মোদী ভালো, শাহ খারাপ ! তৃণমূল সুপ্রিমো তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি তেমনটাই মনে করেন। বুধবার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে ইমাম, মুয়াজ্জিনদের সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাখা বক্তব্য অনেকটা যেন সেই দিকেই ইঙ্গিত করলো। প্রধানমন্ত্রী কে উদ্দেশ্য করে তাঁকে বলতে শোনা যায়, “মোদী জি কে বলবো লোকটাকে কন্ট্রোল করুন।”
সঞ্জু সুর, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ- সংশোধিত ওয়াকফ আইন নিয়ে রাজ্যের বেশকিছু জায়গায় অশান্তির আঁচের মধ্যেই বুধবার ইমাম, মুয়াজ্জিনদের ডাকা সভায় বক্তৃতা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই বক্তৃতায় তিনি (মুখ্যমন্ত্রী) তুমুল আক্রমণ করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ্ কে। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি মুর্শিদাবাদে হওয়া সাম্প্রতিক দাঙ্গা আসলে বিজেপির পূর্ব পরিকল্পিত। এই দাঙ্গায় বাংলাদেশের দুষ্কৃতীরা জড়িত রয়েছেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সূত্র উল্লেখ করে একটি সংবাদ সংস্থা এই খবর করায়, মুখ্যমন্ত্রীর সব রোষ গিয়ে পড়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দিকে। বাংলাদেশ থেকে দুষ্কৃতীরা আসলো আর অমিত শাহের হাতে থাকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীন বিএসএফ কেন তা আটকাতে পারলো না ? এই প্রশ্ন তুলে মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করে বলেন, “আমি খুঁজে বের করবো বর্ডার এলাকায় কেন ঢুকতে (দুষ্কৃতীদের) দেওয়া হয়েছিলো। কেন বাচ্ছা বাচ্ছা ছেলেদের ৫০০০/৬০০০ টাকা দিয়ে পাথর ছুঁড়িয়েছে। আমরা কিন্তু তদন্ত করছি। সব বাইরে আসবেই।” মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই দাঙ্গায় যদি বাংলাদেশের হাত থাকে তাহলে এর দায় কেন্দ্রের। এরপরই প্রথমে নাম না করে অমিত শাহ কে আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আপনি (স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) কোনোদিন প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। মোদী জি চলে গেলে আপনার কি হবে ? আপনাকে তো ‘হামাগুড়ি’ দিতে হবে।” এরপরই প্রধানমন্ত্রী কে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “মোদী জি কে আমি অনুরোধ (রিকোয়েস্ট) করবো দয়া করে লোকটিকে (অমিত শাহ) কন্ট্রোল করুন।”
কেন্দ্র সরকার যে ওয়াকফ সংশোধনী আইন লাগু করেছে, সেই আইন কোর্টে চ্যালেঞ্জ হবে জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজে যদি কালিদাসের মতো যে গাছে বসে আছেন, সেই গাছ কাটেন তাহলে কি হবে ? গুজরাত দাঙ্গার জন্য অমিত শাহকেই দায়ী করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী কে তো তাও অনেকে চেনেন, অমিত শাহ্ আপনাকে তো কেউ চেনে না। আপনাকে শুধু তারাই চেনে যারা গুজরাত দাঙ্গা করেছে। এছাড়াও বিরোধীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন কেন্দ্রিয় এজেন্সির ব্যবহার নিয়েও অমিত শাহকে আক্রমণ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রধানমন্ত্রী কে তাঁর অনুরোধ, “আমি প্রধানমন্ত্রী কে আবেদন করছি আপনার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কে এইসব করতে দেবেন না। এজেন্সিকে দিয়ে উনি শুধু বিভাজন করতে চাইছেন।”
মুখ্যমন্ত্রীর আক্রমণ থেকে বাদ যান নি উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ও। দিন দুই আগে মুর্শিদাবাদের দাঙ্গার কথা উল্লেখ করে উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, “লাথো কা ভুত, বাতো সে নেহি মানতে।” সদ্য শেষ হওয়া মহাকুম্ভ নিয়ে সরাসরি যোগীর নাম নিয়েই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “যোগী বড়বড় কথা বলছেন। যোগী ক্যায়া হ্যায় ? সবচেয়ে বড় ভোগী হ্যায়। মহাকুম্ভে কত লোক মারা গিয়েছেন ? কেন সেখানে(উত্তর প্রদেশে) মানুষ কে ভয় দেখিয়ে রাখা হচ্ছে?”