ইচ্ছে ছিল সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে নিজেদের দাবি ও সমস্যার কথা জানাবেন। তাই বৃহস্পতিবার সকাল সকাল কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীরা বাড়ীর কাছে পৌঁছে যান চাকরিহারা ৬ জন যোগ্য শিক্ষকর একটি দল। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর সঙৃগে দেখা করার বৈধ অনুমতি না থাকায় সেই ৬ জন কে আটক করে কালীঘাট থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
নাজিয়া রহমান সাংবাদিক
৬ থেকে ৭ বছর সসম্মানে চাকরি করার পর সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরি হারিয়েছেন প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মী। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে আবার নতুন করে এসএসসি- কে নিয়োগ করতে হবে। ৩১শে ডিসেম্বরের মধ্যেই সে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে হবে। আর সেই নিয়োগ প্রক্রিয়ার জন্য ৩১ মে-র মধ্যে বিজ্ঞপ্তি জারি করতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণায় নারাজ চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকারা। তাঁদের প্রশ্ন এত বছর টানা কাজ করার পর কিভাবে আবার একই চাকরির জন্য দ্বিতীয়বার পরীক্ষায় বসবেন? এই নিয়ে তাঁরা সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার জন্য বৃহষ্পতিবার কালীঘাটে যান ৬ জন চাকরিহারা শিক্ষিকা। ইচ্ছে ছিল সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী সামনে তাঁরা তাঁদের বক্তব্য পেশ করবেন। কিন্তু বৈধ অনুমতি পত্র না থাকায় ৬ জন চাকরিহারা শিক্ষিকাকে আটক করে কালীঘাট থানার পুলিশ। আটক করে তাঁদের কালীঘাট থানায় নিয়ে গিয়ে বসিয়ে রাখা হয়। ছয় চাকরিহারা শিক্ষিকার নাম সঙ্গীতা সাহা, রূপা কর্মকার, স্মার্তি রায়, নুর আমিনা গুলশন, শিল্পী চক্রবর্তী এবং সাহানি নাজনিন। কেন তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ী এসেছেন? প্রশ্নের উত্তরে চাকরিহারা তাঁরা জানান ‘‘আমরা কোনও আন্দোলন বা বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে আসিনি। আমরা জানতে এসেছিলাম, এতবছর ধরে সম্মানের সঙ্গে চাকরি করার পরেও পরীক্ষা দেওয়া কী ভাবে সম্ভব?’’ কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ীর সামনে আসতেই ৬ জন চাকরিহারা প্রতিনিধিদের কাছে বৈধ কোনও অনুমতি পত্র না থাকায় তাঁদের আটক করে পুলিশ।
সরকারের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পুনর্বিবেচনা চেয়ে রিভিউ পিটিশন করা হয়েছে। যদিও মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী চাকরিহারাদের কাছে পরীক্ষা দেওয়ার আবেদন জানান। মুখ্যমন্ত্রী এভাবে পরীক্ষায় বসার আবেদন জানানই অসন্তুষ্ট চাকরিহারারা। তাঁদের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী নেতাজি ইন্ডোরে যে কথা বলেছেন সেই কথার সঙ্গে এখনকার কথার কোনও মিল নেই। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, “‘‘রিভিউ পিটিশনের পথও খোলা থাকছে। সেই আবেদনের ফলাফল ইতিবাচক হলে তা-ই মানবে সরকার। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের বেঁধে দেওয়া সময়সীমার মধ্যে পরীক্ষার প্রস্তুতি আর একটি রাস্তা। গরমের ছুটির পরে রিভিউ পিটিশন ফের সুপ্রিম কোর্টে উঠবে। আমরা চেষ্টা করব যাতে চাকরিরত শিক্ষকদের আর পরীক্ষায় বসতে না হয়।’’ চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষক শিক্ষিকাদের বক্তব্য, সরকার রিভিউ পিটিশনকেই আগ্রাধিকার দিক। আর তাই বৃহস্পতিবার চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষিকাদের ৬ জন প্রতিনিধি কালীঘাট যান।
অন্যদিকে চাকরিহারাদের একাংশ বৃহস্পতিবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছে।সেই চিঠি গ্রহন করেছে মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর। চাকরিহারাদের আবেদন যেন সরকার চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষক শিক্ষিকাদের চাকরি পুরনো জায়গাতেই যেন বজায় রাখে। এই আর্জি জানিয়ে এদিন চাকরিহারাদের চারজন প্রতিনিধি নবান্নে আসেন। তাঁদের দেওয়া চিঠি গ্রহন করেছেন মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরের আধিকারিকরা।