মাঝখানে এক বছর বাদ দিয়ে ফের বানিজ্য সম্মেলনের আসর বসতে চলেছে রাজ্যে। বুধবার বিশ্ববাংলা কনভেনশন সেন্টারে এই সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্ন সূত্রে খবর, এই মঞ্চ থেকেই রাজ্যের জন্য দুটি গুরুত্বপূর্ণ সেতুর শিলান্যাস করতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। একটি বর্ধমানে, অন্যটি দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। বর্ধমানে দামোদর নদের উপর যে সেতুটি তৈরি হতে চলেছে সেই সেতুর নাম ‘শিল্প সেতু’ এবং দ্বিতীয়টি দক্ষিণ ২৪ পরগনার গঙ্গাসাগরে মুড়িগঙ্গা নদীর উপর নির্মিত হতে চলেছে।
সঞ্জু সুর, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ- শিল্প সম্মেলনের মঞ্চ থেকে ‘শিল্প সেতু’ নামে সেতুর শিলান্যাস একেবারেই মুখ্যমন্ত্রীর মস্তিষ্ক প্রসূত। এই সেতুর নামকরণ ও তিনিই করেছেন। বর্ধমান জেলায় দামোদর নদের উপর প্রায় ৪০০ কোটি টাকা খরচে ৭০০ মিটার লম্বা একটি সেতু তৈরি করা হবে। কেবলস্টেইড এই সেতুটি তৈরি হলে শিল্পনগরী বর্ধমান সহ বাঁকুড়া, বীরভূম, ঝাড়গ্রাম ও দুই মেদিনীপুর জেলার পরিবহন ব্যবস্থা অনেকাংশে উপকৃত হবে। দামোদর নদের উপর ‘কৃষক সেতু’ নামে একটি সেতু রয়েছে। বর্তমানে সেতুটির অবস্থা জরাজীর্ণ। ফলে সেই সেতুর বিকল্প হিসাবে নতুন এই সেতু তৈরি করা হচ্ছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
এছাড়া দ্বিতীয় যে সেতুর শিলান্যাস বুধবার শিল্প সম্মেলনের মঞ্চ থেকে হতে চলেছে, তা ধারে ও ভারে রাজ্য সরকারের আর্থিক সুস্থিতির একটা নিদর্শন হতে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে। গঙ্গাসাগরে মুড়িগঙ্গা নদীর উপর সেতু তৈরির জন্য বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে কেন্দ্র সরকারের কাছে তদবির করে আসছে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে এই সেতুর বিষয়ে অনেক বার কেন্দ্র সরকারের সঙ্গে কথা বলেছেন। কারণ এই সেতু নির্মাণ করতে যে বিশাল পরিমাণ অর্থের সংস্থান করতে হবে তা একা রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া সম্ভব নয়। চারদিক দিয়ে নদী ও সাগর বেষ্টিত গঙ্গাসাগর মেলায় পৌঁছাতে গেলে নৌকা বা ভেসেল ই ভরসা। জোয়ার ভাঁটার কারনে গঙ্গাসাগর পৌঁছানো সময় সাপেক্ষ। এই সমস্যা মেটানোর জন্যই মুখ্যমন্ত্রী চেয়েছিলেন মুড়িগঙ্গা নদীর উপর সেতু তৈরি করতে। কিন্তু বার বার কেন্দ্রের কাছে আবেদন নিবেদনে কাজ না হওয়ায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই সেতু নিজেরাই অর্থাৎ রাজ্য সরকারের অর্থেই তৈরি হবে বলে জানিয়েছিলেন। এই সেতু তৈরি করতে রাজ্যের কোষাগার থেকে প্রায় ১৫০০ কোটি টাকা খরচ করতে হবে। শোনা যাচ্ছে বুধবার বানিজ্য সম্মেলনের মঞ্চ থেকে এই সেতুর ও শিলান্যাস করবেন মুখ্যমন্ত্রী। দুটি সেতুরই ডিপিআর (Details Project Report) তৈরি হয়ে গিয়েছে বলে খবর। নবান্ন সূত্রে খবর, শিল্প মহলকে বার্তা দিতেই এই দুই সেতুর শিলান্যাসের জন্য শিল্প সম্মেলনের মঞ্চকে বেছে নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।