‘সীতারে জমিন পর’ ট্রেইলার মুক্তি পাওয়ার পর সোশ্যাল মিডিয়া দুটি দলে ভাগ হয়ে যায়। একটি দল আমির খানের ব্যক্তিগত জীবন কে টেনে এনে তার এই সিনেমাটি কে বয়কট করার প্রস্তাব রাখেন, আর আরেকটি দল, এই ফিল্মটির বিষয়বস্তু দেখে, বেশ প্রভাবিত হয়ে।
চক্রযুদ্ধ ঘোষ – সাংবাদিক -সালটি ছিল ২০২০। আমির খানের টার্কি দেশে গিয়ে সেই দেশের প্রেসিডেন্টের সাথে কিছু ছবি তোলা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে ওঠে তুমুল ঝড়। ২০২২ সালে ‘লাল সিংহ চড্ডা ‘ মুক্তি পায়। বক্স অফিসে ফিল্মটি মুখ থুবড়ে পরে। এর কারণে আমির খানের টার্কি দেশে তোলা ছবি? না ছবিটির গুণগত মান? আজ অব্দি ঠিক যে বোঝা যায়নি। অনেকে বলে দুটি সমান কারণ, আর বাদবাকি মানুষ বলে যে কারণ টি হলো তার অতীতে করা কিছু রাজনৈতিক উক্তি। ১৩ই মে, সীতারে জমিনের ট্রেইলার আসার পর শুরু হয়ে সেই পুরোনো জল্পনা আর অনেকে বলছে এবারো হতে পারে তার সিনেমা ‘ফ্লপ’। একটু বিস্তারে আলোচনা করা যাক।
ট্রেইলার টি শুরু হয়ে বেশ মনোগ্রহী ভাবে। আমিরের চরিত্র টি ‘ড্রিংক এন্ড ড্রাইভ’ করে আইনি মামলায় ফেসে, একটি গুরু দায়িত্বের সম্মুখীন হন। তাকে কিছু বৈদ্ধিক অক্ষমতার সাথে লড়াই করা মানুষদের কে নিয়ে একটি বাস্কেটবল টিমের কোচের দায়িত্ব দেওয়া হয়ে। তারপর সে শুরু করে তাদেরকে ট্রেন করা এবং একের পর এক কঠিন চ্যালেঞ্জের সাথে লড়াই করা। পুরো ট্রেইলার জুড়ে রয়েছে কিছু সুন্দর হাসির মুহূর্ত। এর সাথে রয়েছে কিছু আবেগপ্রবণ মুহূর্ত। সব মিলিয়ে এটি হয়েছে একটি বেশ ভালো ট্রেইলার।
ট্রেইলার একটি দৃশ্যে আমরা দেখি একটি down syndrome- এ আক্রান্ত মেয়ে, যখন টিমে অংশগ্রহণ করে, তখন আমির জিজ্ঞেস করে “ইনি মহিলা কিনা?” তার উত্তরে মেয়েটি বলে “ইনি কি অন্ধ?” আরেকটি দৃশ্যে আমরা দেখি আমিরের চরিত্র টি অভিযোগ করছে যে কেন সে “পাগল” কে “পাগল” বলতে পারবেন না? উত্তরে তার মা বলে “টিঙ্গু” কে “টিঙ্গু” বলা যাবে না? এইসব দৃশ্য হাশি পেলেও এগুলো কিন্তু এই ফিল্মটির আধুনিক যুগের অনেক গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরেছে। একটি কমার্শিয়াল সিনেমায় এইসব বিষয়, এইসব চরিত্রগুলির প্রতিনিধিত্ব কিন্তু বেশ আকর্ষণীয়। বেশ অনেকদিন পর বলিউডে কামব্যাক করছেন জেনেলিয়া ডি সুজা। তাকেও প্রভাবশালী চরিত্রে দেখা যেতে পারে।
অন্যদিকে কিছু মানুষ দিনের পর দিন সোশ্যাল মিডিয়া তে তার নামে কাঁদা ছুড়ে চলেছে, এবং তার ফিল্ম যে দেখবে তাকেও anti-national ঘোষণা করে দিচ্ছে। কিছু মানুষ আমিরের অভিনয় নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। তার তাকানোর ভঙ্গি এবং বাচনভঙ্গি নিয়ে সমালোচনা করছে। অনেকে আবার বলছে যে সিনেমাটির অভিনেতারা, যারা নিজেদের ব্যক্তিগত জীবনেও বৈদ্ধিক অক্ষমতার শিকার, তাদের কে অভিনয়ের সুযোগ দেওয়া হয়েছে, সেটি বেশ প্রশংসাণীয়। ঠিক কি হবে এই ফিল্ম টির পরিণতি? সময় বলবে! অপেক্ষা রইলো মুক্তির!