ভারতের স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে একাধিক পণ্যের আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্র সরকার। ভারতের এই সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়লেও এপার বাংলার ব্যবসায়ীরা কিন্তু ভারতের সিদ্ধান্তে নিজেদের সম্মতির কথা জানালেন।
বিশ্বজিৎ দেবনাথ, নদীয়া- বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ও ভারত বিদ্বেষ শুরু হওয়ার পর থেকে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার সম্পর্কে শীতলতা এসেছে যথেষ্ট। এই অবস্থায় পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার ঘটনার পর পাকিস্তানের বিপক্ষে একের পর এক ব্যবস্থা নেওয়ার মাঝেই বাংলাদেশের বিরুদ্ধেও এক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র সরকার। ভারতের স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশী পণ্যের আমদানি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের প্রভাব বেশ ভালোভাবেই পড়েছে এরাজ্যের সীমান্ত বানিজ্যে। নদীয়ার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও উল্লেখযোগ্য বর্ডার হলো গেদে। এই গেদে সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন প্রচুর মানুষ এপার থেকে ওপারে যেতেন বা ওপার থেকে এপারে আসতেন, পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে চলতো ব্যবসা। প্রতিদিন পণ্যবাহী গাড়ি, মালগাড়ি, ট্রেন ও পায়ে হেঁটেও ভারত বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াত ছিল অনেক মানুষের। বর্তমানে তা অনেকটাই স্থিমিত। তবে সরকারের সিদ্ধান্তে ব্যবসায় কিছুটা ক্ষতি হলেও গেদে সীমান্তের বেশ কিছু স্থানীয় ব্যবসায়ী সরকারের এই সিদ্ধান্তে পূর্ণ সহমত পোষণ করলেন।
নদীয়ার গেদে সীমান্তের মতো, চ্যাংড়াবান্ধা, ফুলবাড়ী বা অন্যান্য স্থলসীমান্ত দিয়েও বাণিজ্যে বেশ কিছুটা টান এসেছে। ভারত সরকারের নির্দেশমতো এখন আর এইসব স্থল সীমান্তগুলো দিয়ে বাংলাদেশের রেডিমেড পোশাক, সুতো, কাঠের আসবাব, ফল ও ফলের স্বাদযুক্ত কার্বনেটেড পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাবার, তুলো, প্লাস্টিকজাত পণ্য প্রকৃতি আমদানি বন্ধ হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি মেঘালয় আসাম ত্রিপুরা বা মিজোরামের স্থল বন্দর দিয়েও এইসব বাংলাদেশী পণ্য এখন ভারতে প্রবেশ করতে পারছে না। জিটিআরআই এর পরিসংখ্যান বলছে, ভারতীয় মুদ্রায় এই সমস্ত পণ্যের বার্ষিক আমদানির মোট মূল্য সাড়ে ছ’হাজার কোটি টাকারও বেশি। এইসব পণ্য এখন ভারতে রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের কাছে একমাত্র পথ হল জলপথ বা বিমানে করে পাঠানো। আর এই দুই ক্ষেত্রেই বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের রপ্তানীর খরচ বেড়ে যাবে অনেক গুণ বেশি। ফলে বাংলাদেশ এখন যে বেশ বড়সড়ো আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন তা বলাই যায়।