বুধবার ২০২৫/২৬ এর রাজ্য বাজেটে ২০২৬ এর ভোটের বাদ্যি বাজিয়ে দিলেন অর্থ দফতরের প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। শাসক দলের লক্ষ যে গ্রামের ভোটাররা তা বোঝা যাচ্ছে বিভিন্ন দফতর ভিত্তিক বাজেট বরাদ্দের দিকে লক্ষ করলে। শুধু পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের বাজেট বরাদ্দ ৪৪ হাজার কোটি টাকার বেশি, যার কাছাকাছি রয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতর, তাও পঞ্চায়েত দফতরের অর্ধেক।
সঞ্জু সুর, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ- একটা সময় এই বাংলায় শ্লোগান শোনা যেত গ্রাম দিয়ে শহর ঘেরার। আসলে ভোটে জেতার মূল চাবিকাঠি (ভোটার) থাকে গ্রামেই। ফলে গ্রামের মানুষের জন্য যে সরকার যত বেশি প্রকল্প রূপায়ন করবে, সেই সরকারের স্থায়িত্ব তত বেশি হবে। এটাই ছিলো মোদ্দা কথা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারও সেই গ্রামের মানুষের জন্য একের পর এক প্রকল্প চালু করেছেন। এবারের বাজেটেও লক্ষ সেই গ্রামের মানুষ।
বুধবার রাজ্য বিধানসভায় অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য যে বাজেট পেশ করলেন সেখানে বিভিন্ন দফতরের জন্যেও বাজেট বরাদ্দের কথা উল্লেখ করেছেন। দেখা যাচ্ছে শুধু পঞ্চায়েত দফতরের জন্য বাজেট বরাদ্দের প্রস্তাব রাখা হয়েছে প্রায় ৪৪,১৩৯.৬৫ কোটি টাকা। এর কাছাকাছি অর্থ আর কোনো দফতরের জন্য বরাদ্দ করা হয় নি। মনে করা হচ্ছে ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পের অর্থের সংস্থান করার জন্যই এই বিশাল পরিমান অর্থ পঞ্চায়েত দফতর কে দেওয়া হচ্ছে। সরকারের ঘোষণা মতো আগেই প্রায় ১২ লক্ষ মানুষকে বাড়ি তৈরির টাকা দেওয়া হচ্ছে। এবারের বাজেটে অতিরিক্ত ১৬ লক্ষ উপভোক্তাকে বাড়ি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, যার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ৯,৬০০ কোটি টাকা। তবে শুধু ‘বাংলার বাড়ি’ নয়, ৩৭ হাজার কিঃমিঃ নতুন গ্রামীণ রাস্তা তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যার জন্য বরাদ্দ ১,৫০০ কোটি টাকা। এই সব কিছুই হবে পঞ্চায়েত দফতরের মাধ্যমে। পঞ্চায়েত দফতরের পরে যে দফতরের বাজেট বরাদ্দ দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে সেটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। সাম্প্রতিক সময়ে আর জি কর কান্ডের পর স্বাস্থ্য দফতর নিয়ে বিস্তর সমালোচনার মুখে পড়েছিলো সরকার। দেখা যাচ্ছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতরের জন্য চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বাজেট বরাদ্দ করেছেন ২১,৩৫৫.২৫ কোটি টাকা। মনে করা হচ্ছে স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর ক্ষেত্রে প্রচুর পরিমানে অর্থ বিনিয়োগ করতে চলেছে সরকার। এছাড়া স্বরাষ্ট্র ও পার্বত্য বিষয়ক দফতরের জন্য ১৪,৮১৭.৬৭ কোটি, পৌর ও নগরোন্নয়ন দফতরের জন্য ১৩,৩৮১.৬৮ কোটি ও জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের জন্য ১১,৬৩৬.৯২ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দফতরের মধ্যে পূর্ত দফতরের জন্য ৬,৭৯৬.৯২ কোটি, সেচ ও জলপথ পরিবহন দফতরের জন্য ৪,১৫৩.৮৪ কোটি, কৃষি দফতরের জন্য ১০,০০০.৭৯ কোটি, খাদ্য সরবরাহ দফতরের জন্য ৯,৯৪৪.৩৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।