বৃহস্পতিবার সমস্ত জল্পনার অবসান ঘটিয়ে তৃণমূলের দলীয় পতাকা হাতে তুলে নিয়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন জন বার্লা। উপস্থিত ছিলেন সুব্রত বক্সী, অরূপ বিশ্বাস এবং জয়প্রকাশ মজুমদার।
ঋক পুরকায়স্থ, সাংবাদিক: সমস্ত জল্পনার অবসান ঘটিয়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন জন বার্লা। এর আগেও একাধিক সময়ে জন বার্লার অবস্থান নিয়ে জল্পনা দেখতে পাওয়া গিয়েছিল। লোকসভা নির্বাচনে টিকিট না পাওয়ার পর থেকেই পদ্ম শিবিরের সঙ্গে তার দূরত্ব বাড়তে শুরু করে। একাধিক সময়ে বিজেপির বিরুদ্ধে মুখ খুলতেও দেখা গিয়েছিল তাঁকে। এরপর ধীরে ধীরে তৃণমূলের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে। মুখ্যমন্ত্রীর আলিপুরদুয়ারের সভায় যোগ দেওয়ার জন্য দিল্লি থেকে তিনি চলে এসেছিলেন। এমনটাও দেখতে পাওয়া গিয়েছিল।
২৩ এপ্রিল জন বার্লার স্ত্রী প্রয়াত হয়েছিলেন কিডনি জনিত সমস্যার কারণে। রবিবার তার শ্রাদ্ধ শান্তির কাজ ছিল। সেখানে উপস্থিত বিজেপির একাধিক ছিলেন নেতৃত্ব। উপস্থিত ছিলেন সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিং তামাং, আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ মনোজ টিগ্গা, দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্তা, কুমারগ্রামের বিজেপি বিধায়ক মনোজ ওরাওঁ, কালচিনির বিজেপি বিধায়ক বিশাল লামা সহ জেলা স্তরের একাধিক নেতৃত্বরা। আর এর ফলেই জল্পনা উস্কে যায় রাজনৈতিক মহলে।
তৃণমূল যোগ দিয়ে তিনি বললেন, “এর আগেও আমার দিদির সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি আমাকে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। আমি যখন মন্ত্রী ছিলাম চা বাগানে কাজ করার সময় সব সময় বাধা পেয়েছি। ১৬০ কোটি টাকার একটা হাসপাতাল করতে চেয়েছিলাম। বর্তমান বিরোধী দলনেতা বিভিন্ন ভাবে কাজ করতে দেননি। কাজ করতে বাধা দেওয়া হয় বিজেপিতে। মানুষের জন্য কাজ করতে পারছিলাম না বিজেপিতে।”
তিনি আরো বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী আমাদের চা বাগানের জমির পাত্তা দিয়েছেন। আদিবাসীদের অধিকার বিজেপি দিচ্ছে না। সব কেড়ে নিচ্ছি। কিভাবে বিশ্বাস করব যে বিজেপি ক্ষমতায় আসলে কাজ করবে।”তার কথায় উঠে আসল সরকারের নানা প্রকল্পের কথা, “দিদি লক্ষী ভান্ডার করেছেন। যা আমাদের বহু চা বাগানের শ্রমিকদের অনেক উপকার দিচ্ছে। দুয়ারে সরকারের মধ্যে অনেকে সুবিধা পাচ্ছে। দিদি সবাইকে নিয়ে চলছে। কন্যাশ্রী সবাই পাচ্ছে। ১০০ দিনের কাজের টাকা কিভাবে আটকানো হয়েছে আমি বলব আগামী সময়ে। দিদি অনেক প্রকল্প আছে যেটা আমরা ঘরে ঘরে গিয়ে বলব। বিজেপির এমন কিছুই নেই। ২০১৪-র আগে বিজেপির পতাকা পোঁতার কেউ ছিল না। আমি বিজেপিকে চা বাগানে দাঁড় করিয়েছি। কিন্তু আমাদের আদিবাসীদের জন্য কিছু করেনি। বাজেটে কোনো দিনও চা বাগানের ইস্যু ওঠেনি। দিদি সবসময় আমাদের কথা ভাবেন। আমি মানুষের জন্য কাজ করতে চাই। দিদি আমাকে অনেকবার ফোন করেছিল। আমি বলেছি আমি আপনার সঙ্গে থেকে আমার জায়গায় কাজ করতে চাই। আগামী দিনে অনেক কিছু বলব।”
শুভেন্দু অধিকারী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “শুভেন্দু অধিকারী মানুষের মধ্যে বিভাজন করে মুখ্যমন্ত্রী হতে চান। আমাকে ফোন করেছিল আমি দেখা করিনি। কাদায় পাথর ছুঁড়লে আমার গায়েই কাদা লাগবে।”