সঞ্জনা লাহিড়ী, সাংবাদিক- কাশ্মীরের অনন্তনাগ হামলার মূলে রয়েছে লস্কর-ই-তৈবার শাখা সংগঠন দ্যা রেসিস্ট্যান্স ফ্রন্ট বা TRF, তা ইতিমধ্যেই সবারই জানা। তবে এই হামলার মূল চক্রী TRF- এর সামনের সারির নেতা সইফুল্লা খালিদ কসৌরি, এমনটাই দাবি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের। মঙ্গলবার দুপুরের জঙ্গি হামলায় এখনও পর্যন্ত সরকারি ভাবে ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। যদিও বেসরকারি সূত্রের এই সংখ্যা ৩২।
কে এই সইফুল্লা খালিদ কসৌরি?
জম্মু-কাশ্মীরে লস্কর-ই-তৈবা এবং TRF-এর যাবতীয় জঙ্গি কাজকর্মের দেখভালের ভার রয়েছে সইফুল্লার উপর। তাকে সইফুল্লা কসৌরি বলেও অনেকে চেনেন। লস্করের ডেপুটি চিফ বলা হয় সইফুল্লাকে। সইফুল্লা লস্করের মাথা ও আন্তর্জাতিক জঙ্গি হাফিজ সইদের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ।সইফুল্লার জীবনযাপনে শৌখিনতার ছাপ স্পষ্ট। তার একাধিক দামী বিদেশি গাড়ি রয়েছে। দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির থেকেও বেশি কড়া নিরাপত্তা বলয়ে বেষ্ঠিত থাকে সইফুল্লা খালিদ কসৌরি। পাক সেনাবাহিনীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সইফুল্লা। পাক সেনাবাহিনীর শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠতা রয়েছে সইফুল্লার। সে যখন পাকিস্তানে যায় তখন তাকে স্বাগত জানাতে ফুলের পাপড়ি ছুঁড়ে বা ফুলের তোড়া দেওয়া হয়। পাকিস্তানে সে VVIP পরিষেবা পায়। পাক অধিকৃত কাশ্মীরের কঙ্গনপুর এলাকায় ২ মাস আগে গিয়েছিল সইফুল্লা বলে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছে। পাক সেনাবাহিনীর কর্নেল জাহিদ জারিন খট্টক তাকে সেখানে তার বক্তব্য তুলে ধরতে অনুরোধ জানান। ভারতীয় সেনা ও ভারতীয়দের বিরুদ্ধে ওই সমাবেশে উগ্র ভাষণ দিয়েছিল সইফুল্লা বলে জানা গেছে।
বড় হামলার ছক পূর্বপরিকল্পিত: বড় হামলার ছক অনেক আগেই করেছিল লস্করের ডেপুটি চিফ। ফেব্রুয়ারির গোড়ায় পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া এলাকায় একটি সমাবেশে ভারতে হামলার হুমকি দিয়েছিল সইফুল্লা। ওই সমাবেশে সে বলে, “আজ ২রা ফেব্রুয়ারি। আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, ২০২৬ সালের ২রা ফেব্রুয়ারির মধ্যে কাশ্মীর দখলের জন্য যা করা প্রয়োজন তা করব। আগামী দিনে আমাদের মুজাহিদ্দিনরা আরও হামলা বাড়াবে”। ওই সমাবেশের আয়োজন করেছিল পাকিস্তানের সেনাবাহিনী এবং আইএসআই যৌথভাবে।
হাফিজ সইদ ঘনিষ্ঠ সইফুল্লা:
জম্মু-কাশ্মীরে সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিলের পরে আইএসআই লস্করের মাধ্যমে তৈরি করেছিল TRF. লস্কর-ই-তৈবা TRF-এর আর্থিক দিকটি দেখাশোনা করে। হাফিজের নির্দেশেই এই তহবিল চালায় সইফুল্লা। হাফিজের সঙ্গে সইফুল্লার ঘনিষ্ঠতা ও যোগাযোগের প্রমাণ পেয়েছে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা RAW এবং বাকি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলি।