পাঠ্যবই-এর পাশাপাশি সামাজিকতার পাঠ দিতে বিশেষ উদ্যোগ কেরল সরকারের। নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হতেই প্রথমেই শিক্ষার্থীদের হাতে বই নয়। তাদের দেওয়া হবে সামাজিক পাঠ।
নাজিয়া রহমান, সাংবাদিক-শিক্ষাক্ষেত্রে নয়া উদ্যোগ নিল কেরল সরকার। পড়ুয়াদের পুঁথিগত বিদ্যার পাশাপাশি সামাজিক শিক্ষা বাড়াতে এবার বিশেষ ব্যবস্থা। নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হতেই প্রথমেই শিক্ষার্থীদের হাতে বই নয়। তাদের দেওয়া হবে সামাজিক পাঠ। শিক্ষাবর্ষের শুরুতে ১৪দিন ধরে এই পাঠ দেওয়া হবে শিক্ষার্থীদের। সম্প্রতি কেরল সরকারের তরফ থেকে জানানো হয় ২০২৫-২৬ সালের নয়া শিক্ষাবর্ষের শুরুতে শিক্ষার্থীদের হাতে প্রথমে বই না দিয়ে তাদের দেওয়া হবে সামাজিকতার পাঠ। একজন পড়ুয়ার কাছে এই সামাজিকতার পাঠ অত্যন্ত জরুরি। দেশের মধ্যে কেরলই প্রথম এই পাঠ দেওয়ার উদ্যোগ নিল।
কেরলের শিক্ষামন্ত্রী ভি শিবাকুট্টি জানান, যে এই ১৪ দিন ধরে পড়ুয়ারা সমাজের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানবে। যেমন, মাদক ব্যবহারে খারাপ দিক, সরকারি সম্পত্তি ক্ষয়ক্ষতি-সহ নানান বিষয় সম্পর্কে জানবে। মন্ত্রী এও বলেন, “এই দু’সপ্তাহ ধরে পড়ুয়ারা ধারাবাহিক পড়শোনার থেকে একটু অন্য ধরনের পড়শোনা করবে। তারা কোনও বই পত্র পড়বে না। বদলে সমাজের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে জ্ঞান সংগ্রহ করবে।”
কেরলের এই উদ্যোগ এক কথায় মনে পড়িয়ে দেয় ১৯৩০ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা “চার অধ্যায়” উপন্যাসের একটি লাইন। যেখানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন, ‘পড়তে হলে আগে সমাজকে জানতে হবে।’ কবিগুরুর সেই ভাবনা আজ বাস্তবায়িত করল কেরল সরকার। পড়ুয়াদের পাঠ্যবই পড়ার আগে তাই সেখানকার সরকার তাদের সামাজিক পাঠ দিতে উদ্যাগী হয়েছে। পড়ুয়াদের এই ধরনের পাঠ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়ার আগে পুলিশ প্রশাসন, শিশু ও নারী উন্নয়ন,আবগারী দপ্তর,শিশু সুরক্ষা কমিশন, রাজ্য শিক্ষা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ পরিষদ (এসসিইআরটি)সহ একাধিক দপ্তরের সঙ্গে আলোচনার পর কেরল সরকার এই সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছে। মূলত প্রথম থেকে দশম শ্রেণির পড়ুয়াদের এই শিক্ষা দেওয়া হবে। ২জুন থেকে শুরু হবে এই প্রশিক্ষণ। ১৪দিন ধরে এই শিবির চলবে। তবে উঁচু ক্লাসের পড়ুয়াদেরও দেওয়া হবে এই প্রশিক্ষণ। তবে তাদের এক সপ্তাহ হবে এই শিবির। পড়ুয়াদের জন্য এই উদ্যোগে খুব ভাবে বলে মত শিক্ষকমহলের একাংশের।