উত্তরপ্রদেশের বারাণসী থেকে গ্রেফতার করা হল তুফাইল নামে এক তরুণকে। দিল্লির সিলামপুর থেকেও আরও এক পাক চরকে গ্রেফতার করে উত্তরপ্রদেশ এটিএস (ATS)। মহম্মদ হারুন নামে ওই ব্যক্তিও পাক গুপ্তচর বলে জানা গেছে।
সঞ্জনা লাহিড়ী, সাংবাদিক- পহেলগাঁও হামলা বা অপারেশন সিঁদুরের পর একের পর এক পাক গুপ্তচর গ্রেফতার হয়েই চলেছে। আবারও গ্রেফতার ২ পাকিস্তানি গুপ্তচর। উত্তরপ্রদেশের অ্যান্টি টেরিরিজম স্কোয়াডের হাতে গ্রেফতার ২ পাকিস্তানি গুপ্তচর। ইতিমধ্যেই জ্যোতি মালহোত্রার গ্রেফতারি নিয়ে দেশজুড়ে হইচই পড়ে গেছে। প্রায় প্রতিদিনই একের পর এক পাক গুপ্তচরকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। উত্তরপ্রদেশের বারাণসী থেকে গ্রেফতার করা হল তুফাইল নামে এক তরুণকে। দিল্লির সিলামপুর থেকেও আরও এক পাক চরকে গ্রেফতার করে উত্তরপ্রদেশ এটিএস (ATS)। মহম্মদ হারুন নামে ওই ব্যক্তিও পাক গুপ্তচর বলে জানা গেছে। বারাণসীর বাসিন্দা তুফাইলের সঙ্গে পাক সেনাবাহিনীর এক জওয়ানের স্ত্রীয়ের যোগাযোগ ছিল বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিষয়ক নানান তথ্য সে তুলে দেয় নাফিসা নামে ওই মহিলার হাতে। ইতিমধ্যেই সেই মহিলার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ আলাপের প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ। অভিযুক্তের মোবাইল সিম বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। নাফিসা ছাড়াও প্রায় ৬০০ পাকিস্তানি নাগরিকের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল তুফাইল। বারাণসীর রাজঘাট, নমো ঘাট, জ্ঞানবাপী, বারাণসী রেল স্টেশন এমনকি দিল্লির বেশ কয়েকটি জায়গার ছবি পাঠায় ওই যুবক, তার মধ্যে অন্যতম হল লাল কেল্লার মতো সৌধ। বেশ কয়েকটি সন্দেহজনক হোয়াটসঅ্যাপ গ্ৰুপেও সক্রিয় ছিল অভিযুক্ত। পাকিস্তানের মৌলবাদী দল তেহরিক-ই-লাব্বাইক গোষ্ঠীর নেতা মৌলানা সাদ রিজভির ভিডিও এই সব গ্ৰুপে শেয়ার করতো বলে জানা যাচ্ছে।
অন্যদিকে ইউপি পুলিশের সন্ত্রাসদমন শাখা দিল্লির সিলামপুর থেকে গ্রেফতার করেছে মহম্মদ হারুন নামে আর এক পাকিস্তানের গুপ্তচরকে। দিল্লির পাকিস্তান দূতাবাসে নিযুক্ত এক আধিকারিকের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল হারুনের। মোজাম্মেল হোসেন নামে ওই আধিকারিককে ইতিমধ্যেই পার্সোনা নন গ্রাটা (persona non grata) বা অবাঞ্ছিত বলে ঘোষণা করেছে ভারত সরকার। বৃহস্পতিবারই তাকে ২৪ ঘন্টা সময় দেওয়া হয়েছে দেশ ছাড়ার জন্য। হারুনও তুফাইলের মতোই দেশের ভিতরের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য পাচার করেছে মোজাম্মেলকে। তারই নির্দেশে পাকিস্তানের ভিসা পাইয়ে দেওয়ার নামে বহু মানুষের থেকে টাকা নেওয়া হত এবং সেই টাকা চলে যেত মোজাম্মেলের বলে দেওয়া বিভিন্ন ব্যক্তির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। হারুনের ২ স্ত্রী, তার মধ্যে একজন পাকিস্তানের বাসিন্দা। তার সঙ্গে দেখা করতে প্রায়ই পাকিস্তান যেত হারুন। তাই পাকিস্তান যাওয়ার সূত্রেই মোজাম্মেলের সঙ্গে আলাপ হারুনের। পহেলগাঁওয়ের ঘটনার সময় সে পাকিস্তানে ছিল। ৫ই এপ্রিল পাকিস্তান যায়, ফেরে ২৫শে এপ্রিল। অপারেশন সিঁদুরের পর থেকেই সন্ত্রাস দমনে জিরো টলারেন্স নীতির ঘোষণা ভারতের। দেশের মধ্যেই রয়েছে বহু স্লিপার সেল। যারা ভিড়ে মিশে পাকিস্তানের গুপ্তচরবৃত্তি করে চলেছে বলে জানতে পেরেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। তাদের খুঁজে বের করার কাজই চলছে প্রতিনিয়ত।