ষষ্ঠী চট্টোপাধ্যায়, সাংবাদিক: হাসপাতাল তৈরির জন্য জমি দান করেছিলেন বাপ-ঠাকুরদা। সেই জমিতে হচ্ছে ফলতা-মথুরাপুর জল প্রকল্পের কাজ। কেন হাসপাতাল তৈরি না করে সেখানে জল প্রকল্পের কাজ হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আপাতত ওই প্রকল্পের কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘীর পুরন্দর পুর এলাকার বাসিন্দা মামলাকারী জাকির হোসেনের দাবি, ওই এলাকায় একটি গ্রামীন হাসপাতাল তৈরি জন্য ১৯৬২ সালে জমি ১.৯৮ একর জমি দান করেছিলেন তাঁর ঠাকুরদা। সেখানে ছয় শয্যার গ্রামীন হাসপাতাল তৈরি হয়। তাঁর আইনজীবী পঙ্কজ হালদার বলেন, পরবর্তীতে ওই ছয় শয্যার হাসপাতালকে ১০ শয্যার হাসপাতালে রূপান্তরের জন্য মামলাকারীর কাছে আরও জমি চায় তৎকালীন সরকার। এবার ১৯৭৬ সালে মামলাকারীর বাবা সরকারকে আরও জমি দান করেন। মোট ৪.৬৮ একর জমি দান করা হয়। কিন্তু মামলাকারীর অভিযোগ অভিযোগ এতদিন পরই ওই গ্রামীন হাসপাতালকে উন্নিত না করে এখন সেখানে জনস্বাস্থ্য কারিগরী দপ্তর পানীয় জলের একটি পাম্প নির্মাণ করছে।
মামলার শুনানিতে রাজ্যের কাছে ডিভিশন বেঞ্চের প্রশ্ন যদি স্বাস্থ্য দপ্তরকে ওই জমি হাসপাতাল তৈরির জন্য দেওয়া হয়ে থাকে, তাহলে সেখানে কী করে জল প্রকল্পের কাজ করা হচ্ছে? রাজ্যের তরফে জানানো হয়, স্বাস্থ্য দপ্তর ইতিমধ্যেই ওই জমি জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরকে হস্তান্তর করেছে। তাই ওই জমিতে ১১টি ব্লকে জল সরবরাহের জন্য মেগা সারফেস পাম্প তৈরি হচ্ছে। এই বক্তব্য শোনার পরই প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘যিনি জমি দান করেছেন, তাঁকে অবগত না করে কীভাবে এই জমি এক দপ্তর থেকে অন্য দপ্তরে হস্তান্তর হল? এখন তো ওখানে ১০০ শয্যার হালপাতাল করা উচিত। জলের কাজ করুন ঠিক আছে। কিন্তু হাসপাতাল উন্নীত করন করতে হবে।’ এরপরই নির্দেশে ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, যেহেতু ওই জমি হাসপাতাল তৈরির জন্য দান করা হয়েছিল তাই মামলাকারীকে অবগত না করে ওই জমি হস্তান্তর করা যায় না। তাই আদালত পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ফলতা-মথুরাপুর জল প্রকল্পের আওতাভুক্ত ওই মেগা সারফেস জল প্রকল্পের কাজ বন্ধ থাকবে। কেন ওই হাসপাতাল উন্নীত করা হল না তা নিয়ে স্বাস্থ দপ্তরের প্রধান সচিবকে রিপোর্ট দিতে হবে।
এছাড়াও ওই জমি কীভাবে হস্তান্তর করা হল তা নিয়ে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের সচিবের কাছেও পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট তলব করেছে বেঞ্চ।