অনেক চেষ্টা করার পর যুযুধান দুই দেশকে রাজি করানো গিয়েছিলো যাতে একে অপরের সঙ্গে অন্ততঃ কথা বলে, আলাপ আলোচনা করে। দুই দেশের মধ্যে চলা যুদ্ধ বন্ধের জন্য যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারতো। কিন্তু দুই দেশের অনমনীয় মনোভাবের ফলে ভেস্তে গেলো এই শান্তি আলোচনা। দুই দেশই জানিয়ে দিয়েছে যুদ্ধ যেমন চলছে, চলবে। তবে নাকের বদলে নরুণের মতো দুই দেশ বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তি তে সহমত হয়েছে, যা কিছুটা হলেও আশার আলো দেখাচ্ছে।
সঞ্জু সুর, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ- ২০২২ থেকে চলা যুদ্ধ থামার কোন লক্ষণ নেই। আমেরিকা, ফ্রান্স, ব্রিটেন, ভারত থেকে শুরু করে রাষ্ট্রসঙ্ঘ, প্রতিটা দেশ ই এই যুযুধান দুই দেশকে যুদ্ধ থামাতে বললেও, এখনও থামেনি যুদ্ধ। এই অবস্থায় দীর্ঘ তিন বছর পর অবশেষে আলোচনার টেবিলে বসতে সম্মত হয় রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিরা। যে সহমতের ভিত্তিতে শুক্রবার প্রথমবার ইস্তাম্বুলের মাটিতে হলো বৈঠক। বৈঠকে রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন অন্যতম মধ্যস্থতাকারী দেশ হিসাবে তুরস্কের প্রতিনিধিও। বৈঠক মঞ্চের ব্যাকড্রপে রাখা হয়েছিলো রাশিয়া, ইউক্রেন ও তুরস্কের পতাকা। কিন্তু এতকিছুর আয়োজন যে কারণে, সেই যুদ্ধবিরতির বিষয়ে শেষ পর্যন্ত কোনো সহমতে পৌঁছান গেলো না। যা নিয়ে একে অপরকে দোষারোপ করছে রাশিয়া ও ইউক্রেন।
সূত্রের খবর, বৈঠকে উপস্থিত তুরস্কের বিদেশমন্ত্রী হাকান ফিদেন দুই দেশকেই মনে করিয়ে দেন তাঁদের সামনে দুটো পথ খোলা রয়েছে। একটা হলো শান্তির পথ আর দ্বিতীয়টি হলো আরোও যুদ্ধ, আরও রক্তক্ষয়, আরও মৃত্যু। এই দুটো পথের মধ্যে একটা বেছে নিতে হবে রাশিয়া ও ইউক্রেন কে। যদিও তুরস্কের বিদেশমন্ত্রীর এই সাবধানবাণী কোনো কাজে এলো না। যুদ্ধবিরতি না হওয়ার কারণ হিসাবে বৈঠকে থাকা ইউক্রেনের এক প্রতিনিধি বলেন, ক্রেমলিন(রাশিয়া) এর অনমনীয় মনোভাব শুধু নয়, ক্রেমলিন বৈঠকে দাবি করে ইউক্রেনের নিজের সীমানা থেকেই নাকি সেনা সরাতে হবে। যা কিয়েভ(ইউক্রেন) এর পক্ষে কোনোমতেই মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।
যদিও যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা নস্যাৎ হয়ে গেলেও বৈঠক থেকে একটা সদর্থক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সিদ্ধান্ত হয়েছে দুই দেশ নিজেদের হাতে বন্দি থাকা অপর দেশের ১,০০০ জন বন্দি কে ছেড়ে দেবে। অনেকটা বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তির মতো এই কাজটি হবে। আপাতত যুদ্ধবিরতি না হলেও, শুক্রবারের বৈঠকের এই সিদ্ধান্ত অনেকটাই আশার আলো বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক মহল।