মুখ্যমন্ত্রীকে খোলা চিঠি চাকরিহারা শিক্ষক শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীদের। চাকরির ভবিষ্যৎ কি তা একার স্পষ্ট করতে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চায় চাকরিহারারা। খোলা চিঠিতে রয়েছে সাক্ষাৎ করার আর্জি।
নাজিয়া রহমান, সাংবাদিক- মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ-এর আর্জি জানিয়ে খোলা চিঠি চাকরিহারা শিক্ষক -শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীদের তরফ থেকে। বিগত ১৪দিন ধরে বিকাশভবনের সামনে আন্দোলন করে চলেছেন চাকরিহারা শিক্ষক শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীদের একটা বড় অংশ। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে এপ্রিলের ৩ তারিখ ২০১৬ সালের এসএসসি-র প্যানেল বাতিল হয়েছে। যার ফলে এখন চাকরিহারা প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক – শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মী। সরকারের পক্ষ থেকে রিভিউ পিটিশন করা হয়েছে। কিন্তু কি তাঁদের চাকরির ভবিষ্যৎ? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে মরিয়া চাকরিহারা আন্দোলনকারীরা। তাই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার অনুমতি চেয়ে তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে খোলা চিঠি লিখলো।
এর আগে মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে যেগুলি জানতে চাওয়া হয়েছে সেগুলি হল,
সরকার আমাদের যোগ্য শিক্ষক শিক্ষিকা শিক্ষাকর্মী দের নিয়ে কি ভাবছে?
রিভিউ পিটিশনের এর গতি প্রকৃতি কি?
নতুন বিজ্ঞপ্তি নিয়ে সরকারের চিন্তাভাবনা কী?
রিভিউ খারিজ হয়ে গেলে সরকার পরীক্ষা ছাড়া আমাদের পুনঃনিয়োগ এর ব্যবস্থা কীভাবে করবে? পাশাপাশি বুধবার ২১তারিখ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁরা সাক্ষাৎ করতে চান, তারও আবেদন জানানো হয়েছে চিঠিতে।
মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্য লেখা খোলা চিঠিতে চাকরিহারাদের বক্তব্য, “আমরা এসএসসি ২০১৬ প্যানেলের যোগ্য চাকরিহারা শিক্ষক শিক্ষিকা এবং শিক্ষা কর্মীবৃন্দ। আমরা গত ৭ই মে থেকে বিকাশ ভবনের সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থানে আছি। আমাদের দাবি নতুন করে পরীক্ষা নয়।। আমরা রাজ্য সরকারের সংঘটিত দুর্নীতির শিকার হয়েছি। Omr Mirror Image copy প্রকাশ এবং তার ভিত্তিতে যোগ্য অযোগ্যের পৃথক করে প্রত্যেক যোগ্য এর চাকরি বাঁচাতে হবে। যাতে একজনও যোগ্য বঞ্চিত না হয়।।। আমরা বারবার আবেদন করেছি আমাদের সকলের প্রিয় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের সাথে আলোচনায় বসুক। কিন্তু তিনি কোনদিনই গুরুত্ব দেননি।।।
দেশের প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করে জানাতে চাই, যে পশ্চিমবাংলায় যোগ্য থেকে যোগ্যতম শিক্ষক শিক্ষিকা এবং শিক্ষা কর্মীদের দুঃখ ও দুর্দশার কথা।।।।। আমরা সেই কর্মসূচি ইতিমধ্যেই গ্রহণ করেছি।
এমতাবস্থায় আবারও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমাদের খোলা আহ্বান, আপনি আমাদের সাথে অনশনকারীদের সাথে, যোগ্য চাকরি হারাদের সঙ্গে অতিসত্বর বৈঠকে বসুন।।।। আমাদের একটাই বক্তব্য যেকোনো মূল্যে আমাদের যোগ্য চাকরি আমরা ফিরে চাই।
অন্যথায় চাকরি ফিরে পাওয়ার জন্য, আমরা যে কোন অংশের সাথে দেখা করা, যোগাযোগ রেখে কঠিন লড়াই ও সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের জন্য, কিংবা সর্বোচ্চ বলিদানের জন্য আমরা প্রস্তুত।” প্যানেল বাতিলের রায় ঘোষণার পর মুখ্যমন্ত্রী নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে চাকরিহারাদের সঙ্গে দেখা করেন। চাকরিহারাদের সমস্ত কথা শোনেন। সরকার চাকরিহারাদের পাশে আছে। মুখ্যমন্ত্রী সরকারের প্রতি আস্তা রাখতে বলেন চাকরিহারাদের। তারপর মধ্যশিক্ষা পর্ষদের এমএ আবেদনের ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্ট যোগ্য শিক্ষক শিক্ষিকাদের চাকরি চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বজায় থাকার নির্দেশ দেয়। কিন্তু পাশাপাশি এও নির্দেশ দেওয়া হয় ৩১ডিসেম্বরের মধ্যে এসএসসি-কে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। পুনরায় পরীক্ষায় বসতে নারাজ চাকরিহারারা। দাবি সরকারকে সসম্মানে চাকরি ফিরিয়ে দিতে হবে। সেই দাবিকে কেন্দ্র করে বিকাশ ভবনের সামনে চলছে তাঁদের আন্দোলন।