মঙ্গলবার মধ্যরাতে মাত্র ২৫ মিনিটের অভিযানে পাকিস্তানের নয় টি জায়গার ২১ টি জঙ্গি আস্তানা ধুলোয় মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারপর থেকেই আতঙ্কে কাঁপছে উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম পাকিস্তানের প্রতিটি এলাকা। সেই আতঙ্কের রেশের মধ্যেই একের পর এক বিস্ফোরণের শব্দে বৃহস্পতিবার ভোর রাতে রাস্তায় নেমে এসেছে লাহোর ও গুজরাণওয়ালার আমজনতা।
সঞ্জু সুর, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ- স্থানীয় পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ও বেশকিছু পাকিস্তানি সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে বুধবার সকাল থেকে যে খবর খুব ভাইরাল হয়েছে তা হলো একের পর এক বিষ্ফোরণে কেঁপে উঠেছে লাহোর। খবরে প্রকাশ এদিন ভোর রাতের দিকে লাহোরের ওয়ালটন বিমানবন্দরের খুব কাছে গোপাল নগর ও নাজিরাবাদ এলাকার বেশ কিছু জায়গায় একাধিক বিষ্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। যে ভিডিও ভাইরাল হয়েছে তাতে দেখা গিয়েছে আস্কারি ৫ বা নাভাল কলেজ এলাকার আকাশ কালো ধোঁয়ায় ঢেকে গিয়েছে। লাহোর সিটি প্রশাসন সূত্রের খবর, তিন থেকে চারটি ভারতীয় ড্রোন লাহোরের আকাশে খুব নিচু দিয়ে উড়ে যাচ্ছিলো। ড্রোন গুলো দিয়ে সম্ভবতঃ লুকিয়ে ছবি তোলার কাজ করা হচ্ছিল। পাক প্রশাসন ড্রোন গুলোকে লোকেট করে এবং ড্রোন গুলোর সিস্টেম লক করে গুলি করে নামানোর চেষ্টা করে। সেই সময়েই ড্রোন গুলো ব্লাস্ট করে। মনে করা হচ্ছে ড্রোন গুলোতে সম্ভবতঃ সাধারণ মানের (low intensity explosives) কিছু বিষ্ফোরক লাগানো ছিলো যাতে ড্রোন গুলো শত্রুপক্ষের কেউ বা অন্যকেউ গুলি করে নামাতে গেলে বা নিজেদের দখলে নিতে গেলে, নিজেরাই ফেঁটে গিয়ে সমস্ত তথ্য সহ নষ্ট হয়ে যায়। এক্ষেত্রেও তেমনই ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছিলো বলে মনে করা হচ্ছে। ড্রোনগুলো যে ভারতের, পাক প্রশাসনের পক্ষ থেকে সরকারিভাবে এমন কথা এখনও জানানো হয় নি, আবার ভারতের পক্ষ থেকেও এটা বলা হয় নি যে ড্রোন গুলো ভারত পাঠিয়েছে। ফলে ড্রোন গুলো কাদের এবং কেন লাহোরের আকাশে সেগুলো ঘুরছিলো, সেটা এখনো নিশ্চিত নয়।
তবে এদিনের ভোরের এই ঘটনায় পাকিস্তানের আম জনতার কোনো জান মালের ক্ষতি না হলেও, তারা যে চূড়ান্ত আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে তা সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে তাদের কথা বলার সময়ই বোঝা যাচ্ছে। একটি পাকিস্তানি টিভি চ্যানেলকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় এক প্রত্যক্ষদর্শীর বক্তব্য, “গতকাল কি হয়েছে (Operation Sindoor) হয়েছে আমরা দেখেছি। আজ এইভাবে লাহোরের মতো শহরে বিষ্ফোরণ হয়েছে। পাক সেনার বিরুদ্ধে তোপ দেগে তার অভিযোগ কিভাবে ভারতের ড্রোন এত দুরে চলে এলো ? কি করছিলো পাক সেনা। ওয়াঘা (পাঞ্জাবে ভারত-পাক বর্ডার) থেকে ২৪/২৫ কিঃমিঃ উড়ে এতদূরে চলে এলো আর পাক সেনা টের পর্যন্ত পেলো না ?” স্থানীয় লাহোর বাসী যখন এই প্রশ্ন করছেন তখন ভারত সীমানা থেকে প্রায় ৭০/৭৫ কিঃমিঃ দূরে অবস্থিত পাকিস্তানের আরেকটি শহর গুজরাণওয়ালা শহরেও গত রাতে দুটি বিষ্ফোরণের শব্দ শোনা গিয়েছে।