বছরের শুরুতেই মিড-ডে মিল নিয়ে সুখবর। মিডডে মিলে শিক্ষার্থীদের দেওয়া হবে অতিরিক্ত পুষ্টি। এই নিয়ে নির্দেশনা জারি করল শিক্ষা দফতর। প্রতি সপ্তাহে একটি করে অতিরিক্ত ডিম দেওয়া হবে। সারা বছর কি থাকবে এমন মেন্যু? কি লেখা আছে নির্দেশিকায়? জানতে সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি পড়ুন।
নাজিয়া রহমান, সাংবাদিক: বছরের শুরুতেই মিড-ডে মিল নিয়ে সুখবর। মিডডে মিলে শিক্ষার্থীদের দেওয়া হবে অতিরিক্ত পুষ্টি। এই নিয়ে নির্দেশিকা জারি করল শিক্ষা দফতর। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে ‘ফ্লেক্সি ফান্ড’ হিসাবে বরাদ্দ ৭৫৬২.৫৩ লক্ষ টাকা থেকে যে টাকা অবশিষ্ট রয়েছে, সেখান থেকেই পড়ুয়াদের জন্য পুষ্টিকর খাবারের ব্যবস্থা করা হবে । এই টাকাতে পড়ুয়াদের অতিরিক্ত একটি করে ডিম দেওয়া হবে।স্কুল শিক্ষা দফতর জানিয়েছে, রাজ্যের ৮৫ লক্ষ ৯৩ হাজার ৭৮৩ জন পড়ুয়াকে সপ্তাহে দু’দিন করে ডিম দিতে হবে, আগে যা এক দিন করে দেওয়া হত। এবার অতিরিক্ত আরও একটি করে ডিম দেওয়া হবে।এ ছাড়াও পুষ্টিকর ফল থাকতে হবে খাবারে। এর জন্য রাজ্যের পক্ষ থেকে মাথাপিছু আট টাকা করে খরচ করা হবে। মিড-ডে মিলে বাড়তি পুষ্টি সংযোজনের সময়সীমা পাঁচ সপ্তাহ হিসাবে নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্থাৎ ৩১ মার্চ, ২০২৫ এর মধ্যে অতিরিক্ত একটি করে ডিম দিয়ে মোট ১১দিনের জন্য পড়ুয়াদের সাপ্লিমেন্টারি ফুড দিতে হবে। এই নিয়ে নির্দেশিকা জারি করেছে রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতর। পাশাপাশি কত টাকা কোন জেলার জন্য বরাদ্দ তাও নির্দেশিকায় উল্লেখ করা হয়েছে।
অতিরিক্ত পুষ্ঠিযুক্ত খাবার দেওয়ার কারণ হল,২০২৪ -২৫ অর্থবর্ষের শেষের দিকে বরাদ্দ বৃদ্ধির পর ফান্ড অবশিষ্ট ছিল। পড়ুয়াদের পুষ্টির কথা মাথায় রেখে সেই ফান্ডকে যথাযথ ভাবে ব্যবহার করতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তাই এই নির্দেশিকা।বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, “আমরা প্রথম থেকেই বলেছি যে যে টাকা বরাদ্দ আছে তাতে সাপ্লিমেন্টারি ফুড দেওয়া বা পুষ্টিকর খাদ্য দেওয়া সম্ভব নয়।আমরা বার বার দাবি করেছি, মাথাপিছু বরাদ্দ হিসাবে প্রাথমিকে ১০ টাকাও উচ্চ প্রাথমিকে ১৫ টাকা না করতে পারলে এই বয়সের ছাত্র-ছাত্রীদের বাস্তবসম্মত ভাবে পুষ্টিকর খাবার দেওয়া সম্ভব নয়। কেন্দ্র এবং রাজ্য উভয়েই বিষয়টিকে কার্যত অবহেলা করছে।” সূত্রের খবর,এই অর্থবর্ষে যেহেতু সময় কম তাই নির্দেশিকায় ১১দিনের কথা বলা হয়েছে। তবে তা পাঁচ সপ্তাহের মধ্যে ভাগ করা হবে যাতে পড়ুয়ারা প্রতিসপ্তাহে এই পুষ্টিকর খাদ্য পাই। প্রসঙ্গত ২০২৪-র ২৭ নভেম্বর কেন্দ্রীয় শিক্ষা দফতরের তরফ থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়েছিল, মিড-ডে মিলের বরাদ্দ প্রাথমিকে ৭৪ পয়সা এবং উচ্চ প্রাথমিকে এক টাকা ১২ পয়সা বৃদ্ধির কথা। অর্থাৎ কেন্দ্রীয় সরকারের বরাদ্দ বাড়ার পর প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের মাথাপিছু মিড-ডে মিলের বরাদ্দ হয়েছে ৬ টাকা ১৯ পয়সা, যার মধ্যে কেন্দ্র দেবে তিন টাকা ৭১ পয়সা। এর পরে ডিসেম্বরের পুনরায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতর জানায়, তারা দেবে মাথাপিছু ২ টাকা ৪৮ পয়সা। উচ্চ প্রাথমিক অর্থাৎ ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের মাথাপিছু বরাদ্দ হয়েছে ৯ টাকা টাকা ২৯ পয়সা। এর মধ্যে কেন্দ্র দেবে ৫ টাকা ৫৭ পয়সা এবং রাজ্য দেবে ৩ টাকা ৭২ পয়সা। অবশিষ্ট টাকায় পড়ুয়াদের অল্পদিনের জন্য হলেও পুষ্টিকর খাদ্যের দেওয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন শিক্ষকমহলের একাংশ।