নিরাপত্তাবাহিনীর তল্লাশি অভিযানে ঝাড়খণ্ডের লাতেহার জেলার পালামৌয়ের জঙ্গলে হত্যা করা হয় সিপিআই (CPI)-এর শীর্ষ স্থানীয় এক নেতাকে। মাওবাদী কমান্ডার মনীশ যাদবের মাথার দাম ছিল ৫ লক্ষ টাকা। আরও এক মাও নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কুন্দন খারওয়ার নামে ওই মাওবাদীর মাথার দাম ছিল ১০ লক্ষ টাকা।
সঞ্জনা লাহিড়ী, সাংবাদিক- মাওবাদী নিকেশ অপারেশন চলছে। মাওবাদী মুক্ত ভারত হবে, এই ঘোষণা আগেই হয়েছে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে। সেই লক্ষ্যেই আরও এক ধাপ এগোলো ঝাড়খণ্ডের নিরাপত্তাবাহিনী। নিরাপত্তাবাহিনীর তল্লাশি অভিযানে ঝাড়খণ্ডের লাতেহার জেলার পালামৌয়ের জঙ্গলে হত্যা করা হয় সিপিআই (CPI)-এর শীর্ষ স্থানীয় এক নেতাকে। মাওবাদী কমান্ডার মনীশ যাদবের মাথার দাম ছিল ৫ লক্ষ টাকা। আরও এক মাও নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কুন্দন খারওয়ার নামে ওই মাওবাদীর মাথার দাম ছিল ১০ লক্ষ টাকা। রবিবার রাতে গুলির লড়াইয়ে মৃত্যু হয় মনীশ যাদবের। সোমবার এই তথ্য প্রকাশ্যে আনে পালামৌয়ের ডিআইজি।
তিনি বলেন, রবিবার রাতে এই অভিযান চলে মহুয়াদাড় থানা এলাকায়। দৌনার জঙ্গল ঘেরা অঞ্চলে মাওবাদীরা লুকিয়ে রয়েছে, এই খবর আসে পুলিশের কাছে। খবর পেয়ে গোটা এলাকা ঘিরে শুরু হয় তল্লাশি অভিযান। পালানোর জায়গা না পেয়ে কোণঠাসা হয়ে যায় মাওবাদীদের দলটি। এরপরেই নিরাপত্তাবাহিনীকে লক্ষ্য করে গুলি চালাতে শুরু করে মাওবাদীরা। পাল্টা জবাব দেয় বাহিনীও। দীর্ঘক্ষণ ২ পক্ষের মধ্যে চলে গুলির লড়াই। এই গুলির লড়াইয়ে মৃত্যু হয় মণীশ যাদবের। এরপরেই কুন্দন খারওয়ারকে গ্রেফতার করে নিরাপত্তাবাহিনী। এই নিয়ে গত ৩ দিনে ঝাড়খণ্ডে মৃত্যু হল ৩ শীর্ষ মাওবাদী নেতার। এই তালিকায় রয়েছে মাওবাদী নেতা পাপ্পু লোহরা। ঝাড়খণ্ডের জনমুক্তি পরিষদের প্রধান ছিল পাপ্পু। তার মাথার দাম ছিল ১০ লক্ষ টাকা। ঝাড়খণ্ডের পাশাপাশি নকশালীদের খতম করতে ছত্তিশগড়েও চলছে জোরকদমে অভিযান। ২০২৬ সালের মার্চ মাসের মধ্যে মাওবাদীমুক্ত ভারত তৈরির বার্তা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এরপর থেকেই ছত্তিশগড়, ঝাড়খণ্ডের মতো মাও অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে মাওবিরোধী অভিযান ব্যাপক জোরদার হয়েছে।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা যাচ্ছে, বর্তমানে ছত্তিশগড় তেলেঙ্গানা সীমানাবর্তী কারেগুট্টা পাহাড়ি এলাকা মাওবাদীদের অন্যতম শক্তঘাঁটি। এই এলাকা থেকে মাওবাদের শিকড় উপড়ে ফেলতে প্রায় ৩ হাজার আধাসেনাকে মোতায়েন করা হয়েছে। ২১শে এপ্রিল থেকে ওই অঞ্চলে অভিযান শুরু হয়েছে । এখনও পর্যন্ত সেই অভিযান চলছে। প্রায় ৩১ জনেরও বেশি মাওবাদীকে হত্যা করা হয়েছে। ছত্তিশগড়, মহারাষ্ট্র ও তেলেঙ্গানার সীমানা ঘেঁষা পাহাড় ও জঙ্গলে ঘাঁটি গেড়ে থাকা ১০০০ মাওবাদীকে ধরতে নামানো হয়েছে প্রায় ২০ হাজারের বেশি যৌথ বাহিনীকে। অভিযানে ইতিমধ্যেই খতম করা গেছে মাওবাদীদের সাধারণ সম্পাদক বাসবরাজুকে।