এক অনন্য কীর্তি গড়লেন সোনারপুরের সোনালী চট্টোপাধ্যায়। ছেলের সঙ্গে ট্রেক করে পৌঁছে গেলেন এভারেস্ট বেস ক্যাম্পে। নিজের স্বপ্ন পূরণে বয়স বা পেশা যে কোনো বাঁধা সৃষ্টি করতে পারে না, সোনালী দেবী তার এক উজ্জ্বল উদাহরণ।
বিশ্বজিৎ নস্কর, দক্ষিণ ২৪ পরগণা- সোনারপুরের হরিনাভির বাসিন্দা সোনালী চট্টোপাধ্যায় পেশায় গৃহশিক্ষিকা। গৃহশিক্ষকতা করার পাশাপাশি তাঁর নেশা ট্রেকিং। আর এই নেশায় তাঁর যোগ্য সহযোগী হলেন তাঁরই ছেলে সাত্যকি (চট্টোপাধ্যায়)। এবার সেই ছেলের হাত ধরেই সোনালী দেবী করে ফেললেন এক অসাধ্যসাধন। দুঃসাহসিক এক ট্রেকিং অ্যাডভেঞ্চারে পৌঁছে গেলেন এভারেস্ট বেস ক্যাম্পে। রুপকথার মতো এই গল্পের শুরু ২০১৮ সালে। সেই বছর মা-ছেলে প্রথম সফল ট্রেক করেন সান্দাখফু। এরপর একে একে ২০১৯ সালে কেদারকন্ঠ, ২০২০-তে পঞ্চকেদার, ২০২১-এ পাঙ্গাচুলা, ২০২৩-এ ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্স ও হেমকুন্ড সাহিব, ২০২৪-এ অন্নপূর্ণা সার্কিট। অর্থাৎ গত আট বছরে মোট আটটি সফল ট্রেক সম্পন্ন করেছেন হরিনাভির এই অসম সাহসী মহিলা।
ছোটোবেলায় ভুগোল বইতে এভারেস্ট, কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখে পাহাড়ের প্রতি তীব্র আকর্ষণ ও ভালোবাসা জন্মায় সোনালী দেবীর। কিন্তু পড়াশোনা, সংসার, ছেলে মানুষ করা থেকে শুরু করে গৃহশিক্ষকতা করা, এসবরে ফলে আর নিজের ভালোবাসা বা নেশাকে দমিয়ে রাখতে হচ্ছিলো। কিন্তু মায়ের নেশা যখন ছেলের মধ্যে তাড়িত হয়, তখন বোধহয় মা-ও অজান্তে তাঁর নিজের নেশাকে ফিরে পান। তাই তো ছেলেকেই গাইড মেনে, তার(ছেলে) ও ছেলের এক বন্ধুর সঙ্গে বেড়িয়ে পড়েন এভারেস্টের উদ্দ্যেশে। এপ্রিল মাসের ১২ তারিখ যাত্রা শুরু করে পৌঁছান রক্সৌল। সেখান থেকে কাঠমান্ডু হয়ে যান সালেরি। সালেরি থেকে সুরখ পৌঁছে সেখান থেকেই শুরু হয় তাঁদের ট্রেকিং। আটদিন ধরে পাথুরে পথ আর শ্বাসরোধ করা হিমালয়ে ঠান্ডা পেরিয়ে পৌঁছান এভারেস্ট বেস ক্যাম্পে। সেখান থেকে আবার কালাপাথর অভিযান সম্পূর্ণ করে ফেরার পথ ধরেন সোনালী দেবীরা। আট বছরে আট টি সফল অভিযানের অভিজ্ঞতা নিয়ে সোনারপুরের ‘সোনালী’ (চট্টোপাধ্যায়) তৈরি হচ্ছেন তাঁর পরবর্তী আরও কোনো বড় অভিযানের জন্য।