মাম্পি রায়, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ ২৭ ফেব্রুয়ারির পরিসংখ্যান বলছে বাংলাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে ১ হাজার ৬৫৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে অপারেশন ডেভিল হান্টে ৭৪৩ জন এবং অন্য মামলা ও ওয়ারেন্ট-মূলে গ্রেফতার করা হয়েছে ৯১৪ জনকে। এই নিয়ে অপারেশন ডেভিল হান্টে মোট ১১ হাজার ৩১৩ জনকে গ্রেফতার হয়েছে। ২৭ ফেব্রুয়ারি খবরটি নিশ্চিত করেন পুলিশের সদর দফতরের এআইজি ইনামুল হক সাগর। তিনি জানান, অপারেশন ডেভিল হান্ট অভিযানে ধৃতদের কাছ থেকে একটি শুটার গান, একটি কার্তুজ ও দুটি ছুরি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পুলিশের এই বিশেষ অভিযান চলবে বলেও সাফ জানিয়ে দেন তিনি।
২৬ ফেব্রুয়ারি পুলিশ সদর দফতরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, অপারেশন ডেভিল হান্টের পাশাপাশি বিভিন্ন মামলায় ২৪ ঘণ্টায় আরও ১ হাজার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বেশ কিছু অস্ত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে একটি ৪ পয়েন্ট ৫ এমএম পিস্তল, একটি এলজি, একটি শুটারগান, একটি দেশীয় একনলা বন্দুক, একটি ম্যাগাজিন, ৭টি কার্তুজ ও রাইফেলের একটি গুলি। অপরেশন ডেভিল হান্টে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জাকির হোসেন ইমনকে গ্রেফতার করেছে তাড়াইল থানার পুলিশ। বুধবার রাতে তাড়াইল সাচাইল এলাকায় তল্লাশি অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে পুলিশ। ধৃত আসামী জাকির হোসেন ইমন সাচাইল গ্রামের মৃত ইদ্রিস মিয়ার ছেলে। মৃত ইদ্রিস মিয়া তাড়াইল সাচাইলের বাসিন্দা না। তিনি বিয়ের পর হইতে শ্বশুড় বাড়িতেই থাকতেন। জাকির হোসেন ইমন ছোট বেলা থেকেই মামার বাড়িতে মানুষ। ইমনের এক মামা সাইদুর রহমান তাড়াইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ছোট মামা দেলোয়ার হোসেন ফুল মিয়া তাড়াইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সক্রিয় সদস্য। তাছাড়াও তার আরেক মামা রংগু মিয়া তাড়াইল উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা কালীন সভাপতি ছিলেন। তাহলে কি অপারেশন ডেভিল হান্টের মাধ্যমে আওয়ামী লিগের সদস্যদেরই বেছে বেছে নিশানা করছে ইউনুস সরকার ? তা প্রকাশ্যে স্বীকার না করে নিলেও ইউনুস প্রশাসনের আচরণে তা বুঝতে বাকি নেই কারোর।
৭ ফেব্রুয়ারি গাজীপুরে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছিল। ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে একজন চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। হামলার ঘটনার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও অন্য নিরাপত্তা সংস্থার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা বৈঠক করেন। দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তারপরই ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে অপারেশন ডেভিল হান্ট নামক বিশেষ অভিযান শুরু হয়। আপাতত এই অভিযান বন্ধের পরিকল্পনা নেই। অভিযান চালিয়ে যাওয়া হবে। পাশাপাশি অভিযুক্তদের কঠোর থেকে কঠোরতম শাস্তি দেওয়া হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।