সঞ্জনা লাহিড়ী, সাংবাদিকঃ গত দেড় দশকে সারা দেশে নজির বিহীন উন্নয়ন হয়েছে রাস্তাঘাটের। উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে জাতীয় সড়কের সংখ্যা। যোগাযোগ ব্যবস্থাও উন্নত হয়েছে। এক রাজ্য থেকে আর এক রাজ্যে যাতায়াত সুমসৃণ হয়েছে। রাস্তা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে গাড়ির সংখ্যাও। ফলে যানজট বেড়েছে অনেকাংশে। হাইওয়েতে বেড়েছে টোল প্লাজার সংখ্যাও। এই টোল প্লাজার মূল উদ্দেশ্য হল রাস্তা নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য তহবিল সংগ্রহ করা। সংগৃহীত অর্থের মাধ্যমে রাস্তার রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়ে থাকে যার ফলে সংশ্লিষ্ট রাস্তা ব্যবহারকারী যাত্রীরা সহজেই সেই মহাসড়ক ব্যবহার করতে পারেন। এই টোল ট্যাক্সের টাকা দেওয়া নেওয়ার প্রক্রিয়া দ্রুত করার পাশাপাশি পরিষেবাকে উন্নত করতে FASTag পরিষেবা চালু করা হয় সরকারের পক্ষ থেকে। বর্তমানে ভারতের বেশিরভাগ রাজ্যে FASTag বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এর ফলে পকেটে টাকা না রাখলেও চলে। অনেকেই টোল ট্যাক্স দেওয়ার জন্য FASTag রিচার্জ করেন। তবে অনেকেই এর ব্যবহার এবং উপকারিতা সম্পর্কে সঠিকভাবে অবগত না। টোল প্লাজায় টোল ট্যাক্স দেওয়ার রয়েছে বিশেষ নিয়ম। এমন কিছু নিয়ম রয়েছে যা অপ্রয়োজনীয় টোল ট্যাক্স দেওয়া থেকে বিরত রাখে। এই নিয়মগুলি অনেকেরই অজানা। আপনিও যদি টোল ব্যবহার করে থাকেন তাহলে আজই জেনে নিন নিয়ম গুলি। ভারতের জাতীয় মহাসড়ক কর্তৃপক্ষ বা (NHAI)-এর টোল বুথে অপেক্ষার সময় সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশিকা রয়েছে। নির্দেশিকা অনুযায়ী, যদি কোনও গাড়ি ১০ সেকেন্ডের বেশি টোল বুথের লাইনে আটকে থাকে, তাহলে সেই গাড়িকে টোল ট্যাক্স দিতে হয় না। পাশাপাশি ১০ সেকেন্ড অপেক্ষার সঙ্গে সঙ্গে নিয়ম অনুযায়ী, টোল প্লাজায় অপেক্ষার লাইন কখনই ১০০মিটারের বেশি হওয়া উচিত নয়। যদি এই ঘটনা ঘটে তাহলে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা কোনও যানবাহন থেকেই টোল ট্যাক্স নেওয়া যাবে না। এই নিয়ম কার্যকর হয়েছিল ২০২১ সালে এবং পরবর্তীতে নানা অভিযোগের কারণে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। ২০২৩ সালে সংসদের অধিবেশন চলাকালীন লোকসভায় এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী নিতীন গডকরি জানান, এই ধরনের কোনও স্কিমের কথা সড়ক পরিবহণ মন্ত্রক কিংবা ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি অব ইন্ডিয়ার কোথাও উল্লেখ করা নেই। সেই সময় মন্ত্রকের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, ১০ সেকেন্ডের বেশি অপেক্ষা করতে হলেও প্রত্যেক গাড়ির চালককে টোল প্লাজায় নির্দিষ্ট ট্যাক্স দিতে হবে। তবে যদি টোল ট্যাক্সে কোনও যাত্রী কোনও রকম অসুবিধার সম্মুখীন হয় তাহলে সেই যাত্রী টোল-ফ্রি নম্বর ১০৩৩ (1033)- তে কল করে অভিযোগ করতে পারবেন। অন্যদিকে টোল প্লাজার ২০ কিলোমিটারের মধ্যে যদিও কারও বাড়ি হয়ে থাকে তাহলে তাঁদের জন্য রয়েছে বিশেষ ছাড়। আসুন জেনে নেওয়া যাক কি সেই ছাড়! টোল প্লাজায় NHAI (National Highway Authority of India)- এর ফর্ম পাওয়া যায়। বাড়ির কাছের সংশ্লিষ্ট টোল প্লাজা থেকে ফর্ম সংগ্রহ করে তা ফিল আপ করে, গাড়ির নথিপত্র, বাড়ির ঠিকানার প্রমাণপত্র এবং মালিকের আধার প্যানের ফটোকপি দিয়ে আবেদন করতে হবে। মাসিক একটি নির্দিষ্ট টাকার বিনিময়ে প্রতিদিনের ব্যবহারের পাস পাওয়া যায় সংশ্লিষ্ট টোল প্লাজা থেকে। সেই পাস সারা মাস ব্যবহার করা যাবে। বাড়তি কোনও টোল ট্যাক্স দিতে হবে না। প্রতি মাসে এই পাসের সময়সীমা টাকার বিনিময়ে বাড়ানো যাবে। এই সমস্ত নিয়মগুলি যাঁরা জানেন না। তাঁরা আজই জেনে নিন।