সূত্র মারফত খবর পায় যৌথ বাহিনী, ওই এলাকায় এক মাও নেতাসহ বেশ কয়েকজন মাওবাদী গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে। সেই খবর পাওয়ার পরেই অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী। মাওবাদী শীর্ষ নেতা (CPI) নাম্বালা কেশব রাও এনআইএ-র খাতায় মোস্ট ওয়ান্টেড ছিল। এমনকি তার মাথার রাখা ছিল ৫০ লক্ষ টাকা।
সঞ্জনা লাহিড়ী, সাংবাদিক- মাওবাদী দমন অভিযান প্রতিনিয়ত চলছেই ছত্তিসগড়ের বিভিন্ন এলাকায়। বুধবার মাওবাদী দমন অভিযানে খতম ২৭ মাওবাদী। এদিন সকালে ছত্তিসগড়ের নারায়ণপুর জেলার আবুঝামাদ এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে এখনও পর্যন্ত ২৭ জন মাওবাদী নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে। সূত্র মারফত খবর পায় যৌথ বাহিনী, ওই এলাকায় এক মাও নেতাসহ বেশ কয়েকজন মাওবাদী গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে। সেই খবর পাওয়ার পরেই অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী। মাওবাদী শীর্ষ নেতা (CPI) নাম্বালা কেশব রাও এনআইএ-র খাতায় মোস্ট ওয়ান্টেড ছিল। এমনকি তার মাথার রাখা ছিল ৫০ লক্ষ টাকা।
তথ্যের ভিত্তিতে নারায়ণপুর, দান্তেওয়াড়া, বিজাপুর এবং কোন্ডাগাঁও জেলার ডিস্ট্রিক্ট রিজার্ভ গার্ড (DRG) এই অভিযান চালায়। আবুঝামারের বিস্তর এলাকা জুড়ে রয়েছে জঙ্গল। সেই জঙ্গলেই আশ্রয় নিয়েছিল ওই শীর্ষ মাও নেতাসহ তার দলবল। ওই জঙ্গলের একাংশ নারায়ণপুর, বিজাপুর, দান্তেওয়াড়া, কাঙ্কের এবং মহারাষ্ট্রের গড়চিরোলি জেলা পর্যন্ত বিস্তৃত। চলতি বছরের প্রথমেই ছত্তিসগড়কে মাওবাদী মুক্ত করার কথা জানান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। বুধবারের অভিযানের পর নিজের এক্স হ্যান্ডেলে যৌথ বাহিনীর সাফল্য নিয়ে পোস্ট করেন অমিত শাহ। তিনি বলেন, ৩০ বছরে প্রথম দেশের মাওবাদী দমন অভিযানে মাও নেতা স্তরের কোনও সাধারণ সম্পাদক পদ মর্যাদার মাওবাদীকে হত্যা করা গেছে। নারায়ণপুর ছত্তিসগড়ে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে মাওবাদীদের শক্ত খুঁটি নাম্বালা কেশব রাও ওরফে বাসবরাজুসহ ২৭ মাওবাদীকে নিষ্ক্রিয় করা গেছে। নিরাপত্তা বাহিনীর এই সাফল্যকে সাধুবাদ দেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী। পাশাপাশি অপারেশন ব্ল্যাক ফরেস্ট অপারেশনে ৫৪ জন নকশালীকে গ্রেফতার করা হয় এবং ৮৪ জন মাওবাদী আত্মসমর্পণ করে। এরা সবাই ছত্তিসগড়, তেলেঙ্গানা এবং মহারাষ্ট্রের বলে জানিয়েছেন অমিত শাহ। ২০২৬-এর ৩১শে মার্চের মধ্যে মাওবাদী সাফ করা হবে বলেও জানান তিনি।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশ মতো, ৫ মাস ধরে লাগাতার চলছে যৌথ বাহিনীর মাওবাদী দমন অভিযান। এই বছর এখনও পর্যন্ত কমপক্ষে ২০০-র বেশি মাওবাদী নিকেশ করা সম্ভব হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে শীর্ষ নেতাদেরও। বিগত কয়েক মাস ধরেই মাওবাদী এলাকায় চলছে অপারেশন ব্ল্যাক ফরেস্ট। এপ্রিল থেকে এই অভিযান অনেকটাই বেড়েছে। মাওবাদীদের পিপলস লিবারেশন গেরিলা আর্মিকে খতম করাই এই অভিযানের লক্ষ্য। এপ্রিল মাসে ৩১ জন মাওবাদীকে হত্যা করতে সক্ষম হয়েছে যৌথ বাহিনী। কারেগুত্তা পাহাড়ে মাওবাদী কমান্ডার হিদমা মাদবির মতো কুখ্যাত মাও নেতার মৃত্যু হয়। বিশেষ এই অভিযানে যে টিম গঠন করা হয়েছে, সেই দলে রয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী সিআরপিএফের জঙ্গলযুদ্ধে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কমান্ডো বাহিনী “কোবরা”র পাশাপাশি ছত্তিসগড়ের সশস্ত্র পুলিশ ও ডিস্ট্রিক্ট রিজার্ভ গার্ড বাহিনী, মহারাষ্ট্র পুলিশের সি-৬০, তেলেঙ্গানা পুলিশের মাওবাদী দমন বাহিনী।