পহেলগাঁওয়ের ঘটনার পর এদেশে পাকিস্তানিদের ধরপাকড় চলছে পাকিস্তানে ফেরত পাঠানোর জন্য। এই পরিস্থিতিতে যে পাকিস্তানিরা নিখোঁজ তাদেরও খোঁজ চলছে। তেমনই খোঁজ চালানোর সময় চন্দননগরের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় ফতেমা বিবিকে।
সঞ্জনা লাহিড়ী, সাংবাদিক- দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে হুগলির চন্দননগরের কুঠির মাঠের বাসিন্দা ফতেমা বিবি। তাঁর স্বামী-সন্তানও রয়েছে। ১৯৮০ সালে পর্যটন ভিসা নিয়ে বাবার সঙ্গে পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডি থেকে ভারতে এসেছিলেন তিনি। ১৯৮২ সালে মুজফফর মল্লিক নামে এক বেকারি মালিকের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। দম্পতির ২ মেয়ে। তাঁদের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ১৯৮০ সালে আসার এক বছরের মাথায় ভিসা শেষ হওয়ার পর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন তিনি। পুলিশের খাতাতেও নিখোঁজ বলেই ঘোষিত তিনি। পহেলগাঁওয়ের ঘটনার পর এদেশে পাকিস্তানিদের ধরপাকড় চলছে পাকিস্তানে ফেরত পাঠানোর জন্য। এই পরিস্থিতিতে যে পাকিস্তানিরা নিখোঁজ তাদেরও খোঁজ চলছে। তেমনই খোঁজ চালানোর সময় চন্দননগরের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় ফতেমা বিবিকে। তার গ্রেফতারিতে হতবাক প্রতিবেশীরা। যদিও সমস্ত আইনি জটিলতা কাটিয়ে তার মুক্তির চান সবাই। ফতেমার পরিবারের দাবি পাকিস্তানে তাদের পরিবারের কেউ থাকেন না। সবাই ভারতে বর্তমানে। তবে তার স্বামী জানিয়েছেন, হুগলির নালিকুলে তার স্ত্রীর পূর্বপুরুষের বাড়ি। সেখানেই জন্ম ফতেমার। পরে কাজের সূত্রে তার বাবা পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডি যান। আশির দশকেই সেই দেশের পাঠ চুকিয়ে এদেশে ফিরে আসেন পরিবারের সবাই। মুজফফর আরও বলেন, তাঁর স্ত্রীয়ের ৬০ বছর বয়স। রোজ অনেকগুলো ওষুধ খেতে হয় তাকে। নিয়মিত ডাক্তার দেখাতে হয়। কয়েক দিনের মধ্যে হাঁটুতে অস্ত্রোপচারের কথা। ওকে যেন ছেড়ে দেওয়া হয়। চন্দননগর কর্পোরেশনের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার বর্তমানে ফতেমা। আধার, প্যান কার্ড আছে। ফতেমা অনেকদিন আগেই ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেছিলেন। এতোদিনেও সেই প্রক্রিয়া শেষ হয়নি। ফতেমার প্রতিবেশীরা তার স্বপক্ষেই কথা বলেছেন। তাঁদের মন্তব্য জঙ্গি হামলায় যারা অভিযুক্ত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক। সাধারণ মানুষের উপর এমন আক্রমণ যেন না হয়। যারা ৩০-৪০ বছর আগে এসেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে যারা সম্প্রতি এসেছে তাদের ব্যবস্থা নেওয়া হোক।