গরমের সময় ঘাম জমে চুলকুনি হয়, স্কিনে লাল ফোসকার মত হয়। বাচ্চাদের ক্ষেত্রেও এটা দেখা যায়। কিন্তু জানেন কি, এই সাধারণ ফোসকা কিংবা চুলকুনির আড়ালে লুকিয়ে থাকতে পারে এক ভয়ংকর চর্মরোগ, যার নাম স্ক্যাবিস। তাই বাড়ির খুদেকে নিয়ে সাবধান হন আজকেই।
সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিকঃ স্ক্যাবিস এক প্রকার চর্মজনিত রোগ যা Sarcoptes scabei নামক এক প্রকার জীবাণু দ্বারা সংঘটিত হয়।এর প্রধান লক্ষণ হল শরীরে চুলকানি ও গুটি গুটি র্যাকশ ওঠা। স্পর্শের মাধ্যমে সাধারণত এই রোগ হয়। তাছাড়া রোগীর ব্যবহৃত কাপড় গামছা, বিছানার চাদর ও বালিশ ব্যবহার করলে এ রোগ হতে পারে।
২ থেকে ৫ বছরের শিশুরা বেশি ভোগে এই রোগে। গরমের সময়ে শিশুর ত্বকে ক্ষত, র্যা শ, অস্বাভাবিক রকম চুলকানি দেখলে এড়িয়ে যাবেন না বাবা-মায়েরা। শুধু যে গরম থেকে ‘হিট র্যা শ’ হতে পারে তা নয়, স্ক্যাবিসের মতো চর্মরোগের আশঙ্কাও থাকে। যদিও সঠিক সময়ে চিকিৎসাতেই স্ক্যাবিস সেরে যায়। তবুও সাবধান থাকা জরুরি। অনেকেই ভাবেন প্রচণ্ড গরমে হয়তো এমন দশা। তাই ঘরোয়া টোটকা কিংবা হাজার রকমের পাউডারের ব্যবহার করেন অভিভাবকেরা তার সঙ্গে বারবার স্নান করিয়েও লাভ হচ্ছে না কিছুই। এমন পরিস্থিতিতে শিশুকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে না গিয়ে ফেলে রাখবেন না।
স্ক্যাবিস ধরা পড়লে শিশুকে আলাদা রাখলেই ভালো। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তবে ওষুধ খাওয়াতে হবে। চুলকানির জ্বালা কমাতে অ্যান্টিহিস্টামিনিক জাতীয় ওষুধ দেওয়া হয়। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া শিশুকে ওষুধ দেওয়া ঠিক হবে না। এর পাশাপাশি Permethrin 5% জাতীয় ক্রিমও খুব সহায়ক এই রোগ সারাতে। ওই ক্রিম ব্যবহারেরও নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। চিকিৎসা করাল স্ক্যাবিস পুরোপুরি নিরাময়ে মাসখানেক সময় লেগেই যায়।
পরজীবী সংক্রান্ত যে কোনও অসুখই খুব ছোঁয়াচে হয়। স্ক্যাবিসের ক্ষেত্রে শিশুর দু’আঙুলের ভাঁজে, গায়ের চামড়ায় ক্ষতের দাগ দেখা যায়। সেখানে ক্রমাগত চুলকানি হতে থাকে। রাতের দিকে অস্বস্তি আরও বাড়ে। এই ধরনের পরজীবীদের আস্তানাই হল মানুষের শরীর। ত্বকে ছিদ্র করে গহ্বর তৈরি করে সেখানে তারা ডিম পাড়ে। এই ভাবে খুব কম দিনেই সংখ্যায় বেড়ে যায়। ত্বকের যেখানে গহ্বর তৈরি করে পরজীবীরা সেখানে জ্বালা শুরু হয়।জায়গাটি ফুলে যায় ও র্যা শ হয়। তখন সেখানে জ্বালা, চুলকানি হয়। সঠিক সময়ে স্ক্যাবিস শনাক্ত করতে না পারলে, পরজীবীরা সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। তখন শরীরের সব জায়গায় ক্ষত, র্যা শ বেরিয়ে যায়। বড় বড় ফোস্কা পড়তেও দেখা যায়।