সারা দেশের মধ্যে রেকর্ড করে প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ মানুষের মাথায় ছাদের ব্যবস্থা করতে চলেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। মঙ্গলবার নবান্নে এক অনুষ্ঠানে ‘বাংলার বাড়ি’ যোজনার প্রথম কিস্তির টাকা দেওয়ার সূচনা করে ঐতিহাসিক ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রথম পর্যায়ে ১২ লক্ষ উপভোক্তাকে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা দেওয়ার পর ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে আরও ১৬ লক্ষ উপভোক্তাকে টাকা দেওয়া হবে ‘বাংলার বাড়ি’ যোজনায়। জানালেন মুখ্যমন্ত্রী।
সঞ্জু সুর, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ- ২০২২ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা’র টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্র। এই নিয়ে একাধিকবার কেন্দ্রের কাছে তদবির করেও সেই টাকা পাওয়া যায় নি। শেষমেষ এই টাকা নিজেরাই দেবে বলে ঘোষণা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই ঘোষণা মতো মঙ্গলবার প্রথম কিস্তির টাকা দেওয়ার সূচনা করা হলো। এই উপলক্ষে নবান্ন সভাঘরের এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে মুখ্যমন্ত্রী জানান, “২৭ হাজারের বেশি টিম ৩৫ লক্ষের বেশি বাড়ি বাড়ি গিয়ে সার্ভে করেছে। স্বচ্ছ ভাবে যে তালিকা তৈরি করা হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে ২৮ লক্ষের বেশি যোগ্য ব্যক্তিকে আমরা আইডেন্টিফাই করতে পেরেছি যাদের বাড়ির প্রয়োজন।” তিনি বলেন, “আজ ১২ লক্ষ উপভোক্তাকে টাকা দেওয়ার সূচনা করা হচ্ছে। দুই কিস্তিতে ৬০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে।” এর জন্য সরকারের প্রায় ১৪ হাজার ৭৭৩ কোটি টাকা খরচ হবে। ১২ লক্ষের টাকা দেওয়ার সূচনা করা হলেও বাকিরা যেন চিন্তা না করেন। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “আরও ১৬ লক্ষ বাকি থাকছে। এই ১৬ লক্ষের মধ্যে ৮ লক্ষ উপভোক্তাকে আগামি বছর মে-জুন মাসের মধ্যে ও বাকি ৮ লক্ষকে ২০২৫ এর ডিসেম্বরের মধ্যে বাড়ি তৈরির টাকা দেওয়া হবে।” ফলে সব মিলিয়ে প্রায় ১ কোটিরও বেশি মানুষের মাথার উপর ছাদের ব্যবস্থা ২০২৫ সালের মধ্যেই করে ফেলতে চাইছে রাজ্য সরকার।
কেন্দ্রের প্রতি বঞ্চনার অভিযোগ করে মুখ্যমন্ত্রী জানান, শুধু আবাস যোজনায় কেন্দ্রের কাছে ২৪ হাজার কোটি টাকা বকেয়া রয়ে গেছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “৬৯ টা টিম পাঠিয়েছে। তাঁরা সার্ভে করেছে। তারপরেও টাকা দেয় নি।” শুধু আবাস যোজনা নয়, অন্যান্য প্রকল্পেও কেন্দ্র টাকা আটকে রেখেছে অভিযোগ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সব মিলিয়ে কেন্দ্রের কাছে প্রায় ১ লক্ষ ৭১ হাজার কোটি টাকা আমরা পাই। কেন্দ্র সব টাকা বন্ধ করে রেখেছে।” কেন্দ্র সরকার তার কথা রাখেনি অভিযোগ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি কিন্তু যে কথা দিই সেই কথা রাখি। রাজ্য সরকার তার নিজের ক্ষমতায় সম্পূর্ণ নিজের টাকায় রাজ্যের প্রতিটি জেলার মোট ১২ লক্ষ উপভোক্তাকে এই টাকা দিচ্ছে। এটা একটা ঐতিহাসিক দিন।”