মাম্পি রায়, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ মাত্র ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় হুডখোলা জিপে করে টানেল পরিদর্শন সত্তোরর্ধ্ব মোদীর ব্ল্যাক পাফড জ্যাকেট- হুডি এবং কালো চশমায় দেখা গেল নরেন্দ্র মোদীকে।
সোনমার্গের এই টানেলকে জেড মোড টানেলও বলা হয়। কারণ এটি জেড আকৃতির। এই টানেল ৬.৪ কিলোমিটার দীর্ঘ। সুড়ঙ্গটি সাড়ে ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ। যা কাশ্মীরের গগনগিরকে সোনমার্গের সঙ্গে যুক্ত করে। প্রত্যেকবার শীতের মরসুমে তুষারপাতের জেরে রাস্তা আটকে গিয়ে খারাপ পরিস্থিতি হয় সোনমার্গে। কিন্তু এই টানেল উদ্বোধনের ফলে ১০-১৫ মিনিটে গগনগির থেকে সোনমার্গে সহজেই পৌঁছনো যাবে। আগে এই দূরত্ব অতিক্রম করতে সময় লেগে যেত অন্তত ৪৫মিনিট।
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক জি মোড় টানেলের বিশেষত্ব-
শ্রীনগর-লেহ জাতীয় সড়কে ৬.৫ কিলোমিটার দীর্ঘ জি-মোর টানেল তৈরি করা হয়েছে। মধ্য কাশ্মীরের গান্ধেরবাল জেলার গগনগির এবং সোনমার্গকে যুক্ত করে দুই লেনের দ্বিমুখী রাস্তার টানেল। যা তৈরি করতে খরচ হয়েছে ২,৭০০ কোটিরও বেশি। সমুদ্রপৃষ্ঠের ৮,৬৫০ ফুট উপরে সেই টানেল অবস্থিত। জোজিলা টানেল প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল জি-মোর টানেল। জোজিলা টানেলের মাধ্যমে শ্রীনগর এবং লাদাখের মধ্যে নিরবিচ্ছিন্ন যোগাযোগ গড়ে উঠবে। এর ফলে শীতকালে বরফ তুষারপাতের সময়ও রাস্তা বন্ধ হবে না। সহজেই পৌঁছানো যাবে কার্গিল, লেহর মতো সীমান্তবর্তী স্থানগুলিতে। ২০২৮ সালের মধ্যেই জোজিলা টানেলের কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। তারপর কাশ্মীরের সোনমার্গ থেকে লাদাখের দ্রাসে অনায়াসে পৌঁছানো যাবে। সন্ত্রাসবাদীরা প্রথম থেকেই এই টানেলের বিপক্ষে। গতবছর একটি হামলা চালিয়ে ৭নাগরিককে হত্যা করে সন্ত্রাসবাদীরা। এই টানেলের কাজ যাতে সম্পূর্ণ না হয়, সেই চেষ্টাও চালিয়েছে তারা। কিন্তু সেই চেষ্টাকে গুরুত্ব না দিয়ে অবশেষে সম্পূর্ণ হল এবং উদ্বোধন হয়ে গেল জম্মু-কাশ্মীরের সোনমার্গ টানেল।
এদিকে সোনমার্গে জেড-মোড় সুড়ঙ্গের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান থেকে প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেন কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা। নরেন্দ্র মোদী নিজের প্রতিশ্রুতি রেখেছেন, তা স্বীকার করে নেন ইন্ডিয়া জোটের শরিক। ওমর বলেন, ‘এর আগে আপনি জম্মুতে রেল ডিভিশনের উদ্বোধন করেন। এবার সোনমার্গের সুড়ঙ্গ উদ্বোধন করতেও চলে এলেন সুদূর রাজধানী থেকে। চিন্তা করলেন না দূরত্বের কথা। আপনার এই উদ্যোগ নয়াদিল্লির এবং কাশ্মীরের দূরত্ব কমিয়ে দিল।’
জম্মু-কাশ্মীরকে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা দেওয়ার কথাও প্রধানমন্ত্রীকে মনে করিয়ে দেন ওমর আবদুল্লা। তিনি বলেন ‘আমার মনে হয়, আপনি কথা রাখবেন এবং কাশ্মীরকে পূর্ণ রাজ্যে মর্যাদা ফিরিয়ে দেবেন।’ নির্বাচনে জয়লাভের পর থেকে ওমর আবদুল্লার রাজনৈতিক সমীকরণ বদলেছে। কেন্দ্রের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখছেন তিনি। যা কাশ্মীরের সঙ্গে নয়াদিল্লির এই সুসম্পর্ক কাশ্মীরের অগ্রগতির কাজে ভালো ফল দেবে বলে আশাবাদী রাজনৈতিক মহলের একাংশ।