মঙ্গলবার থেকে ফের উত্তাল রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। যার কারণ আরজিকর আন্দোলনের সাথে জড়িত তিন মুখের আচমকা বদলে যাওয়া পোস্টিং। যার কারণ জানতে গতকাল গোটা দিন স্বাস্থ্যভবনে স্বাস্থ্যসচিবের ঘরের সামনে বসেছিলেন অনিকেত আস্ফাকুল্লা দেবাশীষরা। বুধবার ফের স্বাস্থ্যভবন যাচ্ছেন তাঁরা। কিন্তু প্রশ্ন হল অন্য জায়গায় যদি তাঁরা জয়েন না করেন সেক্ষেত্রে কি বড় কোন মাশুল গুনতে হবে তাঁদের?
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিকঃ কাউন্সেলিংয়ের সময় যে হাসপাতাল তাঁরা বেছে নিয়েছিলেন অর্ডার বেরতে দেখা গেল এতজনের মধ্যে শুধু এই তিনজনের হাসপাতালই বদলে গিয়েছে। এবার যদি নিয়ম মেনে তাঁরা কাজে যোগদান না করেন সেক্ষেত্রে ৩০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত দিতে হতে পারে তাঁদের। নিয়ম কিন্তু সেকথাই বলছে।
অনিকেতরা জানিয়েছেন কাউন্সেলিংয়ের সময় দেবাশীষ হাওড়া তিনি আরজিকর এবং আসফাকুল্লা আরামবাগ হাসপাতালকে বেছে নিয়েছিলেন কিন্তু দেখা গেল দেবাশীষকে মালদা, অনিকেতকে রায়গঞ্জে, আর আসফাকুল্লাকে পাঠানো হয়েছে পুরুলিয়ার দেবেন মাহাতো মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। তাদের দাবি এটা সম্পূর্ণ নিয়ম বিরুদ্ধ। কিন্তু যদি অর্ডার অনুযায়ী তাঁরা কাজে যোগ না দেন নির্দিষ্ট হাসপাতালে সেক্ষেত্রে নেমে আসবে শাস্তির প্রকোপ। সমস্ত সরকারি হাসপাতালে এই সিনিয়র রেসিডেন্ট মূলত বন্ড পোস্টিং। কোন চিকিৎসক এই বন্ড না মানলে ৩ বছরের হিসাবে তাঁকে দিতে হবে ৩০ লাখ টাকা। এবার কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে দেবাশিস সিনিয়র রেসিডেন্ট হিসাবে কাজে যোগ দিয়েছিলেন ২ বছর আগে ফলে তাঁর আর এক বছর বাকি সিনিয়র রেসিডেন্টশিপের ফলে তিনি মালদার হাসপাতালে না গেলে তাঁকে বাদ বাকি এক বছরের জন্য ১০ লক্ষ টাকা দিতে হবে। অনিকেত আর আসফাকুল্লাকে দিতে হবে পুরো ৩০ লাখ টাকাই। কারণ এবার তাঁদের সিনিয়র রেসিডেন্টশিপ শুরু হল।
যে কোন কারণেই হোক না কেন কোন চিকিৎসক যদি এই বন্ড পোস্টে জয়েন করতে দেরি করেন সেটা তাঁর কাজের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে কারণ ভবিষ্যতে কেউ যদি চান তিনি অধ্যাপনা করবেন, সেক্ষেত্রে তাঁর অন্তত এক বছর সিনিয়র রেসিডেন্ট হিসাবে কাজের অভিজ্ঞতা থাকা বাধ্যতামূলক। অনিকেতরা যদি চান তাহলে বেসরকারি হাসপাতালেও সিনিয়র রেসিডেন্ট হিসাবে যোগ দিতে পারবেন। কিন্তু এই মুহূর্তে সেই সুযোগ তাঁরা কাজে লাগাতে পারবেন না কারণ তাঁদের শংসাপত্র জমা আছে স্বাস্থ্য দফতরের কাছে জমা রয়েছে। ফলে বন্ডের বিষয়টি নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত অন্যত্র কাজে যোগ দিতে পারবেন না তাঁরা।
এবার দেখার বিষয় বুধবার কি এই সমস্যার কোন নিষ্পত্তি ঘটবে? গোটা বিষয়টি মুখ্যসচিবকে ইমেল করবেন বলে জানিয়েছেন অনিকেতরা। তাঁদের স্পষ্ট দাবি তাঁরা আরজিকর আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিলেন বলেই বেছে বেছে তাঁদের কাজের জায়গাতেই বদল আনা হয়েছে। এটা সরকারের প্রতিহিংসা ছাড়া আর কিছুই না।