নাজিয়া রহমান, সাংবাদিক: রাজ্যের সরকারি স্কুলগুলিকে পরিবেশ বান্ধব করে তোলার লক্ষ্যে স্কুল শিক্ষা দফতর। এনিয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করল শিক্ষা দফতর। পরিবেশ বান্ধব ক্যাম্পাস গড়ে তুলতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বিদ্যুৎ দফতর। রাজ্যের এক হাজারটি স্কুলে বসানো হবে সৌর প্যানেল। জেলাভিত্তিক ভাগ করে নেওয়া হয়েছে স্কুলগুলিকে। স্কুল শিক্ষা দফতর ইতিমধ্যেই রাজ্যের সমস্ত ডিআই-দের এ ব্যাপারে নির্দেশ দিয়েছে ৷ যাতে তাঁরা এলাকা ভিত্তিক পরিদর্শন করে একটি তালিকা প্রস্তুত করে। বহু সময় দেখা যায় স্কুলে বিদ্যুৎ-এর ভুতুড়ে বিল। যে বিল দেখে চক্ষু চড়কগাছ হয় স্কুল কর্তৃপক্ষের। কি করে বিল শোধ করা হবে তা নিয়ে চিন্তায় পড়েন তাঁরা। এই ধরনের পরিস্থিতির স্বীকার যেন না হয় স্কুলগুলি পাশাপাশি বিদ্যুতের প্রবল খরচ নিয়ন্ত্রণে আনতে এই পরিকল্পনা স্কুল শিক্ষা দফতরের ৷ এরই সঙ্গে পরিবেশ বান্ধব ক্যাম্পাস গড়ে তুলতে নয়া উদ্যোগ শিক্ষা দফতরের। এই প্রজেক্টের জন্য স্কুলের যে বিষয়গুলি ক্ষতিয়ে দেখতে হবে ডিআইদের সেগুলি হল, সোলার প্যানেল বসানোর জন্য প্রায় হাজার স্কোয়ার ফুটে মত ছাদ প্রয়োজন। যেখানে কোন ছায়া পড়বে না। পাশাপাশি স্কুলের দক্ষিণ দিকে কোন বড় গাছ বা বাড়ি থাকা চলবে না, যাতে ছায়া পড়ে।ছাদ যাতে উপযুক্ত কংক্রিট নির্মাণের হয় সেদিকে নজর দিতে হবে। পাশাপাশি ছাদে যাতায়াত করার মত স্থায়ী সিড়ির প্রয়োজন ৷ এছাড়াও সৌর প্যানেল পরিষ্কার করার জন্য ছাদে জলের সরবরাহ প্রয়োজন। এই সমস্ত বিষয়গুলি ঠিকঠাক থাকলে তবেই স্কুলের ছাদে সোলার প্যানেল বসানো সম্ভব। দক্ষিণ 24 পরগনায় 88টি, পূর্ব মেদিনীপুরে 75টি, পশ্চিম মেদিনীপুরে 72টি, হুগলিতে 68টি কলকাতায় 4৫টি, আলিপুরদুয়ার ১৪টি, বাঁকুড়া ৪৮ টি, বীরভূম ৩৭টি, কোচবিহার ৩১টি, দক্ষিণ দিনাজপুর ১৬টি, দার্জিলিং ৮টি, হুগলি ৬৮ টি, হাওড়া ৫১টি, জলপাইগুড়ি ২০টি, ঝাড়গ্রাম ২০টি, মালদা ৩৩টি, মুর্শিদাবাদ ৫৪টি, নদীয়া ৫৮টি, পশ্চিম বর্ধমান ২৫টি,পশ্চিম মেদিনীপুর ৭২ স্কুলে সৌর প্যানেল বসানো হবে ৷রাজ্যের প্রতিটি জেলাতেই কমবেশি স্কুলে সোলার প্যানেল বসানো হবে। তবে এখনও পর্যন্ত যা জানা গেছে সবচেয়ে বেশি সৌর প্যানেল বসানো হবে উত্তর 24 পরগনায় যার সংখ্যা ১০৩ টি। স্কুলে সোলার প্যানেল বসানো নিয়ে ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে ডিআই অফিস ৷শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিংকর অধিকারীর বক্তব্য, “খুব ভালো উদ্যোগ। বিকল্প শক্তি হিসেবে বিদ্যালয়ে সোলার সিস্টেম চালুর যে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে তা শুধু বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে নয়, পরিবেশগত দিক দিয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। দুঃখের বিষয় অনেক বিদ্যালয় বিশেষ করে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিতে সোলার সিস্টেম করার মতো ছাদ নেই। উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করে শুধু এক হাজার বিদ্যালয় নয়, সমস্ত বিদ্যালয়ে এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হলে বিদ্যালয় এবং পরিবেশ অনেকটা রক্ষা পাবে। এর জন্য বিদ্যালয় গুলির উপর যেন কোন ভাবে আর্থিক বোঝা চাপানো না হয় দেখতে হবে।”নারায়ণ দাস বাঙ্গুর মেমোরিয়াল মাল্টিপারপাস স্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় বড়ুয়া জানান, ” ক্রমশই বেড়েছে স্কুলে বিদ্যুতের খরচ তাই স্কুল শিক্ষা দফতরের এই সিদ্ধান্ত অত্যন্ত সময়োপযোগী। তবে এটা যেন ঠিক মত পরিচালিত হয় সেটাও দেখা দরকার” বলে মত সঞ্জয়বাবুর।পাশাপাশি যত দ্রুত এটি কার্যকরী হবে তত ভালো বলে মত শিক্ষকমহলের একাংশের।