সঞ্জনা লাহিড়ী, সাংবাদিক- ১৯ শতকের মধ্যবর্তী সময়ে অবিভক্ত বাংলায় শুরু হয় ব্রিটিশ রেল চলাচল। শিয়ালদহ স্টেশনের নামকরণ করা হয়েছিল ফ্রেডরিক উইলিয়াম স্টিভেনসের নামে যিনি ছিলেন তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের গভর্নর জেনারেল। লর্ড শিয়ালদহ উপাধিতে ভূষিত হয়েছিলেন তিনি। ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ে নেটওয়ারর্কের অংশ হিসাবে শুরু হয় শিয়ালদহ স্টেশন। দেড়শো বছরেরও বেশি সময় ধরে শিয়ালদহ স্টেশন যাত্রী পরিষেবা দিয়ে চলেছে। বেড়েছে প্লাটফর্ম, যাত্রী সংখ্যা যেমন বেড়েছে তেমনই ট্রেনের সংখ্যা বেড়েছে লাফিয়ে লাফিয়ে। আজকের শিয়ালদহ স্টেশন উন্নত যাত্রী পরিষেবায় রীতিমতো তাক লাগিয়েছে। আধুনিকীকরণ ও উন্নত প্রযুক্তিতে দেশের একাধিক স্টেশনকে পিছনে ফেলেছে পূর্ব রেলের শিয়ালদহ স্টেশন। শিয়ালদহ স্টেশন বর্তমানে ভারতীয় রেলে শুধুমাত্র ইতিহাস সৃষ্টি করেনি, এক আলোকবর্তিকা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিদিন এখানে প্রায় ১২ লক্ষ মানুষ আসে বলে দাবি স্টেশন কর্তৃপক্ষের। শহর ও শহরতলির মানুষের কাছে পরিবহনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম আজকের শিয়ালদহ স্টেশন। কনফাডেরেশন অফ ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রির ইন্ডিয়ান গ্রীণ বিল্ডিং কাউন্সিল শিয়ালদহ স্টেশনের ঝুলিতে তুলে দিয়েছে গোল্ড সার্টিফিকেট। বিভিন্ন মাপকাঠির প্রেক্ষিতে নির্ভর করে গ্রীণ স্টেশন হওয়ার তকমা। পাশাপাশি সেই সব মাপকাঠির পুঙ্খানুপুঙ্খ বিচার প্রক্রিয়ায় দেওয়া হয় সিলভার, গোল্ড এবং প্ল্যাটিনাম সার্টিফিকেট। পূর্ব রেলের শিয়ালদহ স্টেশন ইতিমধ্যেই গ্রীণ স্টেশনের ধারণা নিয়ে গোল্ড সার্টিফিকেট অর্জন করেছে। স্টেশনের নকশা, পরিকাঠামো এবং কার্যপ্রণালীর বিভিন্ন দিক থাকে এই বিচার প্রক্রিয়ায়। যাত্রীদের বিশ্রামস্থান, প্রবেশ- প্রস্থান পথ, টিকিট কাউন্টার, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, জল সংরক্ষণ, স্টেশনের অভ্যন্তরীণ বায়ুর গুণমান, শক্তি সংরক্ষণসহ একাধিক দিক দেখা হয় ইন্ডিয়ান গ্রীণ বিল্ডিং কাউন্সিলের তরফ থেকে।
এক নজরে দেখা যাক কোন বিভাগে কত নম্বর পেয়ে গোল্ড সার্টিফিকেট জয় করল শিয়ালদহ স্টেশন :
১) সাস্টেনেবল স্টেশন ফেসিলিটি- ২৪/২৪
২) হেলথ হাইজিন অ্যান্ড স্যানিটেশন- ২১/২১
৩) এনার্জি এফিসিয়েন্সি ২১/২১
৪) ওয়াটার এফিসিয়েন্সি ১৬/১৬
৫) স্মার্ট অ্যান্ড গ্রীন ইনিশিয়েটিভস ১২/১২
৬) ইনোভেশন অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট ৫/৬
গোল্ড রেটিং পাওয়ার পর এবার প্ল্যাটিনাম রেটিংয়ের দৌড়ে শিয়ালদহ স্টেশন। কোন কোন দিক আরও সুমসৃণ করা প্রয়োজন তা নিয়েই প্রস্তুতি চলছে রেল কর্তৃপক্ষের।