বাংলাদেশ ইস্যু নিয়ে বিধানসভায় কড়া বিবৃতি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নাম না করেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কেউ বিচ্ছিন্ন করতে আসলে প্রতিরোধ করুন। প্রয়োজনে বাঁধ ভেঙে দিতে হবে।
সঞ্জু সুর, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ- বাংলাদেশ ইস্যু নিয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেই জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর এই অবস্থান যে তাঁর দলের ও সরকারেও অবস্থান তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। সোমবার বিধানসভায় বাংলাদেশ নিয়ে বিশেষ বিবৃতি দেন মুখ্যমন্ত্রী। বেশ কড়া ভাষাতেই নিজের কথা জানিয়েছেন তিনি। সম্প্রতি ওপার বাংলার কেউ কেউ (বিএনপি নেতা রহুল রিজভী কবীর সহ) হুমকি দিয়ে বলেছেন চারদিনে কলকাতা দখল করে নেবেন। বাংলা, বিহার, উড়িষ্যা দখল করে নেবেন। এই প্রসঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এটা ভেবে নেওয়ার কোনো কারত নেই যে আপনারা বাংলা, বিহার, উড়িষ্যা দখল করে নেবেন আর আমরা বসে বসে ললিপপ খাবো !” তিনি বলেন, “আসুন আমরা দেখিয়ে দিই, এপার বাংলা দেখিয়ে দিক জাতীয়তাবোধ, মমত্ববোধ, স্নেহ বোধ।” এরপরেই তাঁর উক্তি, “কেউ বিচ্ছিন্ন করতে আসলে প্রতিরোধ গড়ুন। প্রয়োজনে বাঁধ ভেঙে দিতে হবে।”
কোনো উস্কানিতে পা না দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কিছু ফেক ভিডিও ভাইরাল হচ্ছে। একটা নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দল এসব করছে। রাজনীতি করবেন না, ওপারে আমাদের যারা বন্ধু আছে তাদের ক্ষতি হবে।” সেই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী এটাও বলেন, “বিদেশসচিব গিয়েছেন। আমরা তাঁদের বৈঠকের উপর নির্ভরশীল। বিদেশনীতির বিষয়ে দিল্লি যা বলবে আমরা তার পক্ষেই।” তবে কিছুটা সতর্ক করে মুখ্যমন্ত্রী জানান, অনেকেই এদেশে চলে আসতে চাইছে। এটা বিএসএফ দেখছে। সীমান্তের বিষয়, আমাদের দেখার বিষয় নয়। বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপর হওয়া অত্যাচার নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পরিষ্কার জানান, “বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর যে অত্যাচার চলছে তা আমরা ভালোভাবে দেখছি না। আমরা দাঙ্গা চাই না, আমরা শান্তি চাই। ওখানে মাইনরিটিদের উপর অত্যাচার হচ্ছে। দাঙ্গা করে দুষ্কৃতীরা। তবে যারা বলছেন দখল করবো তাঁদের কে বলি আপনারা ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।” বাংলাদেশ ইস্যু নিয়ে বিজেপি গত কয়েকদিন ধরেই তৃণমূল কংগ্রেসের অবস্থান স্পষ্ট করার দাবি জানাচ্ছিলো। সোমবার বিধানসভায় বিশেষ বিবৃতিতে সব প্রশ্নের উত্তর দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগে শান্তি বাহিনী পাঠানো নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের প্রেক্ষিতে ওপার বাংলা থেকে তীব্র সমালোচনা এসেছিলো, এবার এই কড়া বিবৃতির পর ওদেশের বিএনপি বা জামাত নেতারা কি প্রতিক্রিয়া দেয় সেটাই দেখার।