৩০ এপ্রিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ্ ইন্ডিয়া তাদের মনিটারি পলিসি মিটিংয়ে কমিয়েছে রেপো রেট। গত ফেব্রুয়ারি মাসেও রেপো রেট কমানো হয়েছিল। আরবিআইয়ের গভর্নর সঞ্জয় মালহোত্রা জানিয়েছেন রেপো রেট কমানো হল ২৫ বেসিস পয়েন্ট। ফেব্রুয়ারি মাসেও রেপো রেট ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমানো হয়েছিল। এখন তা ৬ শতাংশ করে দেওয়ায় ফিক্সড ডিপোজিটে সুদের হার আরও কমানোর রাস্তা করে দেওয়া হল । আরবিআই প্রতি দুমাস অন্তর মনিটরি পলিসি মিটিং করে থাকেন।
প্রবীর মুখার্জী, সাংবাদিক -ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক যখন রেপো রেট কমিয়ে দেয়, তখন বিভিন্ন নিউজ চ্যানেল বা সংবাদপত্রে ফলাও করে হেডলাইনে ওঠে বিষয়টি। কেন না হোম লোন বা কার লোনের ইএমআই বা কিস্তি স্বভাবতই কম হবে। এবছর দু-দুবার রেপো রেট কমিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। সত্যিই কি গ্রাহকদের তার জন্য সুরাহা হল। কমল কি তাদের ইএমআই। নিজেদের স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে অনেকেই ব্যাঙ্ক থেকে সহজ কিস্তিতে টাকা ধার বা লোন বা কর্জ নিয়ে থাকেন। লোন দেওয়া মানেই সংশ্লিষ্ট সেই গ্রাহকের ইএমআই চালু হয়ে গেল। এমন অনেক গ্রাহকই আছেন, যাদের জীবনভর লেগে যায় ইএমআই শোধ করতে। রেপো রেট কমালে গ্রাহকরা তার সুবিধা পাবেন, এটা স্বাভাবিক। কিন্তু, ব্যাঙ্কগুলির বিভিন্ন নিয়মাবলীর জন্য গ্রাহকরা তো সুবিধা পান ই না । উল্টে আরও জটিল হয়ে যায় প্রক্রিয়া। গোটা বিষয়টিই আলোচনা সাপেক্ষ। ৩০ এপ্রিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ্ ইন্ডিয়া তাদের মনিটারি পলিসি মিটিংয়ে কমিয়েছে রেপো রেট। গত ফেব্রুয়ারি মাসেও রেপো রেট কমানো হয়েছিল। আরবিআইয়ের গভর্নর সঞ্জয় মালহোত্রা জানিয়েছেন রেপো রেট কমানো হল ২৫ বেসিস পয়েন্ট। ফেব্রুয়ারি মাসেও রেপো রেট ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমানো হয়েছিল। এখন তা ৬ শতাংশ করে দেওয়ায় ফিক্সড ডিপোজিটে সুদের হার আরও কমানোর রাস্তা করে দেওয়া হল । আরবিআই প্রতি দুমাস অন্তর মনিটরি পলিসি মিটিং করে থাকেন। সেই হিসেবে একটি ফিনান্সিয়াল ইয়ারে মোট ৬ বার মনিটরি পলিসি মিটিং করে আরবিআই। গ্রাহকরাও অপক্ষা করে থাকে এই মিটিংয়ের জন্য। কারণ এই মিটিংয়েই সাধারণত রেপোট রেট বা রিভার্স রেট সংক্রান্ত ঘোষণা করে থাকে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক।
তবে প্রথমেই জেনে নিতে হবে রেপো রেট আসলে কী..। ব্যাঙ্কগুলির যখন টাকার প্রয়োজন হয় , তখন তারা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের দ্বারস্থ হয়। আরবিআই তাদের টাকা দেয় নির্দিষ্ট সুদের বিনিময়ে। যে হারে আরবিআই সুদ নিয়ে থাকে, তাকে বলা হয় রেপো রেট। এই বছরে দুবার মিলিয়ে মোট হাফ পার্সেন্ট রেপো রেট কমিয়েছে আরবিআই। এই রেপো রেট কমাতেই দেশের চারটি বড় সরকারি ব্যাঙ্ক তাদের ল্যান্ডিং রেটও কমিয়ে দিয়েছে। ফলে গ্রাহকদের হোম লোন বা কার লোন বা অন্যান্য লোনের ক্ষেত্রে কম হারে সুদ দিতে হবে। ব্যাঙ্কগুলি ০.৩৫ শতাংশ পর্যন্ত ল্যান্ডিং রেট কমানোর কথা জানিয়েছে। পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক, ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্ক, ব্যাঙ্ক অফ্ ইন্ডিয়া ও ইউকো ব্যাঙ্ক। কিন্তু, অন্যান্য বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলি তাদের এমসিএলআর বা মার্জিনাল কস্ট অফ্ ফান্ডস বেস্ড ল্যান্ডিং রেট কমানোর কথা জানায় নি। জানাবে অবশ্যই । তবে দেরি করে। ততদিন আগের হারেই কিস্তি বা ইএমআই দিয়ে যাবেন গ্রাহকরা। সোজা হিসেব যতদিন অধিক মুনাফা লাভ করা যায়। অর্থাৎ এই ধরনের ব্যাঙ্কগুলি কিন্তু, লোভী। এই ব্যাঙ্কগুলির গ্রাহকদেরই প্রাণ ওষ্ঠাগত। রেপো কমলেও তার সুবিধা পান না এই গ্রাহকরা। এমনিতেই রেপো রেট কমার ফলে ইএমআইতে তারাই সুবিধা বেশি ভোগ করেন, যারা সবে মাত্র লোন করছেন। পুরোনো গ্রাহকরা সুবিধা পেলেও তা অতি সামান্যই। মোট ৩০ শতাংশ গ্রাহক এই ধরনের সুবিধা পেয়ে থাকেন। তার মধ্যে বিরাট অংশই যারা নতুন লোন করিয়েছেন। তবে কি বাকি গ্রাহক বা সব গ্রাহকরা এই সুবিধা ভোগ করতে পারবেন না..। প্রশ্ন তো আসেই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই বিষয় প্রশ্ন করুন সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কগুলিকে। আর সেই সঙ্গে ইবিএলআর (এক্সটার্নাল বেঞ্চ মার্ক ল্যান্ডিং রেট )-এ সুইচড করতেও দাওয়াই তাদের।