প্রতি বছর বর্ষাকালে শহরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। বিগত কয়েক বছরে এমন অনেক দুর্ঘটনাই ঘটেছে। এবার সেই বিপদ এড়াতে নতুন পদক্ষেপ নিচ্ছে কলকাতা পুরসভা। পুরসভার তরফে রাস্তার বাতিস্তম্ভগুলি ঢাকার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে, বাতিস্তম্ভগুলিতে বসানো হবে পিভিসি রবার শিট।
ষষ্ঠী চট্টোপাধ্যায়, সাংবাদিক- শহর কলকাতার এমন অনেক বাতিস্তম্ভ রয়েছে যেগুলি সারা বছর বিপজ্জনকভাবে খোলা অবস্থায় পরে থাকে। বর্ষার সময় সেই বাতিস্তম্ভগুলিই জলমগ্ন হয়ে পড়ায় খোলা তারের সংস্পর্শে আসার আশঙ্কা থাকে। সেই বিপদ এড়াতে এবার এগুলিকে সাত ফুট উচ্চতা পর্যন্ত ঢেকে দেওয়া হবে পিভিসি শিট দিয়ে, যা কার্যকর বিদ্যুৎ নিরোধক হিসেবেই পরিচিত। পুরসভার বিদ্যুৎ ও আলো বিভাগের এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, ১৫ মে থেকে এই কাজ শুরু হবে এবং দ্রুতগতিতে সারা শহরে ছড়িয়ে দেওয়া হবে প্রকল্পটি। বেশি জল জমে এমন এলাকাগুলিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য, বর্ষা আসার আগেই যত বেশি সম্ভব বাতিস্তম্ভ ঢেকে ফেলা, যাতে কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে।’
গত বছরের আগস্টে ভবানীপুরের জাস্টিস দ্বারকানাথ রোডে এক স্থানীয় বিক্রেতা জলমগ্ন রাস্তায় খোলা তারে পা দেওয়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান। সেই মর্মান্তিক ঘটনার পরই পুরসভা এই উদ্যোগ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। বিদ্যুৎবিভাগ জানিয়েছে, ৩ লক্ষ ল্যাম্পপোস্ট এই প্রকল্পের আওতায় আনা হবে এবং এই প্রকল্পের সম্ভাব্য খরচ ১৮ কোটি টাকা। প্রতিটি বাতিস্তম্ভ ঢাকতে গড়ে খরচ পড়বে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা।
শুধু বাতিস্তম্ভ নয়, সঙ্গে সঙ্গে রাস্তার সংযোগ বাক্স বা ‘জাংশন বক্স’ও তিন ফুট উচ্চতায় তোলা হবে যাতে ভারী বৃষ্টিতে সেগুলি জলমগ্ন না হয়। বিশেষজ্ঞরা এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁদের মতে, শহরের বিদ্যুৎ ব্যবস্থার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এটি অত্যন্ত জরুরি পদক্ষেপ। তবে প্রকৃত পরীক্ষাটা হবে বর্ষার সময়। যখন শহর জলে ভাসতে শুরু করবে, তখনই বোঝা যাবে এই পদক্ষেপ কতটা কার্যকর হলো।