ফের বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ। ফের মৃত্যু। বারবার এই ধরনের ঘটনায় রাজ্য পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এই ঘটনায় (পাথর প্রতিমায় বাজি বিষ্ফোরণে) নজরদারির অভাব মেনে নিয়েও ঘুরিয়ে কেন্দ্রের ঘাড়েই দোষ চাপালেন তৃণমূল কংগ্রেসের সহ সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার।
সঞ্জু সুর, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ- ডায়মন্ড হারবার(ডিসেম্বর), কল্যানী(ফেব্রুয়ারি)-র পর এবার পাথর প্রতিমার দক্ষিণ রায়পুর। গত চার মাসে এই নিয়ে তৃতীয় বার মজুত বাজিতে বিষ্ফোরণ। এখনও পর্যন্ত যে বিষ্ফোরণের ঘটনায় আট জন মারা গিয়েছে বলে খবর যার মধ্যে চারজন শিশু। এই ঘটনায় জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে বিস্তারিত রিপোর্ট তলব করেছে নবান্ন। এদিকে পাথর প্রতিমার এই বাজি বিষ্ফোরণে প্রশাসনের নজরদারির অভাব মেনে নিলো রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। দলের রাজ্য সহ সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার মঙ্গলবার পাথর প্রতিমার ঘটনা নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে নজরদারির অভাব মেনে নেন। তবে সেই সঙ্গে তিনি এই ঘটনায় ঘুরিয়ে দায় ঠেললেন কেন্দ্র সরকারের দিকে।
মঙ্গলবার দলীয় অফিসে বসে জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, “এটা তো অনস্বীকার্য যে নজরদারির খামতি তো নিশ্চয়ই আছে, নইলে বিনা অনুমতিতে এমন (কারখানা) গড়ে ওঠা সম্ভব নয়।” রাজ্য পুলিশের খামতি মেনে নিয়েই এরপর দিল্লির দিকে বল ঠেলে দিলেন জয়প্রকাশ। তাঁর অভিযোগ, “তবে আরেকটা কারণ দেখতে হবে। সমস্তটাই হচ্ছে গ্রামাঞ্চলে। গ্রামাঞ্চলে কেন্দ্র সরকারের বঞ্চনার জন্য সাধারণ মানুষের জীবনে একটা দূর্বিসহ কঠিনতা নেমে এসেছে। একশো দিনের কাজের টাকা দেবো না, আবাসের টাকা দেবো না, সারের টাকা দেবো না, ফার্টিলাইজার দেবো না, এই যে একটা অদ্ভুত বৈমাতৃসুলভ ব্যবহার করে কেন্দ্র সরকার বাংলার গ্রামীণ অর্থনীতিকে ভেঙে দিতে চাইছে, তার কিছুটা প্রতিফলন তো পরে যখন কিছু উপরি টাকার জন্য জীবনকে বাজি রেখে কিছু লোক এইরকম বেআইনি কাজে লিপ্ত হয়ে যায়।” জয়প্রকাশ মজুমদারের অভিযোগ সত্যিই যে কেন্দ্র সরকার দীর্ঘদিন ধরেই একশো দিনের টাকা বা গ্রামীণ আবাস যোজনার টাকা আটকে রেখেছে। তবে প্রশ্ন উঠছে রাজ্য সরকার যখন তার নিজের কোষাগার থেকেই একশো দিনের বঞ্চিত উপভোক্তা বা গ্রামীণ আবাস যোজনার বঞ্চিত উপভোক্তাদের টাকা দিচ্ছে, তখন কেন ‘উপরি’ টাকার লোভে ‘কিছু’ মানুষ এই ভাবে বেআইনি পথে যাচ্ছে ! আর যদি গিয়েই থাকে তাহলে কেন পুলিশ প্রশাসন তা আটকাতে পারছে না ! দিল্লির বঞ্চনা এবং পুলিশ প্রশাসনের এই ভূমিকার দিকে আঙ্গুল তোলার পাশাপাশি অবশ্য জয়প্রকাশ মজুমদার এইসব ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রভাবশালীদের দিকেও আঙ্গুল তুলেছেন। স্থানীয় প্রভাবশালী বলতে তিনি কাদের দিকে ইঙ্গিত করছেন, তার উত্তর হয়তো জেলা প্রশাসনই দিতে পারবে।