মানুষ চাইলে কি না পারে। অসম্ভবকে সম্ভব করাই মানুষের কাজ। শুধুমাত্র দৃঢ় সংকল্পে কারও সাহায্য ছাড়াই নিজের পায়ের মাটি শক্ত করে ফেলতে পারে সে । এমনই এক লড়াকু মানুষের কাহিনি তুলে ধরা হয়েছে এই প্রতিবেদনে।
নাজিয়া রহমান, সাংবাদিক: বিকি শর্মা। নিঃস্ব এই মানুষটিকে আজ স্বাবলম্বী করেছে তাঁর হাতের জাদু। বছর ২৫ আগে বিকি কাজ করতেন এক বেসরকারি সংস্থায়। কন্যা এবং স্ত্রীকে নিয়ে সুখেই কাটছিল বিকির দিন। কিন্তু হঠাৎ একদিন বিকির জীবনে নেমে আসল বিপর্যয়। এক বাইক অ্যাক্সিডেন্টে তিনি শয্যাশায়ী হয়ে গেলে তার কাজ চলে যায়। হাতে কোনও কাজ না থাকায় সংসার কিভাবে চলবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তাই জীবন কাটত তাঁর। প্রায় সাড়ে চার বছর তিনি শয্যাশায়ী ছিলেন। তবে তিনি ভেঙে পড়েননি। কোনও মানুষ তাঁকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেননি। কোনও কাজ দিয়ে তাঁর অন্নের সংস্থান করে দেয়নি। পাশে কোনও শুভাকাঙ্ক্ষীকে না পেয়েও হার মানেননি বিকি। তিনি নিজেই নিজের শক্তি হয়ে দাঁড়িয়েছেন। এখন একটা তার তাঁর জীবন পাল্টে দিয়েছে। তাতেই ঘুরছে তার জীবন চাকা।একটা তার দিয়ে নিমেষে তিনি বানিয়ে ফেলছেন সাইকেল, গাড়ি বা টানা রিক্সা।আবার এই তার দিয়ে তিনি কয়েক মিনিটে তৈরি করে ফেলছেন ওম বা আল্লাহ লেখা।
কিংবা জাতীর জনকের প্রতিবিম্বও একটি তার দিয়ে আনাসে তৈরি করে ফেলছেন। তার এই কাজে সবসময় সাহায্য করছেন তার অর্ধাঙ্গিনী কাজল শর্মা।তবে এই হস্তশিল্প তিনি কারো কাছে শেখেননি। ইউ টিউব চ্যানেল থেকে দেখে দেখে তিনি শিখেছেন এই শিল্প। যে শিল্পকলা দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন মানুষ। সরকার আয়োজিত বিভিন্ন মেলায় তিনি তাঁর পসরা সাজিয়ে বসেন। গত ২৫ বছর ধরে তিনি একটু একটু করে নিজের সঙ্গে লড়াই করে নিজেকে নিজের স্বাবলম্বী করেছেন।এভাবেও যে নিজেকে সাবলম্বী করা যায় তা দেখিয়ে দিয়েছেন বিকি। কেউ তাকে চাকরি দেয়নি অন্নের সংস্থান তিনি নিজেই করেছেন। আর এভাবে তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন মানুষের ভরসা সে নিজেই। তাঁর এই লড়াই বহু মানুষের কাছে অনুপ্রেরণা তা বলাই বাহুল্য।