সবুজ মাঠে গ্রামের ফুটবলারদের দাপাদাপি। সামনে বসে ফরাসি কোচ। ভুলচুক হলে দেখিয়ে দিচ্ছেন হাঁসিমুখে। গ্রামে কিনা ফরাসি কোচ । যা কিনা স্বপ্নাতীত। আসানসোলের কুলটির মিঠানি মাঠে প্রতিদিনই বসছে ফুটবলের আসর। ফরাসি কোচের প্রশিক্ষণে ঘাম ঝরাচ্ছে গ্রামের উঠতি ফুটবলাররা। অন্ধকারে হারিয়ে যাওযার আগে এই প্রতিভাবান ফুটবলারদের হাত ধরতে এগিয়েছে এসেছে হলদিয়া ইন্টারন্যাশনাল ফুটবল অ্যাকাডেমি তথা এইচআইএফএ। প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে এবার খুঁজে আনা হবে বাংলার প্রতিভাবান ফুটবলারদের।
ছোটন সেনগুপ্ত, সাংবাদিক, আসানসোল- কথায় রয়েছে সব খেলার সেরা বাঙালির ফুটবল। অথচ দিন দিন গরিমা হারাচ্ছে বাংলা ও বাঙালির ফুটবল। খামতি দেখা গেছে বাঙালি ফুটবলের সাইড লাইনে। এই কথা মাথায় রেখে এগিয়ে এসেছে হলদিয়া ইন্টারন্যাশনাল ফুটবল অ্যাকাডেমি তথা এইচআইএফএ এইচআইএফএ। তাদের লক্ষ্য বাংলার ফুটবলারদের লাইম লাইটে আনা। আর সেই লক্ষ্যেই বাংলার গ্রামগঞ্চে চলছে ফুটবলার খুঁজে আনার কাজ। আর সেই কাজে জহুরির ভূমিকায় দুই বিদেশি কোচ। গ্রামের ছেলেরা ফুটবল নিয়ে মাঠে দাপাচ্ছে। আর তাদের নজরে রেখে ফুটবলের খুঁটিনাটি বুঝিয়ে দিচ্ছেন ফরাসি কোচ। আসানসোলের কুলটি মিঠানি মাঠে প্রায় ২০০ জন ফুটবলার মাঠ দাপাল। কেউ এসেছে পুরুলিয়া থেকে তো কেউ এসেছে বাঁকুড়া থেকে। সবাই যেন চায় ফরাসি কোচের নজরে আসতে। ফরাসী কোচ আর কেউ নন ম্যাক্স কেস্তেলিউট। যিনি বেলজিয়াম লিগের ফুটবলার ও ফ্রান্স আর্মিতেও ছিলেন। শুধু ম্যাক্স কেস্তেলিউট নন গ্রামের প্রতিভা বাছাইয়ে জহুরি হবেন ফিলিপ দি রাইডারও। যিনি একাধারে বেলজিয়াম ও স্পেন দলে বয়সভিত্তিক কোচ ছিলেন তেমনি ইস্টবেঙ্গলেরও কোচ হয়েছিলেন। গ্রামের মাঠেঘাটে থাকা তারকা ফুটবলারদের এবার লাইম লাইটে আনতে উদ্যোগী হয়েছে এইচআইএফএ। অর্থাত হলদিয়া ইন্টারন্যাশনাল ফুটবল অ্যাকাডেমি, আইএফএ ও সিএসএফের উদ্যোগে শুরু হয়েছে ফুটবলার খোঁজার কর্মকাণ্ড। আসানসোলের কয়লাখনি অঞ্চলের প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ম্যাক্স কেস্তেলিউট। প্রথম দফায় বেছে নেওয়া হয়েছে ৪০ জনকে।
বিদেশি কোচ দেখে খেলায় উতসাহ পেয়েছেন গ্রামেগঞ্জের ফুটবলাররা। সবুজ মাঠে ফরাসি কোচের সামনে নিজেদের যোগ্যতা দেখানোর সুযোগ পেয়েছে তাঁরা। যা জীবনে প্রথম। আর কয়েকদিনের মধ্যে আসবেন বেলজিয়ান কোচ ফিলিপ দি রাইডার। তিনি আবার বাছাই করা ফুটবলারদের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করবেন। গ্রামের এবড়ো, খেবড়ো মাঠে বিদেশি কোচের সামনে দাপাদাপি করে বেড়াচ্ছে গ্রামের আদিবাসী পাড়ার ছেলে থেকে গ্রামে অন্ধকারে গলির ভিতরে থাকা ছেলেটা। যারা একদিন অভাব অনটনের সঙ্গে লড়াই করতে গিয়ে হয়তো ভুলে যেত ফুটবল খেলাকেই। তারা সুযোগ পেয়েছে নিজেদের প্রমাণ করার। তাই এই সুযোগকে হাতছাড়া করতে নারাজ তারাও।