ষষ্ঠী চট্টোপাধ্যায়, সাংবাদিক: হাসপাতালের জমিতে জল সরবরাহ প্রকল্প। চিকিৎসা পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিবের রিপোর্ট দেখে বেজায় ক্ষুব্ধ প্রধান বিচারপতি। যেখানে মানুষ চিকিৎসা পরিষেবা পাচ্ছেনা। মানুষের মৃত্যু ঘটছে। সেদিকে সরকারের কোন দৃষ্টি নেই! হাসপাতাল পরিষেবার জন্য ২০ বিঘা জমি রয়েছে। কিন্তু ১৯৭৬ সাল থেকে এখনো সেই হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা ৬টি।বর্তমানে সেই শয্যা সং্খ্যা চাহিদা অনুয়ায়ী ১০০ টি হওয়া উচিত। মন্তব্য প্রধান বিচারপতির।
১৯৬২ সালে হাজি আয়েত বারি মোল্লা দক্ষিণ ২৪ পরগনার মধুরাপুর অঞ্চলে স্থানীয় মানুষদের চিকিৎসা পরিষেবার জন্য ১০ বিঘা জমি দান করেন ।উদ্দেশ্য ঐজমিতে প্রাথমিক হাসপাতাল তৈরি হবে।৬ শয্যা বিশিষ্ট পুরন্দর পুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র তৈরি হয়।পরবর্তী কালে স্থানীয় মানুষের চাহিদা অনুয়ায়ী ঐ হাসপাতালের শয্যা সং্খ্যা বৃদ্ধির প্রয়োজন পড়ে।১৯৭৫ সালে গফুর মোল্লা ফের ১০বিঘা জমি দান করেন।১৯৭৬ সাল থেকে অদ্যাবধি শয্যা সং্খ্যা বৃদ্ধি পায়নি বলে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন গফুর মোল্লার ছেলে জাকির হোসেন।
গত ২ রা জানুয়ারি প্রধান বিচারপতি টিএস শিবাজ্ঞানম এই হাসপাতালের শয্যা সং্খ্যা বাড়িয়ে অন্তত ১০০ করার প্রস্তাব দেন।
কিন্তু মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিবের রিপোর্ট জমা পড়ে।রিপোর্টে উল্লেখ করা হয় ১৯৭৬ সালেই ঐ হাসপাতাল ১০ শয্যার করা হয়েছে। এলাকার মানুষের চাহিদা অনুয়ায়ী শয্যা এর থেকে বেশি বাড়ানোর প্রয়োজন নেই।ঐ স্থানে জল সরবরাহের প্রয়োজন রয়েছে। তাই ঐ জমিতে জল সরবরাহ প্রকল্প করা হচ্ছে। এই রিপোর্ট দেখে চরম ক্ষুব্ধ প্রধান বিচারপতি।
প্রধান বিচারপতি রাজ্যের উদ্দে্শ্যে বলেন,
” পার্কস্টিটে আলো লাগিয়ে উৎসব পালন করছেন আর এদিকে লোক মরছে।”
“IF there is a will there is a way.”
রাজনৈতিক সদিচ্ছা না থাকলে আমলারা কাজ করতে পারেনা। রাজ্যের আইনজীবী অনির্বাণ রায়কে প্রধান বিচারপতি বলেন,
সুন্দরবনের মত দ্বীপ জায়গায় লোকের জীবন যাপন এমনিতেই অত্যন্ত কঠিন।আপনাদের কোন সদিচ্ছা নেই। অত্যন্ত দু:খের ব্যাপার। লোক সাফার করছে। এই সব লোকজন কখনো হয়তো কলকাতাই দেখেনি।
একটা হুইল চেয়ারের জন্যও রাজ্যকে নির্দেশ দিতে হয়। অত্যন্ত দু:খের বিষয়। “
প্রধান বিচারপতির মন্তব্যে কার্যত হতচকিত রাজ্যের আইনজীবী।
আদালতের নির্দেশ, আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ঐ জমিতে জল সরবরাহ পরিষেবা কতটা বাস্তবায়িত হয়েছে এবং কত মানুষ তা থেকে উপকৃত হবে তার একটি রিপোর্ট আদালতে পেশ করতে হবে।
ঐ হাসপাতালে অন্তত ২৫ % শয্যা বৃদ্ধির বিষয়ে সরকারকে পরিকল্পনা করতে হবে।মামলার পরবর্তী শুনানি ২৪ ফেব্রুয়ারি।