নির্দেশের পর প্রায় দু’বছর কাটতে চললেও বেআইনি নির্মাণ নিয়ে টালবাহানা! এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারকে সশরীরে হাজিরার নির্দেশ
ষষ্ঠী চট্টোপাধ্যায়, সাংবাদিক- প্রায় দু’বছর কাটতে চললেও বেআইনি নির্মাণ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ কার্যকর না করায় এবার কলকাতা পুরসভার ৮ নম্বর বরোর এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারকে সশরীরে হাজিরার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। শুধু তাই নয় পুর আধিকারিকদের টালবাহানার জন্য রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা।
ঘটনা হল বালিগঞ্জ থানা এলাকার অন্তর্গত কলকাতা পুরসভার ৬৯ নম্বর ওয়ার্ডে শরৎ বোস রোডের মত অভিজাত এলাকায় একটি বেআইনি নির্মাণের অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছিল হাইকোর্টে। মামলাকারীর অভিযোগ ছিল, শরৎ বোস রোডে ২২ নম্বর প্রমিসেসটিকে বসবাসের জন্য নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হলেও আপাতত সেটিকে বাণিজ্যিক নির্মাণে রূপান্তরিত করা হয়েছে। ওই নির্মাণের গ্রাউন্ড ফ্লোরটিকে কার পার্কিং এরিয়া হিসেবে ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিল পুরসভা। কিন্তু সেটিকে দোকান ঘর হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। দ্বিতীয় থেকে চতুর্থ তল পর্যন্ত বসবাসের ফ্ল্যাট হিসেবে নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হলেও বর্তমানে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় তল অফিস ঘর হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। পাশাপাশি অনুমোদন ছাড়া আরও নির্মাণ হচ্ছে। এমনই অভিযোগ জানিয়ে ২০২৩ সালে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মামলাকারী। মামলা চলাকালীন পুরসভার তরফে জানানো হয় ইতিমধ্যেই নির্মাণকারীকে ৪০১ ধারায় নোটিশ দেওয়া হয়েছে। যার প্রেক্ষিতে বিচারপতি সিনহার নির্দেশ ছিল, পুরসভা ইতোমধ্যেই যেহেতু বেআইনি নির্মাণ চিহ্নিত করে নোটিশ পাঠিয়েছে তাই ১২ সপ্তাহের মধ্যে সব পক্ষের বক্তব্য শুনে ওই বেআইনি নির্মাণ নিয়ে এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারকে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কিন্তু অভিযোগ নির্দেশের পর বহুদিন কেটে গেলেও কোন ব্যবস্থা নেয়নি পুরসভা। যার জেরে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের হয়।
সেই মামলায় এবার পুরসভার তরফে জানানো হয়, বসবাসের জন্য নির্মিত ওই নির্মাণটি ব্যবসায়িক নির্মাণে রূপান্তরের অনুমতি দিয়েছে পুরসভার স্পেশাল অফিসার। এজন্য নির্মাণকারী প্রয়োজনীয় অর্থ বা জরিমানা জমা দিয়েছেন। তবে স্পেশাল অফিসারের এই সিদ্ধান্ত মেয়র ইন কাউন্সিলের কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। এরপরই বিচারপতি সিনহা, মেয়র ইন কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত হাইকোর্টে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু সেই নির্দেশও কার্যকর করেনি পুরসভা। যার জেরে রীতিমতো ক্ষুব্ধ বিচারপতি আপাতত ৮ নম্বর বরোর এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সোমনাথ বড়ালকে সশরীরে আদালতে হাজির হয়ে নির্দেশ কার্যকর না করার কারণ জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন। ১২ জুন মামলার শুনানি।