চক্রযুদ্ধ ঘোষ – সাংবাদিক – যশরাজ আজকাল একটু অন্য পথ অবলম্বন করা শুরু করেছে। মাঝের মধ্যে নেটফ্লিক্সের সাথে ওয়েবসিরিজ করছে, যেমন ‘দা রেলওয়ে ম্যান’ বা ‘মণ্ডলা মার্ডার্স’ বা কখনো শ্বল্প বাজেটের কিছু ফিল্ম বার করছে যেমন ‘বিজয় ৬৯’ বা ‘মহারাজ’। তাদের কাজের মধ্যে নতুনত্বের অভাব হলেও একা ধারে বাণিজ্যক সাফল্য তারা দিয়েই চলেছে। আজকে চলে এসেছে তাদের পরবর্তী সিনেমার টিজার। না ওয়ার ২ নয়। ওই ফিল্মটির টিজার যথা সময় চলে এসে ঝড় তুলেছে। আজ এসেছে ‘সাইয়ারা’-র টিজার, যেটি তাদের ওয়ার ২ এর অগ্নিপরীক্ষার আগে যশরাজের শেষ ফিল্ম।
টিজার টি শুরু হয় অনিত পদ্দা র চোখের শট দিয়ে, আর তারপর নায়ক আহান পান্ডে কে দেখানো হয় যথাযত বিনা হেলমেটে, মাদক সেবন করতে করতে, রাগী মুখ নিয়ে, বাইকে চেপে আসছে। হিন্দি সিনেমার নায়কদের সচরাচর ট্রাফিক রুলস মেনে চলার বদভ্যাস টি নেই আর কি। ব্যাপার টি মন্দ না লাগলেও নতুনত্ব প্রায় নেই বললেই চলে।
এরপর শুরু হয়ে তাদের মধ্যে কিছু প্রেমের দৃশ্যর মনটাজ। তাদের ঘনিষ্ট কিছু দৃশ্য, আহানের কোন্সার্টের একটি ফ্রেম, এবং নায়ক নায়িকার হাত টেনে ধরলো, সেটির একটি মুহূর্ত। এসব দৃশ্য দেখতে নতুন না লাগলেও ফ্রেমস গুলির সিনেমাটোগ্রাফি বেশ সুন্দর। পরিচালক মোহিত সুরি আমাদের ‘আশিকি ২’, ‘মালঙ্গ’, এবং ‘এক ভিলেনের’ মতন ফিল্ম উপহার দিয়েছেন। এগুলি সিনেমা হিসাবে ভালো, কিন্তু গানের অ্যালবাম হিসাবে দর্শকের মনে বহু বছর ধরে আটকে রয়েছে। দর্শক এই টিজার টির কমেন্ট সেকশনে গিয়েও এটাই লিখছেন যে তারা একটি বিশেষ অ্যালবামের অপেক্ষায় আছেন।
এখানেই একটি মস্ত বড় সমস্যার মুখে পড়তে পারে যশরাজ। সমস্যা হলো এই ফিল্মটির দুটি নায়ক নায়িকা। যেরকম ভাবে টিজার টি এগিয়ে জেতে থাকে, ঠিক তেমনই আহানের মুখের এক্সপ্রেশন বাজে হতে থাকে। অনিত তুলনায় একটু ভালো, কিন্তু তার মধ্যেও সেই ব্যাপার টা নেই। সিনেমাটি আশিকির মতন দেখতে লাগলেও আহানের ব্যক্তিত্ব আদিত্য রয় কাপুরের ধারে কাছেও নেই। অনিতের মুখের এক্সপ্রেসন টা প্রচুর আরষ্ঠ ভাব আছে এবং তার মধ্যে শ্রদ্ধা কাপুরের নিরীহ ভাব টি একদমই নেই। এটি বলছি না যে আদিত্য আর শ্রদ্ধা তাবড় অভিনেতা অভিনেত্রী, কিন্তু তাদের জুটির মধ্যে একটা ২০১৩ সালে দাড়িয়ে আমরা নতুনত্ব দেখতে পেয়েছিলাম। সেটি ২০২৫ সালে দাড়িয়ে কাউর থেকে পাওয়া খুবই মুশকিল। আশিকি ৩ ও এই সমস্যায় ভুগবে। আহান পান্ডে অনন্যা পান্ডের কাজিন। এই ফিল্মটি বলিউডে নেপোটিজম প্রমোট করবে না আসল ট্যালেন্ট নিয়ে আসবে, সেটা শুধু সময় বলবে।
সময় বলবে এটি কি করবে বক্স অফিসে। যশরাজের দর্শক বা বলিপাড়ার লোকেরা, কেউ কিন্তু এই ফিল্ম টি নিয়ে কিছুই জানে না। সবাই যশরাজের ওয়ার টু নিয়ে এতটাই উত্তেজিত যে এই ফিল্মটির খবর কেউ রাখেনি। নেপোটিজমের বিতর্কের ভিড়ে এই ফিল্মটি যাতে হাড়িয়ে না যায়, এই আশাই রইলো।