়গুলি বুঝে নিতে চাইছেন। সেই কারণেই বুধবার রাজ্য সফরে এসে কমিশনের সদস্যরা বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। সেই বৈঠকেই কেন্দ্রের বঞ্চনা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
সঞ্জু সুর, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ- দেশে জিএসটি চালু হওয়ার পর থেকে রাজ্যগুলির কাছে কেন্দ্রের থেকে পাওয়া অনুদান (বিভিন্ন প্রকল্প নির্ভর বা অন্যান্য) অনেকটাই তাদের (রাজ্যের) আর্থিক সঙ্কুলানের পথ সুগম করে। রাজ্য গুলোকে আর্থিক বিষয়ে অনেকটাই সেই পাওনার উপর নির্ভর করে থাকতে হয়। এই অনুদান পাওয়ার ক্ষেত্রে আবার অনেক সময় বঞ্চনার অভিযোগ ওঠে। অর্থ কমিশন মূলতঃ কেন্দ্র সরকার কর্তৃক রাজ্যগুলিকে প্রদত্ত অনুদানের ক্ষেত্র বা মাত্রা প্রস্তাব করে থাকে, পাশাপাশি যদি কোনো সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে সেই সমস্যার সমাধানের পথ প্রস্তাব করে। এছাড়া কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে কর বন্টনের বিষয়ে সুপারিশ করে থাকে। ফলে ষোড়শ অর্থ কমিশনের রাজ্য সফর যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। আর সে কথা মাথায় রেখেই একঝাঁক মন্ত্রী নিয়ে বুধবারের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী ও অন্যান্য মন্ত্রীরা ছাড়াও বৈঠকে ছিলেন মুখ্যসচিব, অর্থ সচিব, মুখ্যমন্ত্রীর অর্থ বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টা সহ একঝাঁক আমলা।
এদিন নবান্ন সভাঘরের বৈঠকে ষোড়শ অর্থ কমিশনের চেয়ারম্যান অরবিন্দ পানগড়িয়ায় নেতৃত্বে কমিশনের বাকি সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রায় ঘন্টাখানেক বক্তব্য রাখেন। সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের দাবি দাওয়ার প্রসঙ্গ বলতে গিয়ে বার বার কেন্দ্রের বঞ্চনার বিষয়টিকে সামনে নিয়ে আসেন। দফতর ও প্রকল্প ধরে ধরে তথ্য দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান কিভাবে বাংলাকে বঞ্চনা করা হচ্ছে। কেন্দ্রের সব নির্দেশ মানার পরেও শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণেই রাজ্যের মানুষ কে বঞ্চিত করা হচ্ছে বলে বৈঠকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন এক একটা প্রকল্পের কাজ দেখার জন্য একাধিকবার কেন্দ্রিয় দল রাজ্যে এসেছে, তারপরেও বরাদ্দ ছাড়া হয় নি। এমনকি গত কয়েক বছরে একাধিকবার প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে রাজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কেন্দ্রের সাহায্য মেলেনি বলেও জানান তিনি। একশো দিনের কাজ, আবাস যোজনা প্রভৃতি নিয়ে মন্ত্রীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার পরেও কোনো টাকা দেওয়া হয় নি। উল্টে শুধুমাত্র নামকরণের অজুহাত দিয়ে টাকা আটকে রাখা হয়েছে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী।
প্রসঙ্গত রাজ্যে সফররত এই ষোড়শ অর্থ কমিশনের মেয়াদ শুরু হবে ২০২৬ সাল থেকে। বর্তমানে পঞ্চদশ অর্থ কমিশন কার্যকর রয়েছে।