এ যেন সেই তীরে এসে তরী ডোবা। ধরা দিয়েও ধরা দিল না জিনাত। শনিবার তার উদ্দেশ্যে ছোঁড়া হয় ঘুমপাড়ানি গুলি। কিন্তু সেটা গায়ে লাগেনি তার। ফের ফস্কে গেল জিনাত
সায়ন্তিকা ব্যানার্জি, সাংবাদিক: বাগে আনা গেল না বাঘিনীকে। পুরুলিয়া থেকে বাঁকুড়ায় ঢোকার পরেই বনদফতরের প্রায় নাগালে এসে গিয়েছিল জিনাত। তাকে ধরতে চেয়ে ঘুমপাড়ানি গুলিও ছোঁড়া হল। কিন্তু তাতেও বাগে আনা গেল না বাঘিনিকে। বন দফতর সূত্রে খবর, ঘুমপাড়ানি গুলি ছোঁড়ার পরেই পালিয়ে গিয়েছিল সে। তবে এখনও জঙ্গলের মধ্যেই রয়েছে সে। তাই চারদিকে আগুন জ্বালিয়ে বাঘিনিকে খাঁচাবন্দি করার চেষ্টা চলছে।
শনিবার বাঁকুড়ার গোঁসাইডিহি গ্রামের অনেকটাই কাছে এসে যায় জিনাত। তার অবস্থান জানতে চেয়ে ওড়ানো হয় ড্রোনও। জনবসতির কাছাকাছি এসে গেছে সে, এই খবর চাউর হতেই গ্রাম জুড়ে আতঙ্কের ছাপ ছড়িয়ে পড়ে তবে বাঘকে দেখতে ইতিমধ্যেই ভিড় জমিয়েছেন স্থানীয় মানুষ।
প্রায় ১৯২ ঘন্টা ধরে বাঘে-মানুষে যুদ্ধ চলছে তারপরেও বাগে আনা যায়নি তাকে। শনিবার দুপুরের দিকে বনকর্মীরা দেখেন জিনাত হেঁটে হেঁটে জঙ্গলে ঘেরা রাস্তা পারাপার করছে, দেরি না করে সঙ্গে সঙ্গে তারাই তাকে লেন্সবন্দি করেন। রাজ্যের মুখ্য বনপাল বিদ্যুৎ সরকার জানান, যে জায়গায় বর্তমানে জিনার রয়েছে সেখানে খাঁচা পাতা সম্ভব নয় বলে ওই এলাকাটিকে দুটি স্তরে জাল দিয়ে ঘেরা হয়েছে।
গত ২৪ নভেম্বর সিমলিপাল টাইগার রিজার্ভের জঙ্গলে ছাড়া হয়েছিল জ়িনাতকে। কিন্তু সেখানে যেন জিনাতের মন বসছিল না কিছুতেই। তারপর মুক্ত জীবনের খোঁজে গত মঙ্গলবার ঝাড়খণ্ডের চাকুলিয়ার জঙ্গলে পৌঁছয় সে। এরপর সে যায় ঝাড়খণ্ড থেকে পুরুলিয়া হয়ে সোজা বাঁকুড়ায়। পথে একাধিকবার তাকে বিভিন্ন টোপ দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন বন দফতরের কর্মীরা। কিন্তু কোনও কিছুই জ়িনাতকে খাঁচা বন্দি করতে পারেনি। বরং সেই সবকিছুকেই বুড়ো আঙুল দেখিয়ে দেয় সে। শনিবারও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। এবার দেখার কবে এই যুদ্ধ শেষ হয়!