ষষ্ঠী চট্টোপাধ্যায়,সাংবাদিক: শহর শহরতলীতে একের পর এক বাড়ি হেলে পড়ার ঘটনা ঘটছে। ইতিমধ্যেই মাথার ছাড়িয়ে অসহায় দিন কাটাচ্ছে বেশ কয়েকটি পরিবার।
বেশ কয়েক মাস আগে জনস্বার্থে কলকাতা মেট্রো রেল লাইন পাতার কারণে বউবাজার এলাকায় একের পর এক বাড়িতে ফাটল ধরতে শুরু করে। যদিও প্রাণহানির ঘটনা না ঘটলেও বহুবারই ক্ষতিগ্রস্ত মুখে পড়েছিল। সেই আতঙ্কের বউবাজার এবার উঠে এলো শ্রীরামপুরে।
মামলার বয়ান অনুযায়ী আইনজীবী আশীষ কুমার চৌধুরী জানিয়েছেন, হুগলি শ্রীরামপুর পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে এস সি ঘোষ লেনের একটি বেসরকারি আবাসন নির্মাণ শুরু হতেই তার পার্শ্ববর্তী বেশ কিছু বাড়িতে ফাটল দেখতে পাওয়া যায়। এলাকার প্রভাবশালী প্রোমোটার হওয়ার কারণে অনেকেই মুখ খুলতে চাননি। কিন্তু নির্মাণ কার্যের পাশেই বাড়ি দেবপ্রসাদ বসাকের।
দেবপ্রসাদ বাবুর অভিযোগ এই নির্মাণ কার্যের ফলে তার বাড়ির বিভিন্ন অংশে একাধিক ফাটল ধরতে শুরু করেছে। এ বিষয়ে শ্রীরামপুর পৌরসভা কে অভিযোগ জানান তিনি। অভিযোগ জানানো সত্বেও পৌরসভার পক্ষ থেকে কোনরকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলেও তার অভিযোগ। নিরুপায় দেবপ্রসাদ বাবু ২০২৩ সালে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন।
এপ্রিল ২০২৪ সালে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে মামলার শুনানিতে তিনি নির্দেশ দিয়েছিলেন অবিলম্বে পৌরসভা কে এই বেআইনি নির্মাণ ভেঙে ফেলতে হবে। কিন্তু শ্রীরামপুর পৌরসভা আদালতের সেই নির্দেশ কেন কার্যকর করছেন না। এ বিষয়ে তাদের কাছে জানতে চাওয়া হয়। তৎকালীন সময় পৌরসভার পক্ষ থেকে জানানো হয় চার হাজার ৪০১৪.৭৫ বর্গফুট অবৈধ কিন্তু অভিযোগ কারীর ক্ষতিপূরণ বাবদ ৩৯ লাখ ৪৬ হাজার ৬১৬ টাকা দাবি পুরসভা ঝুলিয়ে রাখে। বলে অভিযোগ।
অবৈধ নির্মাণ ভেঙে ফেলার নির্দেশ কে চ্যালেঞ্জ করে নির্মাণকারী সংস্থার কর্ণধার সন্তোষ চৌধুরী কলকাতা হাইকোর্টে দ্বারস্থ হন। বিচারপতি কৌশিক চন্দ্রের এ জেলাসে মামলার শুনানিতে অভিযোগকারী পক্ষের আইনজীবী আশীষ কুমার চৌধুরী জানান অবৈধ নির্মাণের নির্দিষ্ট অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও শ্রীরামপুর পৌরসভা সেই অবৈধ নির্মাণ মেনে নিলেও কেন এখনো পর্যন্ত সেই অবৈধ নির্মাণ ভাঙ্গা হয়নি তা নিয়ে তিনি আদালতে প্রশ্ন তোলেন। পাশাপাশি তিনি আরো জানিয়েছেন আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও পৌরসভা কোন স্বার্থে নির্মাণকারী সংস্থাকে অবৈধ নির্মাণের সমস্ত রকম সাহায্য করছে।
বিচারপতি চন্দ্র শ্রীরামপুর পৌরসভা কে নির্দেশ দেন সাত দিনের মধ্যে বেআইনি নির্মাণ অংশ ভেঙে ফেলতে হবে। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে দ্বারস্থ হয় নির্মাণকারী সংস্থা। সেদিন বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা উঠতেই নির্মাণকারী সংস্থা মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়ার আবেদন জানান। আদালতে তথ্য গোপনের অভিযোগে বিচারপতি ওই অবৈধ নির্মাণকারী সংস্থা কে এক লক্ষ টাকা আর্থিক জরিমানা করেন।