এই মুহুর্তে বিরাট চিন্তার সম্মুখীন নাসা। চিন্তায় রয়েছেন বিজ্ঞানীরাও। প্রবল গতিবেগ আরও স্পষ্ট ভাবে জানালে ঘন্টায় প্রায় ৬১ হাজার কিলোমিটার গতিবেগে পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে এক গ্রহাণু। যার জেরে বিপদে পড়তে পারে বেশ কয়েকটি শহর। তালিকায় কি আছে কলকাতাও? প্রমাদ গুনছেন সকলেই।
সায়ন্তিকা ব্যানার্জি, সাংবাদিক: আবারও এক বড় সংকটের মুখে ধরিত্রী। পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে গ্রহাণু ‘2024 YR4’। চিন জানাচ্ছে, পৃথিবীর বুকে আছড়ে পড়তে এই গ্রহাণুর সময় লাগবে প্রায় ৭ বছর। যার শুনেই ফের প্রমাদ গুনছেন বিজ্ঞানীরা। চিন্তায় নাসাও।
শোনা যাচ্ছে এই মারাত্মক গতিবেগের গ্রহাণুর সঙ্গে সামান্যতম ধাক্কাতেও ধূলিসাৎ হয়ে যেতে পারে যে কোন শহর। তাই স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে এই গ্রহাণুর আঘাতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে দুনিয়ার কোন প্রান্ত? এর থেকে বাঁচার নেই কি কোনও উপায়? শুরু হয়ে গিয়েছে তার চুলচেরা বিশ্লেষণ।
বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, যদি শেষ পর্যন্ত গ্রহাণুটি পৃথিবীর বুকে আছড়ে নাও পড়ে, তাহলেও বিপদের সম্ভাবনা থেকে যাবে। বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের পর সেটির বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। প্রায় আট মেগাটন টিএনটি শক্তির বিস্ফোরণ হবে এর ফলে। জাপানের হিরোশিমায় যে পরমাণু বোমা বিস্ফোরণ ঘটেছিল, তার থেকে প্রায় ৫০০ গুণ বেশি শক্তির বিস্ফোরণ হবে।
দুনিয়ার তাবড় জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা একবিষয়ে একমত যে গ্রহাণুটির আকার, গতি এবং গঠনের উপর নির্ভর করছে আসন্ন বিপদ। 2024yr4আকারে অস্বাভাবিক বড় হলে ধাক্কার অভিঘাত সহ্য করা যথেষ্ট কঠিন হবে। তবে এ ব্যাপারে এখনই কোনও ভবিষ্যদ্বাণী করতে চাইছেন না তারা। কারণ হাতে রয়েছে আরও ৭ বছর।
২০২৩ সালের ডিসেম্বরে চিলির ‘এল সসে অবজ়ারভেটরি’ প্রথম দেখতে পায় ১৩০ থেকে ৩০০ ফুট ব্যাসের এই গ্রহাণুটি। প্রাথমিক ভাবে এটিকে নিয়ে চিন্তার কোনও অবকাশ না থাকলেও বিজ্ঞানীরা জানতেন, পৃথিবীর দিকে ধেয়ে এলেও বেশ কিছুটা দূর দিয়েই চলে যাবে গ্রহাণুটি। কিন্তু নাসার সাম্প্রতিক পর্যবেক্ষণ বলছে, চিন্তা করতেই হবে গ্রহাণুটিকে নিয়ে কারণ গত কয়েক দিনে এটির পৃথিবীর বুকে আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা বেড়ে ৩.১ শতাংশ হয়েছে।
নাসা আরও জানিয়েছে প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্বে, দক্ষিণ আমেরিকার উত্তরে, আটলান্টিক মহাসাগরে, আফ্রিকা, আরব সাগর এবং দক্ষিণ এশিয়া জুড়ে এর প্রভাব পড়তে পারে। ধ্বংস হয়ে যেতে পারে পৃথিবীর সাতটি অত্যন্ত জনবহুল শহর— বোগোতা, আবিদজান, লাগোস, খার্তুম, ঢাকা, মুম্বই এবং কলকাতা।
এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য অতীতেও বহুবারই গ্রহাণুর সঙ্গে পৃথিবীর সংঘর্ষে মানব সভ্যতা ধ্বংস হওয়ার নানা জল্পনাও শোনা গিয়েছে। কিন্তু এবার সেই সংঘর্ষের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।