মাম্পি রায়, নিজস্ব বাংলাদেশের বিষয়টি মোদীর উপর ছাড়ছি। মোদী একাই বুঝে নেবেন। এমনই মন্তব্য করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানেই ট্রাম্প বলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতিতে আমেরিকার কোনও গুপ্ত ভূমিকা নেই । দুদিনের আমেরিকা সফরে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ হোয়াইট হাউজে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেন মোদী। ওই বৈঠকেই বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগপ্রকাশ করেন মোদী। শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর অনেকে দাবি করছিলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে গোপনে কলকাঠি নাড়ছে আমেরিকা।
এদিন ট্রাম্প স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতিতে আমেরিকার কোনও হাত নেই। দীর্ঘ দিন ধরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী এই সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করছেন। আমি এই সংক্রান্ত খবর পড়েছি। তবে বাংলাদেশের ব্যাপারটা আমি মোদীর উপরেই ছাড়তে চাই।পরে এই নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্রী বলেন, ‘‘বাংলাদেশ নিয়ে মোদী এবং ট্রাম্পের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক যেসব ঘটনা ঘটছে, তা নিয়ে ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি, অবস্থান ট্রাম্পকে জানিয়েছেন মোদী। নিজের উদ্বেগও ব্যক্ত করেছেন। আমরা আশা করছি, বাংলাদেশে পরিস্থিতির উন্নতি হবে। আমরা ওদের সঙ্গে গঠনমূলক এবং স্থিতিশীল আলোচনা করতে পারব।’’
ওভাল অফিসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে স্বাগত জানিয়ে উষ্ণ আলিঙ্গনে ভরিয়ে দেন ট্রাম্প। তারপর তাঁরা একসঙ্গে বাণিজ্য, নিরাপত্তা সহ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করেন। এদিন মোদীকে একটি বইও উপহার দেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নিজের লেখা বই আওয়ার জার্নি টুগেদার-এর একটি কপিতে সই করে মোদীকে উপহার দেন ট্রাম্প। এই বইতে লেখা রয়েছে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের বিভিন্ন ঘটনা। তাঁর ব্যক্তিগত সফরের একগুচ্ছ ছবিও তুলে ধরা হয়েছে বইটিতে৷ এর মধ্যে অন্যতম ২০১৯ সালে মোদীর আমেরিকা সফরের ‘হাউডি মোদী’ অনুষ্ঠানের ছবিও৷
বইয়ের যে কপিটি ডোনাল্ড ট্রাম্প নরেন্দ্র মোদীকে উপহার দিয়েছেন তাতে লেখা রয়েছে, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, আপনি গ্রেট’। নিজে হাতে পেন দিয়ে ওই বার্তা লিখে সই করে দেন ট্রাম্প। এক্স হ্যান্ডেলে এই বন্ধুত্বের ছবি এবং সেই উপহার প্রদানের মুহূর্তের ছবি শেয়ার করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
২০২৪-এর অগাস্টে আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনার বাংলাদেশ ত্যাগের পর অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্বে এসেছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী মহম্মদ ইউনুস। যদিও তার পর থেকে শান্তির বদলে ক্রমশ অশান্তিতেই ডুবে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বেড়েছে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন। এই পরিস্থিতি একের পর এক ভারতবিরোধী স্লোগান, ভারতবিরোধী কথাবার্তা উঠে আসছে সেদেশ থেকে। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ইস্যুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, মোদী একাই বুঝে নেবেন। ভারত-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই বন্ধুত্বের ছবি নিঃসন্দেহে বাড়তি শক্তি জোগাল ভারতকে তা বলাই বাহুল্য।