পহেলগাঁও জঙ্গি হামলা পরবর্তী সময়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বেশ কিছু কূটনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে ভারত। যার পাল্টা হিসাবে পাক আকাশে ভারতীয় বিমান প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল সে দেশের সরকার। পাল্টা ভারত ও নিজেদের আকাশে পাক বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। ভারত-পাক এই যুদ্ধ আবহে এবার বেশকিছু দেশ পাক আকাশ এড়িয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা পাকিস্তানের অর্থনীতিতে আরও গভীর ক্ষতচিহ্ন আঁকতে চলছে। পাক আকাশকে এড়িয়ে চললেও ভারতের আকাশসীমা আগের মতোই ব্যবহার করছে এইসব সংস্থাগুলি, যা পাকিস্তানের প্রতি এইসব দেশ বা সংস্থার অবিশ্বাসকেই নির্দেশ করে।
সঞ্জু সুর, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ- সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিতের ফলে শুধু পানীয় জল নয়, চাষাবাদ থেকে শুরু করে শিল্প, পাকিস্তানের অর্থনীতির মেরুদণ্ডে এক বড় আঘাত বলে মনে করা হচ্ছে। এমন সময় মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা-এর মতো আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন একাধিক বিমান পরিষেবা সংস্থা তাদের বিমান পাক আকাশ এড়িয়ে চলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই তালিকায় রয়েছে এয়ার ফ্রান্স, আছে লুফৎহানসা (জার্মান), ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ, ওমান এয়ার, এত্তিহাদ (সৌদি আরব), সুইস ইন্টারন্যাশনাল এয়ার লাইন্স, এমিরেটস। তাৎপর্যপূর্ণ হচ্ছে পাক আকাশ এড়ালেও আগের মতোই ভারতীয় আকাশ ব্যবহারে কোনো নিষেধাজ্ঞা জারি করে নি সংশ্লিষ্ট পরিষেবা প্রদানকারী দেশ বা সংস্থা।
মূলতঃ যুদ্ধ পরিস্থিতির কথা চিন্তা করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বিমান সংস্থাগুলি বা সে দেশের সরকার। ইউরোপ থেকে ভারত বা পূর্ব এশিয়া, বিশেষ করে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে আসতে এখন অনেকটাই ঘুর পথ (detours) ব্যবহার করতে হচ্ছে, বাড়ছে খরচ। তা সত্বেও পাকিস্তানি আকাশ পথ কে আপাতত এড়িয়ে যাওয়াই শ্রেয় বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট দেশের সরকার।
বিদেশি বিমানের পাক আকাশ সীমা এড়ানোয় কি ক্ষতির মুখে পড়তে চলেছে পাকিস্তান ? দেশের মাটিতে নামুক, বা না নামুক, শুধুমাত্র দেশের আকাশসীমা ব্যবহার করার জন্য এক একটি বিমানের ওজন ও কতটা পথ দেশের আকাশ সীমা ব্যবহার করছে, তার উপর নির্ভর করে কয়েকশো ডলার থেকে শুরু করে কয়েক হাজার ডলার পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট দেশকে দিতে হয় বিমান পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাকে। এক্ষেত্রে একসঙ্গে এতগুলো বিমান পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা পাক আকাশ এড়িয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায়, এর প্রভাব যে সরাসরি পাকিস্তানের কোষাগারে পড়তে চলছে তা বলাই যায়।